মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার কেড়িনগর গ্রামের এক কলেজছাত্রী অগ্নিদগ্ধের ঘটনায় ৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ। অগ্নিদগ্ধ ওই ছাত্রী এখন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন প্লাস্টিক সার্জারী ইনস্টিটিউট হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন। এদিকে অগ্নিসংযোগের বিষয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে।
মামলার বাদী এজাহারে ওই ছাত্রীর দাদা রতন আলীর অভিযোগ, তার নাতনী কলেজছাত্রী আকলিমা খাতুন (১৮) এর সাথে একই গ্রাম কেড়িনগরের মাসুদ মোল্যার ছেলে মামলার প্রধান আসামি নাজমুল মোল্যার সাথে বিয়ে হয় দুই বছর আগে। প্রেমের সম্পর্কে বিয়ে হলেও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনি বনাহ হয় না। ৭ মাস পর আকলিমা খাতুন নাজমুলকে তালাক দেয়। বিষয়টি নাজমুল মেনে নিতে পারেনি। কিছু দিন পর থেকে নাজমুল ওই ছাত্রী আকলিমাকে বিভিন্ন সময় কুপ্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। আকলিমা তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় নাজমুল ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং হুমকি দেয়। সে বলে তোরে অ্যাসিড মারব, তোর ঘরে আগুন জ্বালায়ে দেব। বিষয়টি নিয়ে আকলিমা তার পরিবারকে জানায়। এরইমধ্যে গত শনিবার বিকালে ওই ছাত্রী বাথরুমে যাওয়ার সময় পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা নাজমুলের লোকজন আকলিমার ব্যবহৃত ওড়না দিয়ে তার বিভিন্ন স্থানে বাঁধে এবং ডিজেল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। আগুনে আকলিমার শরীরের প্রায় ৬০ পুড়ে যায় এবং সে ডাক চিৎকার শুরু করে। তার চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে আসে। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে এবং পরে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন প্লাস্টিক সার্জারী ইনস্টিটিউট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সরেজমিনে গেলে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া যায়। মামলার প্রধান আসামীর চাচী রত্না ও স্বজনরা বলেন, নাজমুল মরতে রাজি কিন্তু ওই মেয়েকে পাওয়া ছাড়া বিয়ে করবে না। মেয়েও তার কাছে দুই বছরের সময় চেয়েছিল। তিন চার দিন আগে নাজমুল গ্রাম্য মাতুব্বরদের ডেকে আনে এবং ওই মেয়েকে চায়। মেয়ের পরিবার তাকে দিতে রাজি হয়নি। এদিকে মেয়েকে অন্য ছেলের সাথে বিয়ে দেওয়ার জন্য ছেলে দেখে তার পরিবার। মেয়েটিও অন্য কোথাও যাবে না বলেই আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছে।
মহম্মদপুর থানার ওসি তারক বিশ্বাস এনটিভি কে বলেন, অগ্নিদগ্ধ ছাত্রীর দাদা মো. রতন আলী বাদী হয়ে সোমবার ৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৩জনের নামে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে থানায় মামলা করেছে। সোমবার মামালার ৫জন আসামীকে আটক করা হয়েছে। তবে ঘটনা নিয়ে দ্বিমুখি বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে। তদন্তের পর প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ পাবে।