শেরপুরে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ২ সে.মি ও চেল্লাখালী নদীর পানি ৫০ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে জেলার শতাধিক গ্রামের নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে প্রায় লাখো মানুষ। তলিয়ে গেছে রোপা আমনের বীজতলা ও সবজি আবাদ। এদিকে ব্রহ্মপুত্র নদের পানির তোড়ে শেরপুর-জামালপুর মহাসড়ক ডুবে যাওয়ায় গত পাঁচ দিন ধরে উত্তরাঞ্চলের সাথে সবধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে বিকল্প রাস্তা হিসেবে বলায়েরচরের ভেতর দিয়ে ছোট ছোট যানবাহন চলাচল করছে।
এক সপ্তাহের টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে নালিতাবাড়ীর চেল্লাখালী নদীর পানি বেড়েছে। যা বিপদসীমার ৫০ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে উপজেলার নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে জেলার শতাধিক গ্রামের নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে প্রায় লাখো মানুষ। শেরপুর সদরের ৭ ইউনিয়ন, নালিতাবাড়ী ৪ ইউনিয়ন ও শ্রীবরদী উপজেলা ২ ইউনিয়নের নতুন নতুন কয়েকটি গ্রামের নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দীরা বর্তমানে নৗকা কিংবা কলার ভেলা বানিয়ে যাতায়াত করছে। এছাড়া কিছু কিছু বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ ঘরে পানি উঠায় কেউ উচুঁ স্থানে কেউবা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। বাড়িতে পানি উঠায় গবাদিপশু নিয়ে পড়েছে চরম বিপাকে। স্থানীয়রা জানান, শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও গো-খাদ্যের সংকট রয়েছে।
শেরপুর সদরের চরপক্ষীমারী ইউনিয়নের কুলুরচর-বেপারিপাড়া এলাকার বাসিন্দা আকমল হোসেন, লাল মিয়া, রমজান আলী, ফকির মিয়া। তারা এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘ভাই আমরা খুব কষ্টে আছি। বাড়িতে পানি উঠায় আমরা এখন জামালপুর শহররক্ষা বাঁধে আশ্রয় নিয়েছি। কিন্তু আমাদের খাবার সংকট, বিশেষ করে বিশুদ্ধ পানি। এছাড়া গরু-ছাগল নিয়ে চরম বিপাকে আমরা। কয়েকজন এসে আমাদের খাবার দিলেও এখন তা শেষ। আমরা সরকারি সহযোগিতা চাই।’
জেলা খামারপারি উপ-পরিচালক মোহিত কুমার দে বলেন, ‘বন্যায় ৩৮০ হেক্টর রোপা আমনের বীজতলা, ৯০ হেক্টর সবজি, ৩০ হেক্টর পাট ও ১৩০ হেক্টর আউশসহ মোট ৬২৫ হেক্টর জমির এসব ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। যদি আগামী ৩/৪ দিনের মধ্যে পানি নেমে যায় তাহলে ফসলের তেমন ক্ষতি হবে না। তবে যদি পানি আরও এক সপ্তাহ পর্যন্ত থাকে তাহলে কৃষকের ফসলের ক্ষতি হবে।’
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ওয়ালীউল হাসান বলেন, ‘বন্যা কবলিতদের জন্য শেরপুর প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ আড়াই লাখ টাকা ও ১৫০ মে.টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে যা পর্যায়ক্রমে বিতরণ করা হচ্ছে।