তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজ এলাকায় রেড এলার্ট জারি হওয়ার পর অবশেষে পানি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে পানি নিয়ন্ত্রণ হলেও ঘরে ফিরতে পারছে না তিস্তা তীরবর্তী মানুষরা। জেলার ৫টি উপজেলায় পানি কমে যাওয়ার কারণে তীব্র ভাঙন ঘরবাড়িসহ ফসলী ক্ষেত ইতোমধ্যেই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
মঙ্গলবার(১৪ জুলাই) দুপুর ১২টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৪২ সেন্টিমিটার। যা স্বাভাবিকের(৫২ দশমিক৬০ সেঃমিঃ) চেয়ে ১৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অর্থাৎ বিপদসীমার ৫২ সেন্টিমিটার থেকে কমিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, কয়েকদিন থেকে অব্যাহতভাবে বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ হঠাৎ বাড়তে থাকে। সোমবার ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৫২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয় তিস্তার পানি প্রবাহ। ফলে তিস্তার চরাঞ্চল ও বামতীরের নিম্নাঞ্চল বন্যায় প্লাবিত হয়ে প্রায় ৩০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। ডুবে যায় কৃষকের ফসল। ভেসে যায় পুকুরের মাছ। দিনভর বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে কমতে শুরু করে।
তিস্তার পানি প্রবাহ বিপদ সীমার নিচে নেমে আসায় নদী তীরবর্তি মানুষগুলোর মধ্যে কিছুটা স্বস্থি ফিরে এসেছে। কমতে শুরু করেছে পানি। তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার ৫টি উপজেলার প্রায় ৩০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছিল। তবে তিস্তার দুই তীরে নদীভাঙনে শত শত হেক্টর জমির বাদাম, ভুট্টা ও সবজি ক্ষেত নদীতে চলে যাচ্ছে। তাছাড়াও দহগ্রাম-আঙ্গরপোতার সরকারপাড়া নামক এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এদিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় নদীভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে কয়েক হাজার পরিবার।
তিস্তা ব্যারাজের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, তিস্তার পানি বিপদসীমার ৫২ সেন্টিমিটার থেকে কমিয়ে এখন বিপদসীমার ১৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে তিস্তার পানি প্রবাহ। ফলে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি ঘটেছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর বলেন, তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী তীরবর্তি ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার গুলোর মাঝে ত্রান বিতরন অব্যাহত আছে।