সুপার সাইক্লোব আম্ফানের তান্ডবে আশাশুনি উপজেলার ১২ পয়েন্টে পাউবোর ভেড়ী বাঁধ ভেঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। অসংখ্য ঘরবাড়ি, প্রতিষ্ঠান বিধ্বস্থ হয়েছে। বহু গাছগাছালী উপড়ে গেছে। মৎস্য ঘের প্লাবিত ও সবজী ক্ষেত নষ্ট হয়েগেছে।
উপজেলার উপর দিয়ে বুধবার রাত্র সাড়ে ৯ টার দিকে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান হানা দেয়। প্রচন্ড ঝড়ো হাওয়া ও ৫/৬ ফুট উচ্চ জলোচ্ছ্বাসে উপজেলার অধিকাংশ নদীর ভেড়ী বাঁধ এলোমেলো হয়ে যায়। প্রচন্ড পানির চাপে কুড়িকাহুনিয়া, হরিষখালী, চাকলা, সুভদ্রাকাটি, একসরা, বিছট, হাজরাখালী, কাকবাসিয়া, দয়ারঘাট, জেলেখালী, বলাবাড়িয়া, মানিকখালী ভেড়ী বাঁধ ভেঙ্গে মুহুর্তের মধ্যে এলাকার গ্রাম ও মহল্লা প্লাবিত হয়ে যায়। ঝড়বৃষ্টিকে উপক্ষো করে মানুষ বাঁধ রক্ষার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করলেও শেষ রক্ষা করতে পারেনি। নদী ভাংনের কবলে পড়েচে উপজেলার ২৪ কিঃমিঃ বেড়ী বাঁধ। নদী ভাঙ্গনের পানি প্রতাপনগর, শ্রীউলা, আনুলিয়া, আশাশুনি সদর ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ চরমভাবে বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। আম্ফানের কবলে পড়ে ঐ ৪টি ইউনিয়নসহ ১১ ইউনিয়নে কমপক্ষে ৭ হাজার ৮৫০টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্থ এবং ১৫ হাজার ৬০০টি ঘরবাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কাঁচা রাস্তা নষ্ট হয়েছে ৩০ কিঃমিঃ। চিংড়ী ঘের প্লাবিত হয়েছে ৮ হাজার ৬৯৮ হেক্টর জমির। সবজী ক্ষেত নস্ট হয়েছে ৩২৯ হেক্টর জমির। ঝড়ো হাওয়ায় ্পুড়ে গেছে হাজার হাজার গাছগাছালি। ঘরবাড়ি হারা ও ভাঙ্গন কবলিত এলাকার মানুষ আশ্রয় হীন হয়ে পড়েছে। পবিত্র ঈদণ্ডউল-ফিতর তাদের কাচে কান্না ও কষ্টের মধ্যে দিয়ে অতিবাহিত হতে যাচ্ছে। উপজেলা চেয়ারম্যান এবিএম মোস্তাকিম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর আলিফ রেজা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহিনা সুলতানা, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অসীম বরণ চক্রবর্তী, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোসলেমা খাতুন মিলি, ওসি, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সোহাগ খানসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও ইউপি চেয়ারম্যানবৃন্দ রাতদিন ভাঙ্গন রোধ, ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনাসহ বিপদগ্রস্ত মানুষের সহযোগিতা করতে এলাকা পরিদর্শন ও কাজ করে যাচ্ছেন। ঝড় শুরুর সাথে সাথে মানুষের সহায়তার জন্য ৪৪ মেঃটন চাল, ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। পরবর্তীতে ঘূর্ণিঝর আম্ফানের কারণে সহায়তার জন্য ৩০ মেঃটন চাল, ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা এবং ৩৫০ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ঝড়ের প্রচন্ড গতিতে ও জলোচ্ছ্বাসে মধ্যম চাপড়া আল্লাহর দান ব্রিক্স ক্ষয়ক্ষতির স্তুপে পরিণত হয়েছে। ৫/৬ ফুট জলোচ্ছ্বাসের তান্ডবে প্রচন্ড গতির পানি আঘাতে ভাটার প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে ১০ লক্ষ কাঁচা ইট ও ক্লিনের মধ্যে থাকা পোড়ানো অবস্থার ৫ লক্ষ ইট সম্পূর্ণ ভাবে নষ্ট হয়ে গেছে। ২০০ মেঃ টন পাথুরি কয়লা জলোচ্ছ্বাসের তোড়ে ভেসে যায়। এতে কমপক্ষে ৮০ লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে।