নড়াইলের কালিয়ায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসীদের হাতে সাবেক জাতীয় কাবাডি খেলোয়াড় ও রেফারি কলাবাড়িয়া ইউপি সদস্য আওয়ামীলীগনেতা কাইয়ূম সিকদারকে (৪৮) নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। নিহতের ছেলে মোঃ নাইমুল ইসলাম মিল্টন বাদী হয়ে শুক্রবার (২৯ মে) রাত ৮টার দিকে নড়াগাতি থানায় এ মামলা করেন। মামলায় কলাবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাড. মোঃ মাহামুদুল হাসান কায়েসকে প্রধান আসামি করে ৪৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। কায়েস নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধকালীন কালিয়া থানা কমান্ডার মরহুম এ্যাড. আবুল কালাম আজাদের ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ২৬ মে রাত পৌনে ৯ টার দিকে কলাবাড়িয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নেতা আব্দুল কাইয়ূম সিকদার ও নড়াগাতি থানা কৃষকলীগের সভাপতি মোল্যা আবুল হাসনাতসহ ৪জন আরোহী দু’টি মোটরসাইকেলযোগে কালিয়া থেকে কলাবাড়িয়া গ্রামে বাড়িতে ফিরছিলেন। তারা কালিনগর গ্রামে পৌঁছালে পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে সন্ত্রাসীরা বাঁশ দিয়ে সড়ক আটকে পথ রোধ করে তাদের এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত আহত করে। ঘটনাস্থল থেকে তাদের উদ্ধার করে কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে কাইয়ূম সিকদারের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত আবুল হাসনাত মোল্যা (৩৮), সজিব মল্লিক (২৫) ও মতিয়ার মল্লিককে (৪০) খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। আহতরা বর্তমানে খুমেকে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ বিষয়ে নড়াগাতি থানার ওসি রোকসানা খাতুন বলেন, ‘নিহতের ছেলে বাদী হয়ে কলাবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহামুদুল হাসান কায়েসসহ ৪৫ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ১০/১৫ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন। আসামীদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।’
এ প্রসঙ্গে কলাবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহামুদুল হাসান কায়েস বলেন, ‘আমি রাজনীতির পাশাপাশি আইন পেশায় নিয়োজিত আছি। যে কারণে আমি দীর্ঘদিন ধরে এলাকা ছেড়ে নড়াইল শহরে পরিবার নিয়ে বসবাস করছি। এলাকার কোনো ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত নই। আমার ইমেজ নষ্ট করতে এবং ফাঁসাতে প্রতিপক্ষরা আমাকে এ হত্যা মামলায় আসামী করেছেন।’
প্রসঙ্গত, নিহত কাইয়ুম শিকদার উপজেলার বিলাফর গ্রামের হাসু শিকদারের ছেলে। তিনি বাংলাদেশ পুলিশ দলের একজন কাবাডি খেলোয়াড় ছিলেন। বাংলাদেশে কাবাডির অগ্রযাত্রায় তাঁর বড় অবদান ছিল। জাতীয় কাবাডি দলের পরিচিত মুখ ছিলেন এক সময়। ১৯৯৫ মাদ্রাজ সাফ গেমসে জাতীয় দলে অভিষেক। ১৯৯৯ সাফ গেমস ও ১৯৯৮ এশিয়ান গেমসেও বাংলাদেশ দলের জার্সিতে খেলেছেন। ২০১০ গুয়াংজু এশিয়ান গেমস ও ২০১০ মাস্কট বিচ গেমসে ছিলেন রেফারির দায়িত্বে। ২০১০ সাল থেকে কাবাডি ফেডারেশনের সর্বশেষ নির্বাচিত কার্যনির্বাহী সদস্য ছিলেন কাইয়ুম।