রংপুরের পীরগঞ্জে ৭৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থগিত হওয়া ‘দপ্তরী কাম প্রহরী’ পদে নিয়োগ দিতে হাইকোর্টের নির্দেশে পুরাতন চাকরী প্রত্যাশীরা আশায় বুক বাঁধলেও ওই পদে আবারো বিজ্ঞপ্তি দেয়ায় তারা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। অপরদিকে পুরাতন এবং নতুন আবেদন করা চাকরী প্রত্যাশীর মধ্যে কারা নিয়োগ পাবেন এ নিয়েও দ্বিধা-দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে,সৃষ্টি হয়েছে ধৃ¤্রজালের। সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে পীরগঞ্জের ২’শ ১৩ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পর্যায়ক্রমে ‘দপ্তরী কাম প্রহরী’ পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে। ইতঃপূর্বে ১’শ ৩৫ টি বিদ্যালয়ে প্রতি মাসে ১৪ হাজার ৪৫০ টাকা করে বেতনে নিয়োগও দেয়া হয়েছে। এরপর ২০১৮ সালের ২২ অক্টোবর উপজেলার ৭৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ওই পদে নিয়োগ দিতে উপজেলা নিয়োগ কমিটির সভাপতি হিসেবে তদানিন্তন ইউএনও টিএম মমিন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিলে ৪’শ ২ জন আবেদন করেন। নিয়োগ সম্পন্ন করতে গত বছরের ১৭ জুলাই থেকে নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষাও হয়। কিন্তু নিয়োগের ব্যাপারে নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। গত বছরের ২১ আগস্ট উচ্চপর্যায়ের এক সদস্য বিশিষ্ট কমিটি পীরগঞ্জে এসে সরেজমিন তদন্ত করে অভিযোগের প্রমান পায়। ওই দিনই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের ওয়বেসাইটে পীরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের ওই নিয়োগের কার্যক্রম স্থগিত করে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হলে নিয়োগের পুরো বিষয়টি ঝুলে যায়। সে সময় কমিটিতে স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও, সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষা অফিসার, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক ছিলেন। নিয়োগটি বাতিল হলে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসককে সভাপতি করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট নিয়োগ কমিটি করা হয়। পীরগঞ্জের স্থগিত হওয়া ওই পদের নিয়োগ কার্যক্রম বহালের জন্য উপজেলার রামপুৃর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরী প্রত্যাশী সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের সচিব একরাম আল হাসানসহ ৫ জনকে বিবাদী করে হাইকোর্টে রিট পিটিশন করলে আদালত ওই পদে পূর্বের আবেদনকারীদের নিয়োগ দেয়ার নির্দেশ (রায়) দেন। এদিকে রায়ের সার্টিফায়েড কপি আসার আগেই গত ২২ সেপ্টেম্বর রংপুর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা পীরগঞ্জসহ জেলার ৮ উপজেলায় ‘দপ্তরী কাম প্রহরী’ পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেন। বিজ্ঞপ্তির শেষ তারিখ ২৭ অক্টোবর। এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক চাকরী প্রত্যাশী জানায়, দপ্তরী পদে নিয়োগ নিয়ে আমরা খুবই দুশ্চিন্তায় আছি। আগের আবেদনকারীরা চাকরী পেলে আমাদের আবেদন তো বৃথা হবে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকউজ্জামান বলেন, মহামান্য হাইকোর্টের একটি চিঠি পেয়েছি। ওই চিঠি রংপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে পাঠিয়েছি। পাশাপাশি নতুন বিজ্ঞাপনের ভিত্তিতে আবেদনও জমা হচ্ছে। যে কারণে সব কিছু মিলিয়ে এ উপজেলায় দপ্তরী কাম প্রহরী পদে নিয়োগের ব্যাপারে হযবরল অবস্থা বিরাজ করছে বলা চলে।