এরকম অদ্ভুত একটা ধারণা আজকাল অনেকের মনে বাসা বাঁধছে। ক্রমাগত জটিল থেকে জটিলতর পৃথিবীর আর তার পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে গিয়ে প্রকৃতির নিজস্ব নিয়মে আজকাল বাচ্চারা আগের দিনের চাইতে অপেক্ষাকৃত কম বয়সেই অনেক কিছু জেনে যাচ্ছে, শিখে নিচ্ছে।
বিশেষ করে শহরাঞ্চলের উচ্চমধ্যবিত্ত পরিবারগুলোতে মাত্র একটা বা দুটো বাচ্চা থাকায় এদের স্বাস্থ্য-প্রতিপালন আর শিক্ষা আগের অনেক বাচ্চা থাকা পরিবারের বাচ্চাদের চাইতে নজর আর গুরুত্ব পাচ্ছে অনেক অনেক বেশি। আর এটাও ঘটনা যে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা আর চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধা গ্রামাঞ্চলের তুলনায় বেশি থাকায় শহরে মেয়েদের সিজার হচ্ছে বেশি। এ কথা বললে ভুল হবে না যে, পরিবেশের আর প্রতিযোগিতার সঙ্গে বুঝতে আজকাল শহরে বাচ্চাদের বড় হতে হচ্ছে আগের চাইতে অনেক বেশি দ্রুতলয়ে। বাচ্চার বুদ্ধি বা বিকাশ কিছুটা নির্ভর করে বংশগতির ওপর। বাকিটা বড় হবার পরিবেশ আর সুযোগ-সুবিধার ওপর। স্বাভাবিক প্রসব আর সিজার করা বাচ্চাদের বুদ্ধি বা বিকাশ নিয়ে কোনো তুলনামূলক বিজ্ঞানসম্মত গবেষণা এ দেশে হয়নি। তবে বাচ্চার বুদ্ধির সঙ্গে তার কোনও সম্পর্ক থাকবার সম্ভাবনা নেই বা থাকতে পারে না-এ কথা নির্দ্ধিধায় বলা যায়।
হাঁপানি সমস্যা ও প্রতিকার
আপনার কি শ্বাস ছাড়তে কষ্ট হয়? আপনি কি বেগুন, পাকা কলা বা হাঁসের ডিম খেলে কাশি ও শ্বাসকষ্ট শুরু হয়? বিভিন্ন ধরনের এলার্জেন যেমন-ধূলা-বালি-ধোঁয়া, ফুলের রেণু, কলকারখানার নির্গত বিষাক্ত গ্যাস, গাড়ীর ধোঁয়া, বিশেষ কিছু খাবার, ওষুধ ইত্যাদি এলার্জি ও এজমার সৃষ্টি করে। যে কোন সুস্থ্য ব্যক্তিরও এলার্জি হতে পারে। সামান্য উপসর্গ হতে শুরু করে মারাÍক উপসর্গ সৃষ্টি করতে পারে, এমনকি হঠাৎ তীব্র আকারে আক্রমণ করতে পারে। মোট কথা ধূলাবালি, ধোঁয়া, গাড়ীর বিষাক্ত গ্যাস, কলকারখানার সৃৃষ্ট পদার্থ, বৃষ্টিতে ভেজা, শীতের কুয়াশা, ফুলের রেণু, বিশেষ কয়েকটি খাবার যেমন-চিংড়ি, ইলিশ, বোয়াল, গজার, গরুর মাংস, হাঁসের ডিম, পাকা কলা, আনারস, নারিকেল, কসমেটিকস ও অগণিত জানা-অজানা জিনিস আমাদের শরীরে কাশি, শ্বাকষ্ট এলাজি ও এজমার সৃষ্টি করতে পারে। হাঁপানিতে আক্রান্ত হওয়ার সময় শ্বাসনালীতে নিন্মোক্ত পরিবর্তনগুলো দেখা যায় ঃ
* শ্বাসনালী লাল ও ফুলে যাওয়ার ফলে সরু হয়।
* শ্বাসনালীর চারপাশের মাংসপেশীসমূহ সংকুচিত হয়ে শ্বাসনালীকে আরো সরু করে দেয়।
* শ্বাসনালীতে অধিক পরিমাণ শ্লেষা তৈরী হয়ে শ্বাসনালীতে বায়ুপ্রবাহ আংশিকভাবে বন্ধ করে দেয়।
চিকিৎসা: হাঁপানি একটি দীর্ঘ মেয়াদী রোগ। সঠিক চিকিৎসা এবং ওষুধ ব্যবহারের মাধ্যমে হাঁপানি সম্পর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। এছাড়াও সব হাঁপানি রোগীকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর প্রতি নজর রাখতে হবে
* ধূমপান এবং তামাকের ধোঁয়ার সংস্পর্শ পরিহার করতে হবে
* ঠান্ডা বাতাস হাঁপানির তীব্রতা বাড়িয়ে দেয়। এই সময় ওষুধের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে হবে।
* ব্যায়াম এবং শারীরিক পরিশ্রম নিরুৎসাহিত করা উচিত নয়। ব্যায়াম শরীর ভাল রাখে এবং উচ্চ রক্তচাপ ও অন্যান্য জটিল রোগ থেকে শরীরকে রক্ষা করে।
* বাড়ীর পরিবেশ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে এবং বাড়ীতে অবাধ বিশুদ্ধ বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
হাঁপানি প্রতিরোধক:দু’প্রকারের ওষুধ হাঁপানি প্রতিরোধক হিসাবে কাজ করে:
* এন্টি ইনফ্লামেটরী ওষুধসমূহ: এইসব ওষুধ শ্বাসনালীর প্রদাহ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে হাঁপানি প্রতিরোধ করে।
* ব্রঙ্কোডাইলেটর বা শ্বাসনালী প্রসারক: এইসব ওষধুসমূহ দ্রুত শ্বাসনালীকে প্রসারিত করে হাঁপানির তীব্রতা প্রতিরোধ করে।
হাঁপানি উপশম কারক:ব্রঙ্কোডাইলেটর সমূহ উপশম কারক হিসেবে কাজ করে। ব্রঙ্কোডাইলেটর সমূহ শ্বাসনালীকে দ্রুত প্রসারিত করে ফলে ফুসফুসে সহজে বায়ু চলাচল করতে পারে এবং এর মাধ্যমে হাঁপানি আক্রান্ত রোগীর উপসর্গসমূহ দ্রুত উপশম হয়।
দু’ধরণের ব্রঙ্কোডাইলেটর বা শ্বাসনালী প্রসারক আছে, যেমন:
* ক্ষণস্থায়ী ব্রঙ্কোডাইলেটর-যেমন ঃ সালবিউটামল।
* দীর্ঘস্থায়ী ব্রঙ্কোডাইলেটর-যেমন ঃ ব্যামবিউটামল।
রাত্রিকালীন হাঁপানিতে মোডিফাইড রিলিজড থিওফাইলিনের বিকল্প হিসাবে ব্যামবিউটামল ব্যবহার করে ভাল সুফল পাওয়া যায়।
হাঁপানির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
* অনেক রোগীই হাঁপানি চিকিৎসার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কথা বলে কিন্তু অনিয়ন্ত্রিত হাঁপানি আরো ভয়াবহ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে।
* সঠিক চিকিৎসা ও ওষুধ ব্যবহারের মাধ্যমে হাঁপানি নিয়ন্ত্রণ না করলে বয়স বাড়ার সাথে সাথে ফুসফুসের কর্মক্ষমতা হ্রাস পাবে এবং অকেজো হবে।
* শিশুদের হাঁপানির ঠিকমত চিকিৎসা না করালে বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এবং মায়েদের বেলায় গর্ভস্থ ভ্রণের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়।
হাঁপানি চিকিৎসার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
* করটিকোস্টেরয়েডের ব্যবহার ওরাল ক্যানডিয়োসিস সৃষ্টি করতে পারে। যেসব রোগী ইনহেলারের মাধ্যমে করটিকোস্টেরয়েড ব্যবহার করে তাদের অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধ করার জন্য নিয়মিত ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট (যেমন ঃ অসটোক্যাল/অসটোক্যাল জেধার) গ্রহণ করা উচিত।
* থিওফাইলিন এবং এ জাতীয় ওষুধসমূহ ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায় এবং রোগীকে অবসন্ন করে দেয় বলে থিয়োফাইলিনের পরিবর্তে দীর্ঘ মেয়াদী ব্রঙ্কোডাইলেটর-যেমন ঃ ব্যামবিউটামল (ডাইলেটর) ব্যবহার করা উচিত।