অনেক বেহুঁশদের হাবভাব, ধরণ ধারণ, আচার আচরণ, কথাবার্তা, ক্ষমতার বাহাদুরী দেখে মনে হয়, দেশের মানুষ যেন তুচ্ছ তাচ্ছিল্য হয়ে সমুদ্রের ভাসমান ফেনার ((Flooting Ribs) ) মতো ভাসছে। যে কারণেই হয়তোবা সম্প্রতি ভার্চুয়াল এক সভায় নবনিযুক্ত কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলে থাকেন, মানুষকে আপনারা তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করবেন না। সাধারণ মানুষের ঘামের ভেজা শ্রমের অর্থ দিয়েই আপনাদের বেতন হয়।
যেখানেই যাওয়া যায় যেন গড্ডালিকা প্রবাহ, মিথ্যার ছড়াছড়ি, আস্ফালন, হুংকার ও ক্ষমতার বাহাদুরী। যেন হানাদার বাহিনীর মতো প্রেতাত্মা, চামচা, চাটুকারীতা ও মিথ্যার জয়ধ্বনি। তাছাড়া অনেকেই সত্য কথা বলতে ভুলে গেলেও দেশের কিছু বিজ্ঞজন, সচেতন ব্যক্তি, কিছু রাজনীতিক, গণমাধ্যম কর্মী, প্রথিতযশা সাংবাদিক, কলামিষ্ট ও আরও অনেকেই এত কিছুর পরও সত্য ঘটনা লেখতে, আলোকপাত করতেও দ্বিধা সংকোচবোধ করে না। তাদের মধ্যে বদরুদ্দীন ওমর, ফরহাদ মাজহার, সাবেক সচিব আব্দুল লতিফ মন্ডল, অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, অধ্যাপক ইয়াহইয়া, বিগ্রেডিয়ার (অবঃ) এ.কে.এম শামছুদ্দীন, তারেক শামছুর রহমানসহ আরও অনেকের নাম প্রনিধান যোগ্য। এছাড়া অধ্যাপক আসিফ নজরুল নিউ এইজের সম্পাদক নুরুল কবীর, টিআইবির শাহদীন মালিক, সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, সাবেক সচিব ও উপদেষ্টা আকবর আলী খান, ব্যারিষ্টার মইনুল হোসেন, সাবেক উপদেষ্টা হাফিজ উদ্দিন খান, সাবেক মন্ত্রী পরিষদ সচিব এইচ.টি ইমাম, নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারসহ আরও অনেকের বিভিন্ন ফোরামে বক্তৃতা ও টকশো বাস্তবিকই গ্রহণযোগ্য হিসেবে মানুষের কাছে বিবেচিত ও গ্রহণযোগ্যতারই নামান্তর। তদোপরি দৈনিক প্রথম আলো, দৈনিক যুগান্তর, দৈনিক নয়াদিগন্ত, ডেইলী স্টার, দৈনিক মুক্তখবর, দৈনিক জনতা, দৈনিক নওরোজ, দৈনিক কুমিল্লার সমাজকন্ঠসহ দেশের অসংখ্য দৈনিক, সাপ্তাহিক, পাক্ষিক, মাসিক পত্রিকায় নিরপেক্ষভাবে প্রতিনিয়ত সমাজের হালচাল, বেসামাল দুর্নীতি, অসদোপায় ও চুরিচামারি যেভাবে সাহসের সাথে উপস্থাপন করা হয় তার জন্য সাধুবাদ ও প্রশংসা না করার উপায় নেই।
এ প্রসঙ্গে প্রথিত যশা সাংবাদিক, লেখক, কলামিস্ট পরম শ্রদ্ধাভাজন মরহুম এ.বি.এম মুসা প্রায় সময়ই বলতেন, সত্য তোলে ধরবা, তাতে কোনো কার্পন্য ও দ্বিধাসংকোচ বোধ করবে না। সত্য লেখতে বা বলতে যদি গায়ে আঁচড় লেগে থাকে তাতেও থমকে যেও না। আমাদের প্রিয় নবী ও আল্লাহর হাবীব সত্য ও আল্লাহর নির্দেশিত ধর্ম ইসলাম প্রচার করতে কখনও থমকে যান নি। তাতে তিনি বিধর্মীদের সাথে অনেক যুদ্ধে সম্মুখীন হয়েছেন, সীমাহীন নির্যাতিত ও কষ্ট করেছেন। তাতেও তিনি ভয়ভীতি ও অপপ্রচারে থেমে যাননি। এমনকি বিধর্মীরা উনাকে (রাসুল (সাঃ)) যাদুকর বলে অপবাদ দিয়েছে। অনেক সময় তিনি যুদ্ধে পরাজিত হয়েছেন। যুদ্ধ ক্ষেত্রে অনেক সাহাবা আহত ও শহীদ হয়েছেন। তারপরও সত্য প্রচারে বিন্দুমাত্র থেমে যাননি। তিনি সর্বশক্তিমান আল্লাহর আদেশ ও নির্দেশে এগিয়ে গেছেন। কোনো বাধা ও অপপ্রচারে তাঁহাকে কেহই দমাতে পারেনি। আবাবিল পাখিদের কংকর আব্রাহার বিশাল হস্তী বাহিনীকে ক্ষতবিক্ষত ও ধ্বংস করে দেয়। কথিত আছে এই কংকর যেখানে
পড়েছিল বিশাল গর্ত হয়ে যায়। প্রতিটি কংকরের ওজন ছিল ১ টনেরও (সাড়ে সাতাশ মন) উপরে। বদরের যুদ্ধে মুষ্টিমেয় সাহাবীদের নিয়ে রাসূল (সাঃ) আল্লাহর কুদরতে বিধর্মীদের বিশাল বাহিনীকে পর্যুদস্থ করে দেয়। এমন অসংখ্য উপমা, উদাহরণ ও দৃষ্টান্তের শেষ নেই।
ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক ও পাকহানাদারদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম, আন্দোলন করে যারা তদানীন্তন ভারতবর্ষের স্বাধীনতা এনেছে এবং ৭১ সালে যুদ্ধ করে পাকিস্তানের হানাদারদের কাছ থেকে যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা এনেছে তাও ভুলে যাওয়ার নহে। ব্রিটিশ তাড়ানো আন্দোলনে যেমন মাওলানা মোহাম্মদ আলী, শওকত আলী ভ্রাতৃদ্বয়, সূর্য সেন, প্রীতিলতা, ক্ষুদিরাম, স্যার সৈয়দ আহমদ ও পাকিস্তান অর্জনে আল্লামা ইকবাল, সৈয়দ আমীর আলী, নবাব স্যার সলিমুল্লাহ, কায়েদ-ই-আজম, মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, মওলানা ভাসানীসহ আরও অনেকের অবদান যেমন ভুলে যাওয়ার নয়, তেমনি ইত্তেফাকের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া, জহুর আহমদ চৌধুরী, দৈনিক আজাদের মওলানা আকরাম খাঁসহ আরও অনেক সাংবাদিক ও দেশবরেণ্য ব্যক্তিদের ত্যাগ, নিষ্ঠা, কষ্ট, নিপিড়ন আজও কোনো মতেই ভুলে যাওয়ার নহে।
তারপর বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও অর্জনে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেরে বাংলা এ.কে. ফজলুল হক, মওলানা ভাসানী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযোদ্ধা জেনারেল এম.এ.জি ওসমানী, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানসহ অগনিত দেশপ্রেমিকদের অবদানকে কোনো মতেই স্মরণ না করার কথা নয়। এর মধ্যে আরও কিছু ঘটনা উল্লেখ না করলেই নহে। তা হচ্ছে হযরত শাহজালাল (রঃ), হযরত শাহ পরান (রঃ), হযরত শাহ সুলতান (রঃ), হযরত বায়েজীদ বোস্তামী (রঃ), হযরত খান জাহান আলী (রঃ), হযরত মইনুদ্দীন চিশতি (রঃ) সহ ৩৬০ জন আউলিয়া নিয়ে যখন হযরত শাহজালাল (রঃ) সুদূর ইয়েমেন থেকে পাক ভারত উপমহাদেশে আগমন করেন তখন সত্য ধর্ম ইসলাম প্রচারে বিধর্মীদের নিকট প্রচন্ড বাধার সম্মুখীন হন। তারপরও সত্য ধর্ম ইসলাম প্রচার ও আল্লাহর বানী কোরআন শিক্ষা দিতে কুন্ঠিত বা পিছপা হয়নি। কথিত আছে হযরত শাহজালাল (রঃ) যখন সিলেটে ইসলাম ধর্ম ও কোরআনের বাণী প্রচারে নামেন, তখন সিলেটের ক্ষমতাশালী ও দুর্দান্ত প্রতাপশালী রাজা গৌর গোবিন্দ তাঁহাকে পদে পদে সীমাহীন বাধা ও অত্যাচারে লিপ্ত হয়। এরপরও তিনি সত্য ধর্ম ইসলাম ও কোরআনের বাণী প্রচার করতে দমে যাননি। কথিত আছে অত্যাচারী ও বেহুঁশ রাজা গৌর গোবিন্দ তাহার স্ত্রী পুত্র পরিজন নিয়ে রাজপ্রসাদ ছেড়ে পালিয়ে বাঁচে।
যাক, এদিকে আর না এগিয়ে এ লেখার শিরোনামের দিকে দৃষ্টি নিবন্ধ করা হলো। ০৬/০১/২১ ইং বুধবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই ও আওয়ামী লীগ নেতা কাদের মির্জা সম্পর্কিত। তাতে দৈনিক দেশ রূপান্তরে “ওবায়দুল কাদেরের ভাইয়ের বক্তব্যে আওয়ামী লীগে অস্বস্থী” শিরোনামে ০৬/০১/২০২১ ইং একটি সংবাদ ছাপা হয়েছে। যা অনেকের মতো আমারও দৃষ্টিতে এসেছে। অর্থাৎ এ ব্যাপারে কিছু দৃষ্টিপাত করার আগেই গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদটির আলোকে বলব, ইহা কাদের মির্জার ব্যক্তিগত মতামত। যাতে বেহুঁশদের হুঁশ ও সচেতনতাই স্থান পেয়েছে। এ জন্য তাহাকে ভাগারে ফেলে দেয়ার মতো তেমন কিছু হয়নি বলে কেহ মন্তব্য করলে মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাওয়ার মতো কিছু নয়। বরং এ থেকে অনেক কিছু বুঝা, জানা ও উপলব্ধি করার মতো অনেক কিছু উপাখ্যান একেবারে না থাকার কথা নয়। তদোপরি গণতন্ত্র, বাক ও ব্যক্তির স্বাধীনতাকে হরণ করার সুযোগ একেবারেই পরাহত। যদিও অনেক সময় সত্য কথা বলে তও লেখতে গিয়ে অনেক সময় অনেক গণমাধ্যম কর্মীসহ অনেকেরই নিপতিত হওয়ার অসংখ্য ঘটনার উদাহরণ ও দৃষ্টান্ত কম নহে। এই ঘটনায় কাদের মির্জা দল থেকে বহিষ্কার হবেন কী হবেন না তা না জানলেও এর কথা বলা যায়, তার উক্তি বাস্তবিকই বেহুঁশদের হুঁশ ও দলের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির জাগ্রত উপাখ্যান বলা চলে।
সম্প্রতি কাদের মির্জা নোয়াখালীর বসুরহাটে এক সমাবেশে আমলা, দলের বিভিন্ন নেতার সমালোচনা ও ভোটের সমালোচনা করে বক্তব্য রাখেন। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে। বিভিন্ন গণমাধ্যম এ নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করে থাকে। যদিও কাদের মির্জা ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই না হলে এমন আলোচনা, সমালোচনা হত না। তিনি বৃহত্তর নোয়াখালীর দুই এমপির বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে কথা বলেছেন, ওই দুই এমপি হচ্ছেন একরামুল করিম চৌধুরী ও নিজামুদ্দিন হাজারী। ৩১ ডিসেম্বর বসুরহাট পৌরসভা চত্ত্বরে নির্বাচনের ইশতেহার ঘোষণাকালে তিনি বলেছেন, বৃহত্তর নোয়াখালীতে কিছু চামচা, নেতা আছেন যারা বলেন অমুক নেতা, তমুক নেতার নেতৃত্বে বিএনপির দূর্গ ভেঙেছে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বৃহত্তর নোয়াখালীতে ৩/৪টা আসন ছাড়া বাকি আমাদের এমপিরা দরজা খুঁজে পাবে না পালানোর জন্য। এটাই হল সত্য কথা। সত্য কথা বলতে হবে এবং আমি সাহস করে সত্য কথা বলছি।
আবদুল কাদের মির্জার এ বক্তব্যের ভিডিও, ফেসবুক ও ইউটিউবে তা ভাইরাল হয়েছে। সেখানে নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষায় দলীয় কিছু বেহুঁশ নেতাকে তিনি ইঙ্গিত করে বলেছেন, নোয়াখালীর মানুষজন বলে, শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা বেড়েছে। এ কথা সত্য। কিন্তু নোয়াখালীর আওয়ামী লীগ নেতাদের আদৌ জনপ্রিয়তা বাড়েনি। আপনারা প্রতিদিন ভোট কমান। টাকা দিয়ে বড় জনসভা করা, মিছিল করা কোনো ব্যাপার নয়। টাকা দিলে, গাড়ী দিলে আমিও অনেক লোক সমাবেশ করতে পারব, না হয় রাজনীতি ছেড়ে দিব। ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় দ্বিতীয় ধাপের পৌর নির্বাচনে আবদুল কাদের মির্জা নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ
উপজেলাধীন বসুরহাট পৌরসভার মেয়র পদে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন। কাদের মির্জা তার বক্তৃতায় আরও বলেন, নোয়াখালীর রাজনীতি খুবই কষ্টের। এই বৃহত্তর নোয়াখালীতে আমাদের নেতা ওবায়দুল কাদের, মওদুদ সাহেব (বিএনপির মওদুদ আহমদ), আবু নাছের সাহেব (জামায়াতের) এ তিনজন ছড়া সমমর্যাদার ও গুরুত্বপূর্ণ আর কেউ নেই। কোনো নেতা আজও সৃষ্টি হয়নি। এখনতো ওবায়দুল কাদের, মওদুদ আহমদের নাম বিক্রী করি। তারা তিনজনতো অসুস্থ। তারা তিনজন মারা গেলে আর কার নাম বিক্রী করবেন। কেউ নেই। (ক) কারও নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, প্রকাশ্য দিবালোকে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করেন তারা হচ্ছেন নেতা (খ) পুলিশের ও প্রাথমিক শিক্ষকদের চাকরি দিয়ে যারা পাঁচ লাখ টাকা নেন তারা হচ্ছেন নেতা (গ) টেন্ডার বাজি করে যারা কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেন তারা হচ্ছেন নেতা (ঘ) গরীব পিয়নের চাকরি দিয়ে ৩ লাখ টাকা যারা নেন তারা হচ্ছেন নেতা।
জেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির সমালোচনা করে তাকে ভাইরাল হওয়া বক্তৃতায় বলতে শোনা যায়, সাবেক সেনাপ্রধান মইন-উ-আহমদের ছোট ভাই মিনহাজ জাবেদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোন কোন নেতা ১/১১ এর সময়ে নিজেদের রক্ষা করেছেন। সেই জাবেদ এবং হাওয়া ভবনের আতাউর রহমান মানিক আজ জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি। এছাড়া ৭ জানুয়ারী আবু নাছের চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক নির্বাচনী পথসভায় বলেছেন, এদেশে কী ভোট ডাকাতি বন্ধ অইত নয়। অইবো অইবো। গত নির্বাচনে শেখ হাসিনা চাইছে ফল। আংগো দেশে কিছু দুর্নীতিবাজ আমলা আছে, কিছু দুর্নীতিবাজ নেতা আছে হেগুনে শেখ হাসিনাকে গাছ দিয়া লাইছে। চাইছে ফল গাছসহ দিয়া লাইছে হেগুনে। প্রশাসনের দুর্নীতিবাজ আমলাদের বিচার হয় না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দাবী জানাচ্ছি এদের বিচার করুন। প্রশাসনের গোমর ফাঁক করে দিয়েছি তারপরও বলব, দেশে নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক।
আজকাল সচেতনতার অভাব ও বেহুঁশদের হুঁশ না করিয়ে অনেক সময় চামচা, চাটুকারীতা, তোয়াজ ও তোষামোদ করার প্রবনতাকে উৎসাহিত ও অনুপ্রানিত করার কারণেই সমাজে অস্থিরতা, অপকর্ম, দুর্নীতি, নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনা সরকারের এত কিছু করার পরও বেসামাল অবস্থা ধারণ করে চলছে। যদি বেহুঁশদের হুঁশ, সচেতনতা ও গণতন্ত্র চর্চার যদি ব্যাপক সুযোগ থাকত ও বাস্তবতার আলোকে তোলে ধরা হত তবে রাজনৈতিক হিংসা, বিদ্বেষ যেমনি কমে যেত তেমনি মানুষের অনেক সমস্যার লাঘব ও সমাধান না হওয়ার কথা নয়।
উদার গণতন্ত্রের সঞ্চালনে বেহুঁশদের হুঁশ ও সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে দেশের মানুষকে আরও সামনে এগিয়ে নেয়াটাই মুখ্যম হওয়া উচিত। তদোপরি বেহুঁশদের হুঁশ ও সচেতনতাই আশার আলো। কারও ক্ষমতাই স্থায়ী নহে। তবে সুশাসনের ইতিহাস চিরভাস্বর, চির জাগরুক, অম্লান, অব্যয় ও অক্ষয়। অপশাসন কারও কাম্য নহে। দেশ সামনে এগিয়ে চলুক, পরস্পর রাজনৈতিক বৈরীতার অবসান ও গণতন্ত্রের পথযাত্রা সামনে এগিয়ে যাক। হিংসা, বিদ্বেষ, অপরিনামদর্শীতা, বৈরীতা ও বিভেদ কারও জন্যেই মঙ্গল বয়ে আনেনা। ব্রিটিশ ও পাকিস্তানিদের ১৯৬ ও ২৪ বছরের শোষন, নির্যাতন, বঞ্চনা ও স্বাধীনতা প্রাপ্তির ইতিহাস আদৌ ভুলে যাওয়ার নহে। পরিশেষে বলব, কাদের মির্জার বক্তব্যের প্রেক্ষাপটে দলীয় কী সিদ্ধান্ত হবে জানি না। তবে তার সাহসী বক্তব্যের জন্য সাধুবাদ না জানিয়ে মন্তব্য করার সুযোগ ভেরী ডিফিকাল্ট। বেহুঁশদের হুঁশ, সচেতনতা ও বিবেককে জাগ্রত করার উচ্ছাস নতুন কিছু নহে। আইয়্যমে জাহেলিয়ার যুগ থেকে শুরু করে আজও বেহুঁশদের হুঁশ, সচেতনতা ও জাগ্রত বিবেককে নিয়ে রয়েছে আল্লাহ রাব্বুল আল আমীনের নির্দেশনা, রাসুল (সাঃ) এর ত্যাগ, মনিষীদের অবদান, সাংবাদিক ও রাজনীতিকদের দিকদর্শন। এত কিছুর পরেও যদি বেহুঁশদের হুঁশ ও সচেতনতা ফিরে না আসে, তবে দুঃখ, বেদনা ও যাতনা বলার জায়গাই বা কোথায়। তদোপরি কাদের মির্জার বিষের বাঁশি ও ভাঙ্গা ঢোল ১৬ জানুয়ারি পৌর নির্বাচনের পর কোথায় গিয়ে ঠাঁই হয় ইহাই দেখার বিষয়। এমনিভাবে সিলেটের ছক্কা ছয়পুর ও এরশাদ আমলে আবির্ভূত হয়েছিলেন। অনেকে কাদের মির্জাকে পাগল ও উম্মদ বললেও তিনি ক্ষমতার পাগল না ভাবের পাগল তাও দেখার বিষয়।
এ.কে.এম শামছুল হক রেনু
লেখক কলামিষ্ট