নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার শ্রমিকলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দুর্ধর্ষ অস্ত্রধারী ক্যাডার মিজান বাহিনীর অত্যাচারে উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের এলাকাবাসী অতিষ্ঠ, প্রাণ ভয়ে তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে রাজি নন এলাকার লোকজন।
সরেজমিনে এলাকায় ঘুরে ও একাধিকসূত্রে জানা যায়, একসময়ের সিএনজি চালক থেকে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় মিজান বাহিনীর প্রধান মিজানুর রহমান দুর্ধর্ষ ক্যাডারে পরিণত হয়েছে। উপজেলার চরকাঁকড়া ইউনিয়নের রাস্তার মাথা নামকস্থানে মিজান বাহিনী একটি নিজস্ব বাহিনী গড়ে তুলেছে। মিজান বাহিনী মিজান তার নির্দেশে এলাকায় খুন, ধর্ষণ, মাদক ব্যবসা, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও সম্পত্তি জবর দখলসহ সকল অপকর্মের সাথে জড়িত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অস্ত্রধারী মিজান ও মিজান বাহিনীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলাসহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে কোম্পানীগঞ্জ থানায়। মিজান বাহিনীর প্রধান মিজানুর রহমান (৫০), চরকাঁকড়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মৃত তোফাজ্জল আলমের ছেলে। সে শান্ত এলাকাকে অশান্ত করে তুলেছে। গত ১৮অক্টোবর সন্ধ্যায় দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পেশকার হাট রাস্তার মাথায় বিনা উস্কানিতে হামলা চালিয়ে ছাত্রলীগের ১০জন নেতাকর্মীকে আহত করে। এর মধ্যে গুরুত্বর আহত ৬জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী বসুরহাট পপুলার হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এ ঘটনায় গত ২০ অক্টোবর মুজিব কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হক জয় বাদী হয়ে মিজান বাহিনী প্রধান মিজানকে প্রধান আসামি করে ১৮ জনের বিরুদ্ধে কোম্পানীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।
চরকাঁকড়া ইউনিয়নের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ.লীগের নেতা মোঃ হানিফ সবুজ জানান, মিজান বাহিনী হামলা করে গত ২০১৪ সালে স্থানীয় আ.লীগের প্রবীন নেতা গোলাম মাওলা সারেংকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। মিজান ও তার ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান মিঠু সেই মামলার প্রধান ও ২য় আসামী। এ হত্যা মামলায় দীর্ঘদিন জেল খেটে জামিনে মুক্ত হয়ে আমাদের এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতেছে। এছাড়াও মিজান এলাকার আহসান উল্যাহ, আলা উদ্দিন নেতা, পারভেজ, হানিফ মিয়া, কাশেম মেম্বারসহ এলাকার অনেক গণ্য মান্য ব্যক্তি তার অত্যাচারের শিকার।
এ আক্রমনে তার বাহিনীর কোন ক্ষতি না হলেও সে উল্টো তার স্ত্রী রাহেনা আক্তার মায়াকে বাদী করে ১০জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে কোম্পানীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে চরকাঁকড়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের প্রবীন আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি মেম্বার আবুল কাশেম এ জানান, মিজান বাহিনীর অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ। মিজান তার বাড়ির জাহানারা বেগম কে ত্রাণ ও শাড়ি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করে। ধর্ষিতা বিষয়টি বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জাকে জানান।
এ ব্যাপারে মিজান বাহিনীর প্রধান মিজানের সাথে ০১৮৬৫৭৩৬১৭৬ নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে, সে সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার প্রতিপক্ষ আমাকে গায়েল করার জন্য জন্য মিথ্যা অপপ্রচার করছে।
কোম্পানীগঞ্জ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফুর রহমান জানান, মিজানের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে। আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইনের আইনের আওতায় আনা হবে।