নওগাঁর মান্দা উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। দিনে সূর্যের দেখা মিললেও তেমন উত্তাপ ছড়াতে পারছে না। উত্তরের হিমেল হাওয়া আর হাড়কাঁপানো ঠান্ডায় স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। সোমবার (১৮ জানুয়ারি) এ জেলায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে তীব্র শীতে হতদরিদ্র মানুষকে একটু উষ্ণতার পরশ দিতে পাশে দাঁড়িয়েছেন মান্দা উপজেলা প্রশাসন। শীত উপেক্ষা করে এলাকাভিত্তিক জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে প্রত্যেক রাতে উপজেলার বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় ঘুরে ঘুরে কম্বল বিতরণ করছেন ইউএনও আবদুল হালিম, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রেজাউল করিমসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাগণ। ইতোমধ্যে ৮ সহস্রাধীক মানুষের মাঝে এসব শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। পর্যায়ক্রমে আরও কম্বল বিতরণ করা হবে বলেও জানিয়েছে সংশ্লিস্ট সুত্র।
নওগাঁর বদলগাছি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা ফেরদৌস মাহমুদ জানান, গত শুক্রবার (১৫ জানুয়ারি) এ জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি শীত মৌসুমে এটিই দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড। তিন-চার দিন ধরে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান করে যাওয়ায় তীব্র শীত অনুভুত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ঘন কুয়াশার সঙ্গে উত্তরের হিমেল বাতাস প্রবাহিত হওয়ায় এ জেলার তাপমাত্রার পারদ নিম্নমুখী হতে শুরু করে। এ অবস্থা আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন তিনি।
আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সূত্র জানায়, দেশে ২ থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে অতি শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকলে বলা হয়ে থাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি হলে মাঝারি এবং ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকলে বলা হয় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ।
এদিকে মান্দা উপজেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকায় জনগণের চলাচল স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কমে গেছে। দিনের আলো দেখা গেলেও তেমন উত্তাপ ছড়াতে না পারায় জবুথবু হয়ে পড়েছেন মানুষ। এতে করে বেকায়দায় পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ। ঠান্ডার কারণে তারা মাঠে কামলা দিতে পারছে না। অন্যদিকে যাত্রী কমে যাওয়ায় আয়-রোজগার কমে গেছে পরিবহণ শ্রমিকদের।
এ প্রসঙ্গে মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল হালিম বলেন, শীত উপক্ষো করে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৮ হাজার ১৪০ জনকে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসব কম্বল দেয়া হয়েছে। চলতি শীত মৌসুমে শীতবস্ত্র বিতরণ অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।