ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈল উপজেলার নেকমরদণ্ডচেকপোষ্ট সড়ক ঘেষেঁ মুরগীর লিটারের স্তুপ রাখায়, দুর্গন্ধে পরিবেশ বিপর্যয়ের সাথে স্বাস্থ্যঝুঁিকতে পড়েছে ঐ এলাকার স্থানীয় মানুষ সহ পথচারীরা। এ নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের কাছে মৌখিক বা লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পায়নি এলাকাবাসী বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
স্থানীয়রা জানায়, যারা মুরগীর লিটার সড়কের পাশে রেখেছে তারা মুলত এগুলো বস্তা হিসাবে কৃষকদের কাছে বিক্রি করে থাকে। তারা এলাকার প্রভাবশালী ও শাসক দলের সমর্থক হওয়ায় কারা এগুলো রেখেছে,এগুলোর সঠিক নাম ঠিকানা বলতে রাজি হয়নি এলাকার সাধারণ মানুষ। স্থানীয়দের অভিযোগ লিটার নিয়ে প্রতিবাদ করলে আমাদের বিভিন্ন সমস্যার সমুখিন হতে হয়,আমরা বিভিন্নভাবে হয়রানীরও শিকার হয়। তাই বাধ্য হয়ে র্দীঘ চার পাঁচ বছর ধরে মুরগীর লিটারের দুর্গন্ধে বিপদজনক পরিবেশে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছি। অন্যদিকে পথচারীরা বলছে পরিবেশ বিপর্যয় হয় এমন বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসনের নিজস্ব দায়িত কর্তব্য রয়েছে। কিন্তু র্দীঘ দিন ধরে লিটারের কারণে এলাকার পরিবেশ বিপর্যয় হলেও আমরা উপজেলা প্রশাসনের তেমন কোন পদক্ষেপ দেখিনি।
গত শুক্রবার নেকমরদণ্ডচেকপোষ্ট সড়ক এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, সড়ক ঘেষেঁ খামাল করে রাখা হয়েছে মুরগীর লিটারের বস্তা। সড়কের নেকমরদ এলাকা থেকে শুরু করে মালিভিটা কাউন্সিল বাজারের আশপাশ গাজীগড় ও ব্যাংকপুকুর এবং চেকপোষ্ট বাজার পর্যন্ত সড়কের ফুটপাতে ও সড়ক ঘেঁেষ রাখা হয়েছে মুরগীর লিটার। এছাড়াও লিটার গুদাম জাতের জন্য অনেকে আবার স্থায়ী বা অস্থায়ী গোডাউন তৈরী করেছে।কাউন্সিল বাজারের চেকপোষ্ট মুখি সড়কে ঐ এলাকার ইমরান নামে এক ব্যক্তি সড়কের পাশে তার ব্যক্তি মালিকানার গোডাউনে এবং সড়ক ঘেষেঁই বস্তার খামাল করে রেখেছেন মুরগীর লিটার। সেখানে আবার ১০ চাকার ট্রাক ভর্তি মুরগীর লিটারের একটি গাড়ী দাঁড়িয়ে রয়েছে। মশামাছিগুলো লিটারের বস্তা ঘিরে ধরে ভন ভন করে উড়ছে। সেখানেই দাঁড়িয়ে দেখা যায় মশামাছির স্বাধীন বিচরণ। তারা একবার লিটারের বস্তায় যাচ্ছে আরেকবার সাধারণ মানুষের শরীরে বা আশপাশ দোকানের বিভিন্ন পণ্যের উপর বসছে। ইমরানকে এমন ভরা বাজারের সড়কের পাশে লিটার রাখার কারণ প্রশ্নে তিনি সোজা সাপটা বলেন,সবাই রেখেছেন তাই তিনিও রেখেছেন। কারো কিছু করার থাকলে করুক। তবে ইমরানের মুরগীর লিটার সড়কের পাশ থেকে অপসারণ ও পরিবেশ বিপর্যয় করার অপরাধের অভিযোগ তুলে ইতোমধ্যে ঐ এলাকার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী আবু তালেব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।আবু তালেব জানান,পাকা সড়কের সাথে আমার বাড়ী, সেখান থেকে প্রায় ত্রিশ ফিট দুরেই ইমরান একটি গোডাউনে লিটার রেখেছে। আবার তার পাশেই খোলা আকাশের নিচে লিটারের বস্তা খামাল করে রেখেছে। বাড়ীতে মশামাছির উপদ্রব বেড়ে গেছে,লিটারের বিষাক্ত গন্ধে আমার পরিবারের লোকজন প্রায় অসুস্থ হয়ে পড়ছে।,এছাড়াও বিভিন্ন অসুখ বিসুখে আক্রান্ত হচ্ছে। তাই আমি ইউএনও বরাবরে একটি অভিযোগ দিয়েছি। এখনো কোন প্রতিকার পায়নি।স্থানীয় অনেকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জানান, লিটারের কারণে আমাদের এলাকায় চরম পরিবেশের বিপর্যয় ঘটেছে। স্বাভাবিক জীবন যাপন করায় দুস্কুর হয়ে পড়েছে। তারা বলেন,এক দিকে লিটারের বিষাক্ত দুর্গন্ধ অন্যদিকে বাসা বাড়ী হাটবাজারে মশামাছির অবাধ বিচরণে আমরা বিভিন্ন ভাইরাসে সংক্রিমত হয়ে, অসুখ বিসুখে আক্রান্ত হচ্ছি। ছোট শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বলে তারা অভিযোগ করেন। তাই তারা অনতিবিলম্বে সড়কের পাশে কিংবা জনবহুল এলাকা বাসাবাড়ীর সামনে থেকে বিষাক্ত মুরগীর লিটার অপসারণ করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবী জানিয়েছেন।উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকর্তা ডাঃ ফিরোজ আলম বলেন, লিটারের বস্তায় যে মাছি বসে,সে মাছি আবার বাসাবাড়ীর বিভিন্ন খাবারে বা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বসে। এ সময় মশামাছি থেকে বিভিন্ন ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। এতে করে মানুষজন বিভিন্ন রোগে সংক্রিমত হয়ে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন অসুখে পড়বে ঐ এলাকার মানুষ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী আফরিদা গতকাল শুক্রবার বলেন, অভিযোগের আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।