মশক নিধনের বিভিন্ন রকম কর্মসূচি থাকা সত্ত্বেও রাজধানীতে কিউলেক্স মশার উপদ্রব অতি মাত্রায় বেড়েছে। দিন-রাত মশার কামড়ে অতিষ্ঠ নগরবাসী। জনমনে এডিস মশার আতঙ্ক কাজ করছে, এজন্য যে কোনো মশার বৃদ্ধিতেই মানুষের আতঙ্ক বেড়ে যায়। তাই কর্তৃপক্ষের উচিত সব ধরনের মশা নিয়ন্ত্রণেই কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া। কিউলেক্স মশার প্রজননস্থল খাল ও নর্দমা। এসব পরিষ্কার করা বা সেখানে ওষুধ ছিটানো নাগরিকদের পক্ষে সম্ভব নয়। এজন্য এ মশার প্রজনন বেড়ে যাওয়াকে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার ব্যর্থতা বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন চলতি বছরে করোনাভাইরাস মোকাবিলা এবং ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নগরবাসীর পাশে যেভাবে ছিল, কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণে তাদের তেমন তৎপরতা লক্ষ করা যায়নি। জানা গেছে, রাজধানীর সর্বত্রই এখন কিউলেক্স মশার মাত্রাতিরিক্ত উপদ্রব। অভিজাত এলাকার বাসিন্দারাও মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ। বছরের ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত কিউলেক্স মশার প্রজনন মৌসুম। এ বিষয়ে প্রতি বছরের এ সময় প্রায় একই চিত্র লক্ষ করা যায়। এ মশার প্রজননস্থলগুলো সঠিকভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে এসব মশার উপদ্রব কমিয়ে আনা সম্ভব।
যে কোনো সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব অনেক। ইতোমধ্যে কোনো কোনো সিটি করপোরেশনের পরিধিও বেড়েছে। এতে বেড়েছে দায়িত্বের পরিধিও। কোনো এলাকায় মানুষ মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ হলে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের ভালো কাজের দৃষ্টান্তগুলো তাদের কাছে ম্লান হয়ে যায়। রাজধানীজুড়ে এডিস মশার ব্যাপক বিস্তারের কারণে দেশবাসী আতঙ্কিত হয়েছিল, এটি বেশিদিন আগের কথা নয়। তখন কর্তৃপক্ষ ইতিবাচক অনেক উদ্যোগ নিয়েছিল এবং মশক নিধনে আগামীতে কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হবে, সে বিষয়ে পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছিল। এতে মানুষ আশাবাদী হয়েছিল- আগামীতে কোনো ধরনের মশার উপদ্রব নিয়ে তাদের আর উদ্বিগ্ন হতে হবে না। কিন্তু তাদের সেই আশা পূরণ হয়নি। মশক নিধনে রাজধানীর অভিজাত এলাকাগুলোতে যে রকম তৎপরতা লক্ষ করা যাচ্ছে, অন্য এলাকায়, বিশেষ করে সিটি করপোরেশনের নতুন অন্তর্ভুক্ত এলাকাগুলোতে তেমন তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। মশার ওষুধ ছিটানোর ব্যাপারে সব এলাকায় সমান দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন। যেহেতু মশা নানা রোগের ভাইরাস ছড়ায়, সেহেতু মশার কামড় থেকে সুরক্ষাই সেসব রোগ থেকে দূরে থাকার সবচেয়ে ভালো উপায়। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ আরও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবে এটাই প্রত্যাশা।