লালমনিরহাটে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচিতে দীর্ঘদিনের পুরাতন, পঁচা-দূর্গন্ধযুক্ত ও পোকা ধরা নষ্ট নিম্মমানের চাল বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগীরা। আর এ সকল চাল লালমনিরহাট সদর খাদ্যগুদাম থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার (১৯ মে) সকালে সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে কার্ডধারীদের মাঝে ১০ টাকা কেজি দরে পুরাতন, পঁচা-দূর্গন্ধযুক্ত ও পোকা ধরা নষ্ট নিম্মমানের চাল বিক্রি করতে দেখা যায়।
জানা যায়, জেলায় খাদ্য বান্ধব কর্মসচির ১৩১ জন ডিলারের মাধ্যমে মার্চ মাস থেকে ৫৯ হাজার ৪৬৪ জন কার্ডধারীদের মাঝে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি শুরু হয়। অতি কষ্টে উপার্জন করা ৩০০ টাকা দিয়ে ৩০ কজি চাল সংগ্রহ করেন হতদরিদ্র লোকজন। চাল নেয়ার পর বাড়িতে গিয়ে চালের বস্তা খুলে দীর্ঘদিনের পুরাতন, পঁচা-দূর্গন্ধযুক্ত ও পোকা ধরা নষ্ট চাল দেখতে পেয়ে হতদরিদ্র পরিবারের মানুষগুলো হতাশ। তাই লালমনিরহাটর বিভিন্ন স্থানে ডিলার পয়েন্ট গুলোতে ভালো চালের আশায় প্রতিবাদ করে আসছেন। কিন্তু বিষয়টি নজরে নিচ্ছেন না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। আর পঁচা চাল ফেরত দিতে ক্রেতারা গেলে উল্টাে অসদাচরণ করে নানা হুমকী দিচ্ছেন ডিলাররা।
আব্দুল হামিদ (৫৫), আবদুস সালাম (৪২), ছখিনা খাতুন (৪৬) সহ একাধিক ভুক্তভোগীরা জানান, বর্তমানে যে চালগুলো দিচ্ছে তা পঁচা-দূর্গন্ধযুক্ত ও পোকা ধরা নষ্ট চাল। খাওয়ার একেবারই উনপযোগী। বিয়ষগুলো নিয়ে প্রতিবাদ করলেও কোন লাভ হয় না। নষ্ট চাল ফেরত দিতে আসলে ডিলাররা নানা রকম ভাবে গালিগালাজ করে। আর খাদ্য অফিসের লোকজনদের বললে কিছুই হয় না।
লালমনিরহাট সদর উপজলার গাকুন্ডা ইউনিয়নের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ডিলার আসাদুল হাবিব জানান, খাদ্যগুদাম থেকে তার পয়েন্টে যে সকল চালের বস্তা দেয়া হয়েছে তার সব বস্তার চালের অবস্থা খুবই খারাপ। চাল গুলোতে পোকা ও ছাতা ধরা অবস্থা। বিষয়টি উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তা খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা খায়রুল হাসান জানান, খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ডিলার আসাদুল হাবিবেব পয়ন্টে যে সকল চাল নিম্মানের তা লালমনিরহাট সদর খাদ্যগুদাম থেকে এসেছে। এছাড়াও সদর খাদ্যগুদাম থেকে যে সকল চালের বস্তা তিস্তা গুদামে দেয়া হয়েছে তা পোকা ধরা, ফাঙ্গাস পড়া, খাওয়ার উপযুক্ত নয়।
এ ব্যাপারে লালমনিরহাট সদর এলএসডি কর্মকর্তা শাহীনুর রহমান কোন কথা বলতে রাজি নন। আর সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আইয়ুব আলীক অফিসে না পাওয়ায় তার মাবাইল (০১৭১৬৪৮৮৬৫৫ নাম্বার) একাধিকবার কল করলে তিনি কল রিসির্ভ করেন নি।
লালমনিরহাট জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মিজানুর রহমান জানান, নিম্মমানের চালের ব্যাপারে তার কাছে এখনো কোন ভোক্তা, ডিলার এবং এলএসডি কর্মকর্তা কিছুই জানান নি। তবে তিনি সব সময় খোঁজ খবর রাখছেন বলে দাবি করেন।