ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর দিব্যপল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাষণ দিয়েছিলেন এই ঘটনাটি অনেকেরই অজানা। এমনকি নতুন প্রজন্ম বিষয়টি সম্পর্কে ধারনা নেই। আবার ওই সভায় অনেকেই উপস্থিত থেকে ভাষণ শুনেছেন। বঙ্গবন্ধু অনেককে পিঠে হাত রেখে রাজনীতিতে উৎসাহ দিয়েছেন বলে জানা গেছে। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত স্থানটি আড়ালটি আড়াল করে বিধি বহির্ভূতভাবে স্থাপনা নির্মান করায় ক্ষুব্ধ হন এলাকাবাসী।
এলাকাবাসীর ক্ষুব্ধতার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে স্থাপনাটি গুড়িয়ে দেয়া হয়। জানান হয় প্রশাসনকে। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ডা: সঞ্জিব কুমার দাশ ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থাপনা নির্মান কাজ বন্ধ করে দেন।
স্থানীয় এলাকাবাসীর সাথে আলাপকালে জানা যায় খুলনা, যশোর ও সাতক্ষীরা মিলনস্থান চুকনগর। সেই চুকগরের প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দিব্যপল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়। ওই বিদ্যালয়ের মাঠে ১৯৫৩ সালে ভাষা শহীদদের স্মরণে স্থাপপিত হয় একটি শহীদ মিনার। যতদুর জানা যায় এই শহীদ মিনারটিই ডুমুরিয়া উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্থাপিত সর্বপ্রথম শহীদ মিনার। ১৯৭০ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে ওই শহীদ মিনারের উপরে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজবুর রহমান ভাষন দিয়েছিলেন।
এ বিষয়ে চুকনগর গণহত্যা স্মৃতি রক্ষা পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ এবিএম শফিকুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধুর ওই ভাষনে যশোর জেলার কেশবপুর, সাতক্ষীরা জেলার তালা, খুলনার ডুমুরিয়াসহ বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার মানুষ বঙ্গবন্ধুর ভাষন শোনেন। সেই শহীদ মিনারটির কোন সংরক্ষণ ও সৌন্দর্য বর্ধনে আজও কেউ ব্যবস্থা নেয়নি। স্বাধীনতার অর্ধশত বছর পরে এসে সেটি আড়াল করে স্থাপনা নির্মান করা স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তির উপর চরম আঘাত।
স্থানীয় সংসদ সদস্য সাবেক মন্ত্রী শিক্ষাবিদ নারায়ন চন্দ্র চন্দ বলেন, চুকনগর স্কুল মাঠে জাতির পিতার দেয়া ভাষন নিজে উপস্থিত থেকে শুনেছি। আমি বঙ্গবন্ধুর পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে তাঁর সাথে কথা বলেছিলাম। তিনি আমার পরিচয় পেয়ে বলেছিলেন এত কম বয়সে প্রধান শিক্ষক। ভাল করে শিক্ষকতা ও রাজনীতি কর। অনেকদুর এগিয়ে যাবে। বঙ্গবন্ধুর সেই কথা শুনে ব্যাপক উৎসাহী হই। তার মখের কথা ও নির্দেশনা আমার রাজনৈতিক জীবনে ব্যাপক ভুমিকা রেখেছে। তিনি বলেন, চুকনগর দিব্যপল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের কতিপয় ব্যক্তির হটকারি সিদ্ধান্ত নিন্দনীয়। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত স্থানটি সংরক্ষন করে তা নতুনর প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে সব রকম ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ছাড়া সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে জানিয়ে দেয়া হবে কোন স্থাপনা নির্মান করতে হলে সংশ্লিষ্ট বিভাগের অনুমতি ও নকশা নিয়েই করতে হবে।