অপরিকল্পিত ড্রেজিং কার্যক্রমে নৌরুরে নাব্য সঙ্কট দূর হওয়ার পরিবর্তে আরো তীব্র হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ নৌরুটের ড্রেজিংয়ের মাটি ফের নদীতেই ফেলা হচ্ছে। নৌরুটে নাব্য সংকট নিরসনে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌরুটে বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং কার্যক্রম নিয়ে বিআইডব্লিউটিসি, লঞ্চচালক ও ঘাটসংশ্লিষ্টরা বিস্মিত। নৌরুটের লৌহজং টার্নিং চ্যানেল চালু করতে চলতি মাসের প্রথম ১০ দিন ৯টি ড্রেজার দিয়ে দিনরাত ড্রেজিং করলেও এখন সেতু পয়েন্টে ড্রেজিং করতে গিয়ে অপসারণ করা পলিমাটি পাশেই ফেলা হচ্ছে। ফলে লৌহজং টার্নিং চ্যানেল আবারো পলিমাটিতে ভরে যাচ্ছে। আর বিআইডব্লিউটিএর এমন ড্রেজিং কার্যক্রম দেখে বিস্মিত ঘাট ব্যবহারকারীরা। নৌরুট ব্যবহারকারী লঞ্চচালক ও ঘাট সংশ্লিষ্টদের সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ড্রেজিংয়ের নামে কোটি কোটি টাকা অর্থ ব্যয় করা হলেও দীর্ঘদিনে নৌ-চ্যানেল ফেরি চলাচলের উপযোগী হয়ে ওঠেনি। বরং ড্রেজিং কার্যক্রমই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। বিআইডব্লিউটিএ বলছে, তারা নাব্য সংকট নিরসনে ড্রেজিং অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু ঘাটসংশ্লিষ্টরা বলছে, লৌহজং টার্নিং চ্যানেলের নাব্য সংকট নিরসনে চলতি মাসের প্রথম ১০ দিন ৯টি ড্রেজার দিয়ে রাতদিন ড্রেজিং করে বিআইডব্লিউটিএ। এখন পাশের পদ্মা সেতুর চ্যানেলে ড্রেজিং করে সেখানেই পলিমাটি ফেলায় লৌহজং টার্নিং চ্যানেল আবারো ভরাট হয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া দীর্ঘদিন ধরে ড্রেজিং কাজ অব্যাহত থাকলেও নাব্য সংকট নিরসন না হওয়ায় রো রো ফেরি ও ডাম্ব ফেরিগুলো চলাচল করতে পারছে না। এমন অবস্থায় ছোট ছোট ৪টি ফেরি চালু রেখে নৌরুট সচল রাখলেও সেগুলো চলছে নদীর তলদেশ ঘেঁষে। আর ঘাটের অদূরেই নোঙরে করে অলস বসিয়ে রাখা হয়েছে ৯টি ফেরি।
সূত্র জানায়, চলতি বছরের জুন মাস থেকে গত সপ্তাহ পর্যন্ত ৩ মাস ২২ দিন পর্যবেক্ষণের পর শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌরুটে চলাচলরত ফেরির একাধিক চালক, বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তা ও লঞ্চচালকরা বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং কার্যক্রম নিয়ে অভিযোগ তুলেছে। তাদের মতে, চীনা প্রতিষ্ঠান চায়না সিনোহাইড্রোর ড্রেজিংয়ে কাটা পলিমাটি পদ্মা চরের মাঝে ফেলার কারণে সেগুলো নদীর পানিতে মিশতে সুযোগ পায় না। কিন্তু বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজারগুলো পলিমাটি ফেলার কাজ সম্পূর্ণ উল্টো। তারা যেখানে ড্রেজিং করছে, তার পাশেই ফেলছে পলিমাটি। ফলে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না; উল্টো ক'দিন না যেতেই আবার পলি জমে চ্যানেলে নাব্য সংকট দেখা দিচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে বিআইডব্লিউটিএর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মজনু মিয়া জানান, শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌরুটের নাব্য সংকট নিরসনে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। নৌ-চ্যানেলে ৩৩ লাখ ঘন মিটার পলিমাটি অপসারণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে ড্রেজিং কাজ চলছে। লৌহজং টার্নিং চ্যানেলটি এখন ব্যবহারের সম্ভাবনা নেই। তাই ড্রেজিংয়ের বালু সাময়িক সময়ের জন্য এখানে ফেলা হচ্ছে।