লালমনিরহাটে নাতীকে বাচাঁতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ঠে পাতানি বেওয়া (৬২) নামে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। এসময় নাতী রিয়াদ আলী (৮) গুরুতর অসুস্থ্য হয়।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২টার দিকে সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নের আলোক দিঘী (আউলিয়ার মাঠ) এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আলোক দিঘী গ্রামের বিদ্যুতের মেইন সংযোগ থেকে প্রায় দেড়'শ পরিবারের একটি পকেট সংযোগ ন্যাকেড তারের মাধ্যমে হায়দার আলীর একটি বাশ ঝাড়ের উপর দিয়ে নেয়া হয়। বাশ ঝাড়ের পাশ দিয়েই চলাচলের মুল রাস্তা। ওই রাস্তা দিয়েই চাচ্ছিলো শিশু রিয়াদ। এ সময় বাশের সাথে বিদ্যুতের তার লেগে থাকায় এবং বাশ ঝাড়ের নিচে পানি থাকায় পানিসহ পুরো এলাকা বিদ্যুৎতারিত হয়ে যায়। পানির উপর দিয়ে রিয়াদ রাস্তা পারাপার হতে চাইলে ছিটকে পড়ে যায় সে। পরে তার চিৎকারে পাশেই দাড়িয়ে থাকা দাদী রিয়াদকে বাচাঁতে এলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ঠে পানিতে পড়ে যাায় দাদী পাতানি বেওয়া।
পরে এলাকাবাসী দ্রুত বিদ্যুৎ অফিসে ফোন দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার পর গুরুতর আহত অবস্থায় দাদী-নাতীকে উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দাদী পাতানী বেওয়াকে মৃত ঘোষনা করেন। শিশু রিয়াদকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করে নেন।
ওই গ্রামের সামছুল হক (৫৫) নামে এক মধ্যবয়সী অভিযোগ করে বলেন, বাশ ঝাড়টি কেটে ফেলার জন্য একাধিকবার বলা হলেও বাশ ঝাড় মালিক হায়দার আলী তা কর্নপাত করেনি। পরে এ ব্যাপারে কয়েকবার শালিস বৈঠকও বসে। তারপরেও কোন সমাধান না হওয়ায় স্থানীয় চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী মাষ্টারের সহযোগিতায় বিদ্যুৎ সংযোগকারী পরিবারের নিকট থেকে ৮ হাজার টাকা চাঁদা তুলে হায়দার আলীকে দেয়া হয়। তারপরেও হায়দার আলী বাশ ঝাড় কেটে না ফেলায় আজ পাতানী বেওয়াকে জীবন দিতে হলো।
মৃত পাতানী বেওয়ার ছোট ভাই নুর ইসলাম জানান, বাশ ঝাড় কেটে ফেলার জন্য বার বার বলেও কোন লাভ হয়নি। পরে এলাকাবাসী বাশ কাটার জন্য হায়দার আলীকে ৮ হাজার টাকাও দেয়া হয়। টাকা নেয়ার পরও তিনি বাশ না কাটায় আজ তার বোনকে জীবন দিতে হলো। তিনি তার বোনের মৃত্যুর বিচার দাবী করেন।
কুলাঘাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী মাষ্টার বিদ্যুৎস্পৃষ্ঠে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করলেও বাশ কাটার জন্য হায়দার আলীকে ৮ হাজার টাকা দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন।