প্রতিবছর রোজা শুরু হওয়ার আগেই বাজারে পণ্যের দাম বাড়ানোর প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। এবছর মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে সবকিছু থমকে থাকলেও দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়াটি থেমে থাকেনি। কয়েক মাস ধরেই সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এবার রমজানে নিত্যপণ্যের কোনো অভাব থাকবে না। সব ধরনের পণ্যের মজুদ যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে। বাজারে কোনো সংকট দেখা দেবে না। কথা সত্য। করোনাভাইরাসজনিত কারণে সরবরাহ শিকল কিছুটা বিঘিœত হলেও বাজারে নিত্যপণ্যের সংকট নেই। পর্যাপ্ত পণ্য থাকা সত্ত্বেও বরাবরের মতো এ বছরও রমজানের আগে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা গেল না।
প্রকাশিত সংবাদে জানা গেছে, সংকট না থাকলেও রমজানের আগে বাজারে উত্তাপ ছড়িয়েছে চাল, ডাল, চিনি, সবজিসহ সব ধরনের নিত্যপণ্য। ছোলা, চিনি, ডাল, খেজুর, মাছ, মাংসের দাম তো কয়েক দিন আগে থেকেই ঊর্ধ্বমুখী। ছোট দানার মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা কেজি দরে। আগের সপ্তাহে খুচরা পর্যায়ে মোটা চাল বিআর-২৮ ছিল ৪৫ টাকা কেজি, এখন ৪৬ টাকা; পাইজাম ছিল ৪২, এখন ৪৪ টাকা; স্বর্ণা ছিল ৪০, এখন ৪২ টাকা; লতা ছিল ৪৪, এখন ৪৬ টাকা এবং বিআর-২৯ আগের মতো ৪৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত বছর এই সময়ে এসব মোটা চালের দাম ছিল সর্বোচ্চ ৩৬ টাকা কেজি। এ ছাড়া নাজিরশাইলের মধ্যে ভালো মানের চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৮ টাকা কেজি পর্যন্ত। গত সপ্তাহে কাটারি নাজির ছিল ৬০, এখন ৬২ টাকা; জিরা নাজির ছিল ৫৬, এখন ৫৪ টাকা। মিনিকেট হিসেবে পরিচিত চাল আগের মতো মানভেদে ৫৪ থেকে ৬০ টাকা কেজি পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
বরাবরই দেখা গেছে, বাজারে চাপ বাড়ার সুযোগটার অসৎ ব্যবহার করে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী। তারা সিন্ডিকেট করে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। কর্তৃপক্ষের কার্যকর কোনো নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা না থাকার সুযোগ নেয় অসাধু ব্যবসায়ীরা। এবারও বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য যেমন- চাল, ডাল, তেল, ছোলা, পেঁয়াজ, রসুন ও আদাসহ সব পণ্যের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। মজুতের পরিমাণ চাহিদার তুলনায় বেশি। কোনো পণ্যের ঘাটতি হওয়ার আশঙ্কা নেই। তারপরও কৃত্রিম উপায়ে কোনো পণ্যের সংকট সৃষ্টির চেষ্টা করা হলে সরকার তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সব পণ্যের সরবরাহ ও ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে গঠিত টাস্কফোর্স এবং বিভিন্ন কমিটিকে আরও তৎপর হয়ে কাজ করবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই দুর্দিনে বাজার নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।