'ভোলাহাটে হুমকির মুখে নদী তীর সংরক্ষণ প্রকল্প বাঁধ' শিরোনামে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার মুন্সিগঞ্জ থেকে পোল্লাডাঙ্গা ঘাট এলাকায় নদী তীর সংরক্ষণ প্রকল্প হুমকির মুখে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার কাজ না হওয়ায় প্রায় ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বাঁধ একটু একটু করে দেবে গিয়ে সিসি ব্লক ও ইটের ম্যাট্রেসিং নদীতে বিলীন হচ্ছে। সংবাদ প্রকাশের পর ১৬ জুলাই বৃহস্পতিবার মহানন্দা নদীর ডান তীরের সংরক্ষণ প্রকল্প বাঁধের ৩১০০ মিটার এলাকা পরিদর্শন করেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড।
গত ১২ জুলাই রোববার সাপ্তাহিক ভোলাহাট সংবাদ, ভোলাহাট চিত্রসহ ১৩ জুলাই জাতীয়, আনঞ্চলিক, স্থানিয় প্রিন্ট ও অনলাইনে 'ভোলাহাটে হুমকির মুখে নদী তীর সংরক্ষণ প্রকল্প বাঁধ' সংবাদটি প্রকাশ হয়। সংবাদটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের দৃষ্টি আকর্ষণ হলে পরিদর্শনে আসেন।
উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ঘাট হতে পোল্লাডাঙ্গা পর্যন্ত ৩১০০ মিটার নদীর তীর পরিদর্শন করেন, পাউবো চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবদুর রহমান৷ উপস্থিত ছিলেন, ভোলাহাট উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইসচেয়ারম্যান শাহনাজ খাতুন৷
উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবদুর রহমান বলেন, এখন বন্যার পানিতে নদী পরিপূর্ণ৷ বন্যার পানি কমে গেলে ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা নেয়া হবে৷
উল্লেখ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ঘাট হতে পোল্লাডাঙ্গা পর্যন্ত ৩১০০ মিটার নদী তীর সংরক্ষণ কাজ ১৯৮৯ -১৯৯০ হতে ২০০০-২০০১ পর্যন্ত সময়ে ১০ কোটি ৬৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ইট ম্যাট্রেসিংয়ের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হয়। যার মধ্যে সীমান্ত নদী সংরক্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্প (৩৫টি উপ-প্রকল্প, ১ম পর্যায়, পার্ট-এ এবং বি) এর আওতায় পোল্লাডাঙ্গা বিজিবির সীমান্ত ফাঁড়ি সংলগ্ন মহানন্দা নদীর ডান তীর সংরক্ষণ উপ-প্রকল্পের মাধ্যমে ৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা টাকা ব্যয়ে ২০০৩-০৪ইং হতে ২০০৮-০৯ইং পর্যন্ত সময়ে ১১৬২ মিটার নদীতীর সংরক্ষণ কাজ সিসি ব্লকের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হয়। যা গত ১২ বছরের বন্যায় একটু একটু করে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রায় ১০০০ মিটার ইট ম্যাট্রেসিং কাজও। মুন্সিগঞ্জ ঘাটের মাত্র ১০০ মিটার উজানে ভারত হতে ট্যাঙ্গন নদী মহনন্দা নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। ফলে মহানন্দা ও ট্যাঙ্গন নদীর মিলিত প্রবাহ উল্লিখিত বাস্তবায়িত কাজের উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে যা বন্যার সময় ভয়াবহ আকার ধারণ করে।
বাস্তবায়িত নদী তীর সংরক্ষণ কাজ দীর্ঘ প্রায় ১২ বছর কোনো মেরামত বা সংস্কার না হওয়ায় বর্তমানে সীমান্তবর্তী এ প্রকল্পটি হুমকির মুখে পড়েছে। বন্যা মৌসুমে পানির প্রবল তোড়ে সম্পাদিত কাজের লাঞ্চিং এ্যাপ্রোন দেবে গেছে৷ বর্তমানে স্লোপে ভাঙন দেখা দিয়েছে এবং ব্লাকগুলো নদীতে বিলীন হচ্ছে। অবিলম্বে লাঞ্চিং এ্যাপ্রোন শক্তিশালী করে মেরামত কাজ বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন হয়েছে। মেরামত বা সংস্কার কাজ করা না হলে ভেস্তে যাবে পুরো প্রকল্প, হুমকির মুখে পড়বে বিজিবি ক্যাম্পসহ বিভিন্ন ধরনের স্থাপনাসহ আশপাশের গোটা এলাকা। বিশেষ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে একটি উপজেলার বৃহৎ এলাকাকে বাঁচাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী করেছেন এলাকাবাসি।