পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেছেন, নদী ভাঙন রোধে প্রকল্প বেশ কিছু প্রকল্প নেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা রাখুন। আপনারা কথা দিয়েছেন, বাঁধ দিলে নৌকায় ভোট দিবেন। আমরা বাঁধ দিবো, নৌকা ছাড়া ভোট দিলে দায়ি থাকবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু ও সুস্থতার জন্য দোয়া চান।
শনিবার(২৬ সেপ্টেম্বর) লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নে তিস্তা নদীর ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন কালে তিনি এসব কথা বলেন।
পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, আমরা ভাটির দেশের মানুষ। উজানে বৃষ্টি হলে তা নেমে এসে আমাদের দেশে বন্যার সৃষ্টি হয়। নদী ভাঙনের ফলে পানির সাথে পলি নেমে আসে। দেশে বছরে এক বিলিয়ন পলি জমে। প্রতি বছর নদী ভরাট হয়ে চর জেগে উঠছে এবং নদীও গতিপথ পরিবর্তন করছে। প্রতি বছর ভাঙন রোধে বাঁধ দেয়া হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজ ভালো করতে গতিটা কিছু ধিরে হয়। বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে কিছু সময় লাগবে। এজন্য তিস্তাপাড়ের মানুষকে ধৈর্যধারন করতে আহবান জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, আমার দাদা বাড়ি নদীতে ভেঙে কিচ্ছু নেই। শুধু দাদার কবরটা আছে। আপনাদের কষ্টটা বুঝতে পারি বলে আমাকে দায়িত্ব দেয়ায় দেশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে ঘুরে বেড়াচ্ছি। ভেঙে যাওয়ার খবর পেলে আমরা দেখতে আসি। আপনাদের কষ্ট কিছুটা লাঘব করতে চেষ্টা করি।
পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশের সবগুলো নদী শাসন করতে নির্দেশ দিয়েছেন। ড্রেজিং করে নদী ছোট করে কৃষি জমি বাড়ানো হবে। এতে অনেক টাকা দরকার। এজন্য বিদেশী ডোনারদের সাথে কথা বলেছি। অনেক দেশ আগ্রহ দেখিয়েছেন।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত পথ সভায় মন্ত্রী আরো বলেন, স্প্যার বাঁধ গুলো করার পরে কয়েক বছর ভাঙন কম ছিল না। বৈশ্যয়িক জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে আবহাওয়ার পরিবর্তন হয়েছে। বিগত সরকার নদী শাসনে তেমন কোন টাকা ব্যায় করতে পারে নাই। করোনার কারণে আমাদের অগ্রগতি কিছুটা থেমে গেছে। এ পরিস্থিতিতেও প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষকে দুই হাতে টাকা বিলিয়ে দিয়েছেন। মোবাইলেও প্রনোদনা হিসেবে আপনাদেরকে টাকা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্য হলো মানুষের সেবা করা। মানুষ যাতে কষ্ট না পায় সেজন্য কাজ করছি আমরা।বঙ্গবন্ধুর পরে এমন প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষ পায়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা না থাকলে দেশের উন্নয়ন হবে না।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাহমুদুল ইসলাম, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহা-পরিচালক এ এম আমিনুল হক, পানি উন্নয়ন বোর্ড উত্তরাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী জ্যোতি প্রসাদ ঘোষ, লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর, আদিতমারী ইউএনও মনসুর উদ্দিন, লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান ও আদিতমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক রফিকুল আলম ও মহিষখোচা ইউপি চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক হোসেন চৌধুরী প্রমুখ।
পথ সভা শেষে নৌকা যোগে নদী ভাঙন এলাকাগুলো ঘুরে ঘুরে দেখেন মন্ত্রী। এ সময় নদীর বাম তীরে ক্ষতিগ্রস্থ হাজারো মানুষ ব্যানার ফেষ্টুন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিস্তা নদীর স্থায়ী সমাধান দাবি করেন। নৌকা থেকে নেমে এসব মানুষকে বাঁধ নির্মানের আশ্বাস দেন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী।
পরিদর্শন শেষে প্রতিমন্ত্রী জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের উদ্দেশ্যে রহনা দেন। এর আগে মন্ত্রী কুড়িগ্রাম হয়ে লালমনিরহাটে প্রবেশ করেন। সকালে লালমনিরহাট সদর উপজেলার রাজপুর ইউনিয়নের নদী ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেন।