ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার সর্বোচ্চ বিদ্যাপিট ডিগ্রি কলেজ অধ্যক্ষ ৩০ বছর চাকুরী শেষে গত (১ নভেম্বর) রোববার কর্মস্থল থেকে অবসরে যাওয়ায় ও নবাগত অধ্যক্ষের আগমন উপলক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়। ডিগ্রি কলেজ হলরুমে গর্ভনিং বডির সভাপতি উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মৌসুমি আফরিদার সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপাধ্যাক্ষ জামাল উদ্দীন, ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের সবেক সাংসদ অধ্যাপক ইয়াশিন আলী, গর্ভনিং বডির সদস্য সাবেক প্রধান শিক্ষক জয়নাল আবেদীন, দাতা সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান, প্রভাষক শাহাজান আলী, আশরাফ আলী। প্রভাষক প্রশান্ত বসাকের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন বিদায়ী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তাজুল ইসলাম ও নবাগত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সইদুল হক। ১৯৭২ সালে স্থাপিত রাণীশংকৈল ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ তাজুল ইসলাম ১৯৯০ সালে প্রভাষক হিসাবে বাংলা বিষয়ে চাকুরীতে যোগদান করেন। ছাত্র জীবনে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিষয়ে পড়ালেখা করা অবস্থায় বিশ্ব বিদ্যালয়ে বাম রাজনৈতিক দলের বিপ্লবী ছাত্র ইউনিয়নের কলেজ শাখার সভাপতি ছিলেন। সাংস্কৃতি সমকাল নাট্য চক্রের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, বৃহত্তম দিনাজপুর জেলা কমিটির ওয়ার্কস পাটির সদস্য। মূলত ১৯৭৮ সালে নিজ এলাকায় গরু চুরি রোধ করতে গিয়ে আন্দোলনে নেমেই রাজনৈতি শুরু।
রাজনীতিতে বর্তমানে তিনি ওয়ার্কাস পাটির জেলা সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং কেন্দ্রিয় নেতাদের সাথে রয়েছে তার নিবিড় সর্ম্পক। সাংস্কৃতিক অঙ্গনে রয়েছে ব্যপক অবদান ১৯৮৫ সালে উপজেলা শহর হতে দুটি ( উত্তর হাত ও এসময়) সাহিত্য পত্রিকা তিনি বের করেছেন। গণ শিল্পী সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা, বৈশাখি মেলার ২৫ বছরের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। প্রগতি ক্লাবের সদস্য, সম্প্রতি রাজশাহী বিশ্ব বিদ্যালয়ে বাংলা অ্যাকাডেমিক বিভাগে লোক সংস্কৃতি বই বের হলে ৬৪ জেলার মধ্যে ঠাকুরগাঁও জেলার তিনি সংগ্রহক ছিলেন। বর্তমানে নিজ গ্রাম রাঙ্গাটুঙ্গি এলাকায় নারির ক্ষমতানের জন্য তিনি রাঙ্গটুঙ্গি ইউনাইটেড প্রমিলা ফুটবল দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। যে দলের খেলোয়াররা জাতীয় পর্যায় সহ বিভিন্ন দেশে খেলছেন। রাণীশংকৈল ডিগ্রি কলেজ প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে অধ্যক্ষ তাজুল ইসলামের রয়েছে ব্যপক অবদান ১৯৮৫ সালের ৯ জুন কলেজের জমি সংক্রান্ত বিরোধে ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা হলে তাজুল ইসলাম ছিলেন এজাহার ভূক্ত ২নং আসামী, সে সময় তিনি জেল হাজতেও ছিলেন। ডিগ্রি কলেজে প্রভাষক হিসাবে চাকুরী করার সময় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে সফলতার সাথে ২বার নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১২ সালে জাতীয় পাটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের সাংসদ হাফিজ উদ্দীন আহম্মেদ গর্ভনিং বডির সভাপতি থাকাকালিন তিনি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পান। এরপর থেকে শুরু হয় কলেজের দৃশ্যমান উন্নয়ন নতুন ভাবে তৈরি হয় শহীদ মিনার। ক্যম্পাসে ফুটপাতে রাস্তা, ৬টি বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু, বঙ্গবন্ধুর মুরাল, ৩টি ভবনের অবকাঠামো উন্নয়ন।
এ প্রসঙ্গে প্রভাষক মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক বলেন, আমার জানা মতে তাজুল স্যার একজন ভাল মনের মানুষ ছিলেন, ওঁর দক্ষতা ও পারদর্শিতার কারণে কলেজের যেমন উন্নয়ন হয়েছে তেমনি আমরা শিক্ষকরাও ছিলাম নিয়মের মধ্যে। ছাত্র ও শিক্ষকদের সাথে তিনি সব সময় হাসি মুখে কথা বলতেন।
উপাধ্যক্ষ জামাল উদ্দীন বলেন, কলেজের দূর্দিনে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব নিয়ে তিনি অনেক উন্নয়ন করেছেন। শিক্ষক বেতনের টাকা কিংবা কলেজের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য অনেক সময় তিনি ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা দিয়েছেন। এছাড়াও তিনি শিক্ষক ও কর্মচারীদের সাথে সব সময় ভাল আচরণ করতেন। তবে বিধি মোতাবেক আবার ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সইদুল ইসলাম কে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, ২ নভেম্বর তিনি যোগদান করেছেন।
উল্লেখ্য সংম্বর্ধনা অনূষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলেজের শিক্ষক, কর্মচারী, সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীরা।