কক্সবাজারের চকরিয়ায় চম্পা বেগম নামের এক তরুণীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে গণধর্ষণ ও গাড়ির নিচে ফেলে দিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা মামলার প্রধান আসামি সিএনজি অটোরিকশা চালক সাজ্জাদ হোসেন (৪০) পুলিশের সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত হয়েছে।
মঙ্গলবার ভোররাতে এবিসি আঞ্চলিক মহাসড়কের চকরিয়ার কোনাখালী-মরংঘোনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, 'বন্দুকযুদ্ধে' অস্ত্রধারীদের ছোঁড়া গুলিতে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) শেখ আবুল ফারুক এবং দুই কনস্টেবল সুবল ও সুমন আহত হয়েছে। তাদের চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে দু'টি দেশি এলজি, কয়েক রাউন্ড তাজা গুলি এবং ব্যবহৃত গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে।
এর আগে সোমবার সকালে স্থানীয় জনতা সাজ্জাদ হোসেনকে নিজ এলাকা পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের শেখের কিল্লা ঘোনা থেকে আটকে পেকুয়া থানা পুলিশে সোপর্দ করে। পরে তাকে চকরিয়া থানার পুলিশের কাছে তুলে দেওয়া হয়। সাজ্জাদ ওই এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে।
চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) এ কে এম সফিকুল আলম চৌধুরী জানান, কক্সবাজার সদরের খরুলিয়া গ্রামের তরুণী চম্পা বেগম গত ৬ মে চট্টগ্রাম থেকে এবিসি আঞ্চলিক মহাসড়ক হয়ে কক্সবাজার যাওয়ার জন্য পেকুয়ায় এসে গাড়ি বদল করে। পেকুয়া থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় উঠলে তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে চকরিয়ার কোনাখালী-মরংঘোনার নির্জন স্থানে নিয়ে গণধর্ষণ করে সাজ্জাদ ও তার সহযোগী অটোচালক জয়নাল আবেদীন। এরপর চলন্ত অটোরিকশা থেকে একটি গাড়ির সামনে ছুঁড়ে ফেলে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। ঘটনার পরদিন জয়নাল আবেদীনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে স্থানীয় জনতার সহায়তায় সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করা হয়। জয়নাল পেকুয়া সদর ইউনিয়নের মেহেরনামা নন্দীরপাড়ার মোহাম্মদ আলীর ছেলে।
তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তারের পর পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাজ্জাদ স্বীকার করেছে যে, চম্পাকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে জিম্মি করে ধর্ষণ করে তারা দু'জন। সেই অস্ত্র উদ্ধারে অভিযানে গেলে ধর্ষক সাজ্জাদের সহযোগী পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে। এ সময় পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। প্রায় ২০ মিনিট ধরে গোলাগুলির একপর্যায়ে পিছু হটে তার সহযোগীরা। এ সময় ঘটনাস্থলে সাজ্জাদকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। উদ্ধার করে তাকে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে দু'টি দেশি এলজি, বেশ কয়েক রাউন্ড তাজা গুলি ও ব্যবহৃত গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ তিন পুলিশ সদস্যকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার ওসি মো. হাবিবুর রহমান বলেন, 'লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় হত্যা, অস্ত্র ও পুলিশ আক্রান্তের অভিযোগে পৃথক তিনটি মামলা রুজু করা হচ্ছে।'