কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের জামষাইট গ্রামে স্বামী, স্ত্রী ও তাদের শিশু সন্তানকে হত্যার পর ঘরের পাশে বাঁশ ঝারের নিচে গর্ত করে মাটি চাপা দেয়ার ২০ ঘন্টা পর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার দিবাগত রাতের কোন এক সময়। বৃহস্পতিবার রাত ১০ টায় মাটি খুড়ে মৃত মীর হোসেনের পুত্র আসাদ মিয়া (৫৫), তার স্ত্রী পারভীন আক্তার (৪৫) ও তাদের শিশু পুত্র লিয়ন (১২) এর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহত আসাদ মিয়ার ছোট ভাই দ্বীন ইসলাম (৩৮), ছোট বোন নাজমা (৪২) প্রতিবেশী আল আমিন (৩০) নিহতের মা জমিলা (৭০)কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
জানা যায়, নিহত আসাদ মিয়ার সাথে তার ছোট ভাই দ্বীন ইসলামের জমি সংক্রান্ত বিরোধ ছিল। বুধবার রাতে আসাদ মিয়া স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে নিয়ে তাদের ঘরে ঘুমিয়ে থাকে। রাতের কোন একসময় দ্বীন ইসলাম ঘরে প্রবেশ করে ঘুমন্ত আসাদ মিয়া, তার স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে লোহার সাবল দিয়ে মাথায় আঘাত করে তাদেরকে হত্যা করে। লাশ গুম করার জন্য ঘরের পাশে বাঁশ ঝারের নিচে গর্ত করে এক গর্তে তিনটি লাশ ফেলে মাটি চাপা দেয়। সকালে আসাদ মিয়ার মেঝো ছেলে মোফাজ্জল নানার বাড়ি থেকে বাড়ি ফিরে মা,বাবা ছোট ভাইকে না পেয়ে খোঁজতে থাকে। ঘরের ভিতর রক্ত দেখে তার সন্দেহ হয়। সারাদিন খোঁজা খুজি করে তাদের কোন সন্ধান পায়নি। ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সন্ধ্যায় স্থানীয় লোকজন ঘরের পিছনে নতুন মাটি খুড়া দেখে অনুসন্ধান করে। কোদাল দিয়ে মাটি উল্টাতেই শিশু বাচ্চাটির হাত বেরিয়ে আসে। তৎক্ষনাৎ কটিয়াদী থানা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে ময়না তদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। ঘটনার পর থেকে নিহতের ছোট ভাই দ্বীন ইসলামকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। সন্ধ্যায় পার্শ্ববর্তী মুমুরদিয়া বাজারের একটি চা স্টল থেকে দ্বীন ইসলাম ও আল আমিনকে এবং বাড়ি থেকে বোন নাজমা ও মা জমিনাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে।
কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হোসেনপুর সার্কেল সোনাহর আলী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
কটিয়াদী থানার ওসি এম,এ জলিল বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নিহতের ছোট ভাই দ্বীন ইসলাম জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে এ হত্যাকান্ড ঘটায় বলে স্বীকার করে। নিহতদের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।