আশাশুনি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা গাজী সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ আসতে শুরু করেছে। তার দুর্নীতির তথ্য পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তের ভুক্তভোগি শিক্ষক, কর্মচারী ও স্কুলের সাথে সংশ্লিষ্টরা নানা অভিযোগ নিয়ে সাংবাদিকদের কাছে আসতে শুরু করেছে। আজকে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের তুতীয় অংশ প্রকাশ করা হলো।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম আশাশুনিতে যোগদান করেন ০৮/১২/২০১৯ তারিখ। যোগদান করেই নিজেকে জাহির করতে গম্ভীর মেজাজ ও রক্ষণশীল আচরণ শুরু করেন। যাতে তার কাছে সহজেই কেউ যেতে স্বচ্ছন্দবোধ করতেননা। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে একজন অফিস সহকারীকে মোক্ষম হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে ফাঁদ পাতা শুরু করেন। অনেকে ইচ্ছে না থাকা স্বত্ত্বেও বাধ্য হয়ে ফাঁদে পা দিয়েছেন এবং আর্থিক লেনদেন করতে বাধ্য হয়েছেন বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভুক্তভোগিরা অভিযোগ করেছেন। (কেননা, নাম প্রকাশ করলে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধের অস্ত্র ব্যবহারের ভয় রয়েছে তাদের।) এমনই একটি প্রতিষ্ঠান ১৬৬ নং কালকি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। জাতীয়করণের শেষ ধাপে আশাশুনির একমাত্র বিদ্যালয় হিসাবে এটিকে সরকার জাতীয়করণ করেন। যোগদানের দু’মাসের মাথায় এ বিদ্যালয়ের বেতন ছাড়ের কাগজপত্র তার কাছে পৌছায়। একাজটি তিনি নিজে না করে অফিস সহকারীর মাধ্যমে দরকষাকষি শেষে তার কাছে পৌছান হয়। স্কুলের শিক্ষকরা অফিস সহকারীর মাধ্যমে শিক্ষা অফিসারের কাছে কাপজপত্র দিয়ে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে স্বাক্ষর করিয়ে নিতে সক্ষম হন। আর এজন্য তাদেরকে গুণতে হয় ৪ লক্ষাধিক টাকা। কালকি স্কুলের শিক্ষকরা টাকা লেনেদেনের কথা স্বীকার না করলেও তাদেরকে জেলার অন্য উপজেলার নতুন জাতীয়করণ বিদ্যালয়ে যেভাবে হয়েছে সেভাবে করা হয়েছে বলে টাকার চাহিদার ইঙ্গিত জানান দেয়া হয় এমন অনুভূত হয়েছে। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভুক্তভোগি অন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ এলাকার বিষয়টি জানা অনেকে অফিস সহকারীর মাধ্যমে শিক্ষা অফিসারকে টাকা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সূত্রটি আরও জানান, গত জুন ক্লোজিং এর সময় হিসাব রক্ষণ অফিসের নামে ৩ লক্ষ টাকা উত্তোলন করান ওই শিক্ষা অফিসার। এর থেকে ৯০ হাজার টাকা হিসাব রক্ষণ অফিসে দিয়েছেন এবং নিজে ১ লক্ষ টাকা নিয়েছেন। অবশিষ্ট টাকা দু’জন প্রধান শিক্ষকের কাছে ও একটি ক্লাস্টারে অব্যয়িত রয়েছে বলে সূত্রটি জানান। অব্যয়িত টাকা দিয়ে একজন সহকারী শিক্ষা অফিসারকে বদলি করানো হবে বলে কাজ শুরুর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রটি দাবী করেন। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের ঘটনার পরও বিভিন্ন শিক্ষকদের দিয়ে বাসার প্রয়োজনীয় সাবান, শ্যাম্পু, পারফিউম, গামছা, তোয়ালে, ট্র্ওাজার, হ্যান্ডওয়াশ, স্যানিটাইজারসহ বিভিন্ন ফলমুল ও খাবার জিনিসপত্র ক্রয় করে নিয়ে টাকা পরিশোধ না করার অভিযোগও সূত্রটি করেছেন। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে সূত্রটি জানান। এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা গাজী সাইফুল ইসলামের মোবাইল (নং ০১৭১৬৭৭০৫৮০) এ বারবার রিং করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি (২য় কিস্তির সময়)। প্রথম নিউজের সময় রিং করা হলে তিনি রিসিভ করে পরে বক্তব্য দেবেন বললেও আর কল ব্যাক করেননি। ৩য় কিস্তির বক্তব্য নিতে সাংবাদিকরা শিক্ষা অফিসে গেলেও তাকে পাওনা যায়নি। তখন অফিসে বসে এবং পরে বিভিন্ন মোবাইল থেকে রিং করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। (চলবে..)