প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ অর্থাৎ রেমিট্যান্সে আবারও রেকর্ড। এর বড় একটি কারণ ঈদুল আজহা উপলক্ষে পরিবার-পরিজনের কাছে বেশি করে টাকা পাঠাচ্ছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। জুন মাসের চেয়েও বেশি প্রবাস আয় দেশে এসেছে, যদিও জুলাই মাস শেষ হয়নি। জুলাইয়ের ২৩ দিনেই ১৯৬ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। জুন মাসে এসেছিল ১৮৩ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স। চলতি মাসের বাকি দিনগুলোতেও বড় অঙ্কের প্রবাস আয় আশা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যদি এ ধারাবাহিকতা বজায় থাকে, তাহলে একক মাস হিসেবে জুলাইয়ে প্রবাস আয় ২৫০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। প্রসঙ্গত, গত অর্থবছরের জুলাই মাসে ১৫৯ কোটি ৭৬ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেও প্রবাস আয়ের ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত রয়েছে। তাঁদের দাবি, ২ শতাংশ হারে নগদ প্রণোদনাসহ সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে এটি হয়েছে। ঈদুল আজহা উপলক্ষেও পরিবার-পরিজনের কাছে আগের চেয়ে বেশি রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুনে ১৮৩ কোটি ২২ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল। বাংলাদেশের ইতিহাসে একক মাসে আগে কখনো এত রেমিট্যান্স আসেনি। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় সেটি প্রায় ৩৯ শতাংশ বেশি। সেই রেকর্ড ভেঙেছে চলতি মাসের মাত্র ২৩ দিনে। এ সময়ে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯৬ কোটি ১২ লাখ ডলার। অর্থাৎ একক মাসে রেমিট্যান্সের নতুন রেকর্ড হয়েছে। করোনাকালে জাতীয় অর্থনীতির জন্য এটি সুসংবাদই বটে। করোনাকালে জনজীবনের সব ক্ষেত্রে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য কমে গেছে। কমে গেছে শিল্পোৎপাদন। প্রচুর কলকারখানা বন্ধ। লাখ লাখ লোক বেকার। হয় প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়েছে, নয়তো ছাঁটাইয়ের কবলে পড়তে হয়েছে অসংখ্য লোককে। যাঁদের চাকরি টিকে আছে তাঁদের বেতন-ভাতা কমে গেছে। অনেক প্রতিষ্ঠানে বেতন অনিয়মিত হয়ে পড়েছে। রোজার ঈদে বেশির ভাগ বেসরকারি চাকরিজীবী বোনাস পাননি। ঈদুল আজহাতেও একই অবস্থা। এমন একটি পরিস্থিতিতে প্রবাস আয়ে ভাঁটা পড়বে ভাবা হয়েছিল। কেননা করোনা মহামারি বিশ্বজুড়েই চলছে। প্রবাসী কর্মীদেরও অনেকে চাকরি হারিয়েছেন বা তাঁরা বেতন কম পাচ্ছেন। করোনার নেতিবাচক প্রভাব তাঁদের ওপরও পড়েছে। বাস্তবতা হচ্ছে, রেমিটেন্সে নেতিবাচকতা দেখা যায়নি। জুন মাসেও রেকর্ড রেমিট্যান্স এসেছে, জুলাই মাসেও এসেছে। এ ধারা অব্যাহত থাকুক। প্রবাসীদের প্রণোদিত করতে সরকার গৃহীত ব্যবস্থার সুফল পাওয়া যাচ্ছে। রেমিট্যান্স ধরে রাখতে সবধরণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।