সরাইলে নিখোঁজের তিনদিন পর উদ্ধার করা হয়েছে শিশু মহিউদ্দিনের (০৭) লাশ। গত শনিবার দিবাগত গভীর রাতে নোয়াগাঁও ইউনিয়নের আখিঁতারা এলাকার (তিউর কোনা) ফসলি মাঠের পাট ক্ষেত থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করেছে সরাইল থানা পুলিশ। নিহত মহিউদ্দিন নোয়াগাঁও গ্রামের (নাজিরবাড়ির) মো. লিয়াকত আলীর দ্বিতীয় ছেলে। সে নোয়াগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্র। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তাদের প্রতিবেশী মো. জাহাঙ্গীর মিয়া ও তার ছেলে কবির মিয়াকে (১৫) কে আটক করা হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে কবির। তবে রাতেই জাহাঙ্গীর মিয়াকে থানা ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন শিশুর পিতা লিয়াকত আলী। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছিল।
পুলিশ, স্থানীয় লোকজন ও নিহত শিশুর পারিবারিক সূত্র জানায়, স্ত্রী তিন ছেলে ও দুই মেয়ে সহ অভাব অনটনের মধ্যেই চলছিল শ্রমজীবি লিয়াকত আলীর পরিবার। পাশাপাশি সীমানায় বসবাস করে আসছে জাহাঙ্গীর মিয়া ও লিয়াকতের পরিবার। রাস্তা দিয়ে চলাফেরা ও গরূ ছাগল নিয়ে তাদের মধ্যে নিয়মিতই ঝগড়া বিবাদ হয়। গত ১০-১৬ দিন আগেও রাস্তা দিয়ে গরূ যাওয়ার ঘটনায় উভয় পরিবারের মধ্যে বাক-বিতন্ডা হয়েছে। গত ৩০ এপ্রিল সকাল ১০টার দিকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ফিরে আসেনি মহিউদ্দিন। স্বজনরা বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত আত্মীয়স্বজন ও পরিচিত জনদের বাড়িঘরে খোঁজে সন্ধান পায়নি শিশুটির। পরের দিন ১ এপ্রিল সরাইল থানায় এ ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন শিশুর পিতা। তাদের সন্দেহের তীর ছিল কবিরের দিকে। জিডির পরই মাঠে নেমে পড়েন এস আই গৌতম চন্দ্র দে ও মো. জাকির হোসেন খন্দকার। গত শনিবার বিকেলে পুলিশ আটক করেন কবির ও তার পিতা জাহাঙ্গীরকে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কবির ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে বলে, লিয়াকত আলীর পরিবারের সাথে পারিবারিক বিরোধ রয়েছে। এক সহপাঠির সাথে খেলা করছিল মহিউদ্দিন। আমি তাকে মাঠে ঘাস কাঁটার কথা বলে নিয়ে যায়। আমি ঘাস কাটছি। হঠাৎ করে দৌড় দিয়ে চলে যায় মহিউদ্দিন। এরপর তাকে আর খোঁজে পায়নি। শনিবার গভীর রাতে ওই ফসলি মাঠে কবিরকে নিয়ে যায় পুলিশ। ২-৩ ঘন্টা ঘুরিয়ে একটি পাট ক্ষেত থেকে কবিরের সহযোগিতায় মহিউদ্দিনের লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। কবির শিশুটির ঘাড়ে ধরে চাপ দিলে অজ্ঞান হয়ে যায়। পরে ওই ক্ষেতে শিশুটিকে ফেলে চলে যাওয়ার কথা স্বীকার করে কবির। গতকাল ময়না তদন্তের জন্য শিশুর লাশ জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই গৌতম চন্দ্র দে ও এস আই জাকির হোসেন খন্দকার বলেন, প্রাথমিক ভাবে পূর্ব বিরোধের জেরে কবির এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে বলে স্বীকার করেছে। ঘটনার পূর্বে বলাৎকারের কোন ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।