লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় মাছ চুরিতে বাঁধা দেয়ায় বাহার উদ্দিন (৫০) নামে এক কৃষককে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। এ ঘটনায় আহত কৃষকের ভাতিজা আবদুর রাজ্জাক বাদী হয়ে ৬জনকে আসামি করে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
ঘটনার ২১ দিন পেরিয়ে গেলেও মামলা নথিভূক্ত করেনি পুলিশ। শুধু তাই নয় মামলা মিমাংসা করতে বাদিকে চাপ দিচ্ছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ও মামলার তদন্তকারী পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মাহবুব ইসলাম।
এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিক মাহমুদ হাসানকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে। মাহমুদ হাসান দৈনিক কালের কন্ঠ প্রত্রিকার লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলা প্রতিনিধি।
আহত বাহার উদ্দিন উপজেলার দক্ষিন জাওরানী এলাকার মৃত আলী হোসেনের ছেলে এবং ওই এলাকার একজন মাছ চাষী।
অভিযুক্তরা হলেন, উপজেলার দক্ষিন জাওরানী এলাকার মৃত মনির উদ্দিনের ছেলে লাল মিয়া (৫৫), চাঁন মিয়া (৪৫), আজিজুল ইসলাম সুরুজ (৪০), ফালান মিয়া (৩০) ও একই এলাকার লাল মিয়ার ছেলে হায়দার আলী (২৫) এবং আজিজুল ইসলাম সুরুজের ছেলে আপেল (২০)।
জানা গেছে, উপজেলার দক্ষিন জাওরানী এলাকায় স্থানীয় বাহার উদ্দিন, নূর আমিন ও কাজল মিয়া শেয়ারে মাছ চাষ করেন। অভিযুক্তরা প্রায় রাতের আঁধারে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ চুরি করে। এদিকে গত মাসের ১০ তারিখে ভোরে অভিযুক্তরা কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরা শুরু করলে কৃষক বাহার উদ্দিন তাদের বাঁধা দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযুক্তরা বাহার উদ্দিনকে মারধর করেন। বাহার উদ্দিনের আত্মচিতকারে স্থানীয়রা ছুটে আসলে তারা পালিয়ে যায়। পরে পরিবারের লেকজন বাহার উদ্দিনেক উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য-কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন।
এ ঘটনায় ওই দিনি আহতের ভাতিজা আবদুর রাজ্জাক বাদী হয়ে ৬জনকে আসামি করে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু ঘটনার ২১ দিন পেরিয়ে গেলেও মামলা নথিভূক্ত করেনি পুলিশ।
এ দিকে এ ঘটনায় সাংবাদিক মাহমুদ হাসান দৈনিক কালের কন্ঠ প্রত্রিকার অনলাইনে “হাতীবান্ধায় মাছ চুরি কৃষককে মারধর শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করে। খবর প্রকাশের জন্য মোবাইল ফোনে অভিযুক্তদের বক্তব্যও নেওয়া হয়। এর কিছুক্ষন পরেই ০১৭৫০৭০৭৮৭৩ থেকে ফোন করে সাংবাদিক মাহমুদ হাসানকে নিউজ প্রকাশ করলে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। পরে জানাগেছে, সাংবাদিককে মোবাইল ফোনে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়েছেন ওই মামলার অভিযুক্ত লাল মিয়ার ছেলে হায়দার আলী। এ ঘটনায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বাহার উদ্দিন বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ। এলাকার একজনের সাথে যৌথ ভাবে মাছ চাষ করি। অভিযুক্তরা প্রায় রাতের আঁধারে মাছ চুরি করে। মাছ চুরির সময় তাদের বাধা দিলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে বেধড়ক মারধর করে। আমার মাথায় প্রায় ২৫টি ও হাতে-পায়ে প্রায় ১০ টি সেলাই দেয়া হয়েছে। আমি এর সুষ্ঠ বিচার চাই।
আহতের ভাতিজা আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘মামলা আপস মিমাংসা করতে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মাহবুব ও স্থানীয় প্রভাবশালীরা চাপ দিচ্ছেন। ২০ দিন পেরিয়ে গেলেও মামলাটি এখনো নথিভূক্ত করা হয়নি।
এ বিষয়ে ওই মামলার অভিযুক্ত লাল মিয়ার ছেলে হায়দার আলী বলেন, ‘মামলাটি আপস মিমাংসার চেষ্ঠা চলছে। ভেলাগুড়ি চেয়ারম্যান বিষয়টি দেখছেন। সাংবাদিককে হুমকি দিয়েছিলাম। পরে বুঝতে পারি কাজটি ঠিক হয়নি।
এ বিষয়ে সাংবাদিক মাহমুদ হাসান বলেন, ‘০১৭৫০৭০৭৮৭৩ নম্বর থেকে আমাকে ফোনে নিউজ করা হলে প্রাণনাশের হুমক দেওয়া হয়। এ ঘটনায় থানায় আমি একটি অভিযোগ করেছি।
এ বিষয়ে ওই অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা হাতীবান্ধা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহবুব বলেন, ‘মামলটি এখনো নথিভূক্ত করা হয়নি। ওরা গরীব মানুষ তাই মিমাংসা করাই ভালো। রাজ্জাককে আসতে বলেছি মিমাংসা না হলে মামলাটি নথিভূক্ত করা হবে।