লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মিরু’র নিজস্ব অফিসে ‘একতা সমাজ কল্যাণ সংস্থা’ নামে একটি সংগঠনের ব্যানারে সুবিধাভোগীদের তালিকা করা হচ্ছে। ওই সুবিধা ভোগীদের কম্পিউটার ও সেলাই প্রশিক্ষণ শেষে তাদের কম্পিউটার ও সেলাই মেশিন দেয়া হবে এমন কথাও বলা হচ্ছে। সুবিধা ভোগীদের তালিকায় নাম রাখতে বেকার যুবক-যুবতীদের কাছ থেকে টাকা গ্রহনেরও অভিযোগ করছেন অনেকেই। কিন্তু সেই প্রকল্প নিয়ে কিছুই জানেন না ইউএনও সামিউল আমিন।
সড়ে জমিনে রোববার হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মিরু’র নিজস্ব অফিসে গিয়ে দেখা যায়, বাহিরে অনেক যুবক-যুবতী অপেক্ষা করছেন। ভিতর থেকে একজন করে ডেকে নিয়ে ‘একতা সমাজ কল্যাণ সংস্থা’র একটি সদস্য ফরম পুরুণ করছেন। অফিসে বসে সব কিছু দেখভাল করছেন ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মিরু।
এ সময় ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মিরু জানান, একতা সমাজ কল্যাণ সংস্থা নামে একটি এনজিও এ উপজেলায় বেকার যুবক ও যুবতীদের প্রশিক্ষণের প্রকল্প পেয়েছেন। তিনি নিজেও ওই এনজিও’র সাথে জড়িত রয়েছেন। এ সময় তার কাছে ওই এনজিও’র কাজ করার বৈধ অনুমতি পত্র দেখতে চাইলে তা তিনি দেখাতে পারেনি। পরে এ বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সামিউল আমিনের সাথে কথা হলে তিনি এ প্রকল্প বিষয়ে কিছুই জানেন না। একটু পরে ইউএনও’র অফিস রুমে আসেন ভাইচ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মিরু। ইউএনও তার কাছে ওই এনজিও’র কাজ করার অনুমতি পত্র দেখতে চাইলে তিনি তা দেখাতে পারেনি। ইউএনও সামিউল আমিন তাৎক্ষনিক ওই এনজিও’র সকল কার্যক্রম বন্ধ করতে নিদের্শ দিলেও তা বন্ধ হয়নি। সোমবার দুপুরেও গিয়ে দেখা যায় উপজেলা পরিষদের ভিতরে ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মিরু’র নিজস্ব অফিসে যুবক-যুবতীদের ভীর।
অভিযোগ উঠেছে, ‘একতা সমাজ কল্যাণ সংস্থা’ ওই এনজিও’র এ কার্যক্রমের বৈধ অনুমতি পত্র না থাকলেও হাতীবান্ধায় প্রকল্প জরিপের নামে সুবিধাভোগীদের তালিকার তৈরীর অযুহাতে বেকার যুবক-যুবতীদের কাছ থেকে টাকা উত্তোলন করছেন।
উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মিরু’র দাবী সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় ‘একতা সমাজ কল্যাণ সংস্থা’ নামে একটি এনজিও প্রশিক্ষণের একটি প্রকল্প পেয়েছে। তবে ওই এনজিও একতা সমাজ কল্যাণ সংস্থা’র সভাপতি বাদশা মিয়া বলেন, আমরা আশাবাদী একটি প্রশিক্ষণের প্রকল্প পাবো। তাই জরিপ করছি। জরিপ কার্যক্রম করতে জেলা প্রশাসকের অনুমতি লাগে না। তা ছাড়া সংস্থার নামে কেউ টাকা নিচ্ছে তা আমার জানা নেই।
হাতীবান্ধার ইউএনও সামিউল আমিন বলেন, ওই এনজিও’র প্রতিনিধিদের সাথে আমি কথা বলেছি। তাদের বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই। ফলে মানুষ প্রতারিত হতে পারে। তাদের কার্যক্রম বন্ধ করতে নির্দেশও দিয়েছি।
হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মামুন বলেন, শুনেছি ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মিরু ওই এনজিও’র সাথে জড়িত। ওই এনজিও’র কার্যক্রমের সাথে উপজেলা প্রশাসন বা পরিষদ জড়িত নয়।