সিরাজদিখানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত শহীদদের স্মরণে আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল ও ছিন্নমূল মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করেছে সিরাজদিখান উপজেলা যুবলীগের একটি অংশ।
শনিবার দুপুরে জেলার সিরাজদিখান উপজেলা অডিটরিয়ামে উপজেলা যুবলীগের একটি অংশ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে উপজেলার ১৪ ইউনিয়নের মধ্যে মালখানগর ইউনিয়ন ছাড়া ১৩ টি ইউনিয়নের যুবলীগের কোন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে দেখা যায়নি। এমনকি জেলা যুবলীগের কেউ উপস্থিত ছিলো না অনুষ্টানে। তবে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন যুবলীগের কর্মী ও সাধারণদের আগমনে অডিটরিয়াম কানায় কানায় ভরে যায়। এর আগে গত ২২ আগস্ট যুবলীগের পক্ষ থেকে দোয়া, সভা ও খাবার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
গতকাল উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন-আহবায়ক এইচ এম জহিরুল ইসলাম লিটুর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান আতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিরাজদিখান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী মহিউদ্দিন আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব আবু বাক্কার সিদ্দিক।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুবীর চক্রবর্তি, ইছাপুরা ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মতিন হাওলাদার, রসুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হাফেজ ফজলুল হক, জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মৃধাসহ উপজেলা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও বিভিন্ন অংগসংগঠনের অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এসময় বক্তরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান সহ তার পরিবারে নিহত শহীদদের হত্যাকারীদের দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসির মাধ্যমে দেশকে কলঙ্ক মুক্তকরার দাবী জানান। এ ছাড়া শীদদের স্মরণে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। পরে ১৫ আগষ্টে নিহত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানসহ তার পরিবারে নিহত শহীদদের ও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামণা করে বিশেষ দোয়া ও ৪ হাজার দুস্থ্য ছিন্নমূল মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়।
আবার অনুষ্ঠানে কোন কোন বক্তা বলেন, যুবলীগ এক ছাতার নিচে থেকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবে বলে আমরা মনে করি। কয়েকদিন আগে যুবলীগের একটি অনুষ্ঠান এখানেই হয়েছে। সেসময় যুবলীগের অনেকে উপস্থিত হয়নি। আজ আবার আরো অনেককে এ অনুষ্ঠানে দেখা যাচ্ছে না। তাই কোন সমস্যা থাকলে সমাধান আছে। মিলে মিশে কাজ করতে হবে, কারো মধ্যে কোন প্রকার দ্বন্দ্ব রাখা যাবে না।
এ বিষয়ে উপজেলা যুবলীগের ১ নং যুগ্ন আহ্বায়ক জহিরুল ইসলাম লিটু জানান, যখন কেন্দ্র হতে ৯০ দিনের জন্য আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হলো। এরপর পরিচিতি সভা করা হলো আহ্বায়ক আমাদের না জানিয়ে অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নেয়। আমাকে তারিখ অনুযায়ী থাকতে বলে তখন আমি বলেছিলাম এক সপ্তাহ পিছিয়ে ব্যাপক আয়োজনে করার জন্য, সেটা করেনি। কোন আলোচনা করেনি স্বাক্ষর নেয়নি। সে সময় থেকে বিবাদের সৃষ্টি হয়। ফরহাদ আর আলম নামে দুইজনকে সদস্য করা হয়, সে দুইজনকে না রেখে একই নামে অন্য দুইজনকে নেওয়া হয়। এতদিন হলো আহ্বায়ক কখনো আমাকে কোন কর্মকাণ্ডে ডাকেনি তাই সে তার মতো অনুষ্ঠান করে আমি আমার মতো অনুষ্ঠান করে যাচ্ছি।
উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মঈনুল হাসান নাহিদ জানান, আমরা যুবলীগ ঐক্যবদ্ধ আছি। তবে এক সংসারে কয়েক ভাই থাকলে মতানৈক্য থাকতে পারে। ২১ সদস্য বিশিষ্ট উপজেলা আহ্বায়ক কমিটি করা হয়েছে। সেখানে ১৭ জন আমরা এক আছি। পরিচিত সভা নিয়ে বিবাদ এটা ঠিক না। প্রথম আলোচনায় লিটু, মাসুদ লস্কর ও জেলা সেক্রেটারী উপস্থিত ছিল এরপর সে আর যোগাযোগ রাখেনি। আমরা উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ সাহেবের সাথে কথা বলে অনুষ্ঠান করেছে। দেখেন আজকে তাদের অনুষ্ঠানে জেলা যুবলীগের কেউ আসে নাই। উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়নের ১৩ টির সভাপতি সেক্রেটারী আসে নাই শুধু মালখানগর ইউনিয়ন ছাড়া। আমরা মূল ধারার যুবলীগ করি। তাদেরকে বিদ্রোহী অংশ বলতে পারেন, এদের কোন ভিত্তি নাই। আগস্ট শোকের মাস এর মধ্যে উল্লাস ও শ্লোগান দিয়ে জন সমাবেশের মত করে শোক পালন করেছে এটা আমার বোধগম্য নয়। তাছাড়া তারা কোনপ্রস্তুতি সভা করে নাই, আমাদেরও জানায় নাই। যুবলীগের আরো সদস্যদের সাথে কথা বলো জানতে পারেন।