অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত স্বাস্থ্য অধিদফতরের গাড়িচালক আবদুল মালেককে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার দুদক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। জানা গেছে, সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত মালেককে কেরানীগঞ্জের জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। দুদকের সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধানী কর্মকর্তা সৈয়দ নজরুল ইসলাম তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর ভোরে র্যাব-১ এর একটি দল তুরাগ থানার কামারপাড়ার বামনেরটেক এলাকার বাসা থেকে মালেককে গ্রেফতার করে। এ সময় তার কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগজিন, পাঁচ রাউন্ড গুলি, দেড় লাখ বাংলাদেশি জালনোট, একটি ল্যাপটপ ও মোবাইল জব্দ করা হয়। র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) জানিয়েছে, অবৈধ অস্ত্র, জালনোটের ব্যবসা ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকা-ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন মালেক। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী ড্রাইভার মালেকের ঢাকার বিভিন্ন স্থানে একাধিক বিলাসবহুল বাড়ি, গাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে বলে জানতে পেরেছে র্যাব। জাল টাকার ব্যবসা ছাড়াও তিনি এলাকায় চাঁদাবাজিতে জড়িত ছিলেন। শুধু তাই নয়, গ্রেফতারের পর বিভিন্ন ব্যাংকে নামে-বেনামে তার বিপুল পরিমাণ অর্থ গচ্ছিত রয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব। এদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, গাড়িচালক মালেক দীর্ঘদিন ধরে অধিদফতরের বিভিন্ন বিষয় নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন। বিশেষ করে অধিদফতরের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগ-বদলি বাণিজ্য তার প্রধান কাজ। কোনো কর্মকর্তা যদি মালেকের সুপারিশ না শোনেন তাহলে তাকে ঢাকার বাইরে বদলি করাসহ শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনা ঘটিয়েছেন একাধিকবার। কর্মকর্তারা লোকলজ্জার ভয়ে এসব বিষয় কখনও প্রকাশ করেননি। নিজে অধিদফতরের একজন গাড়িচালক হয়েও মালেক একটি পাজেরো জিপ ব্যবহার করেন। এ ছাড়া স্বাস্থ্য অধিদফতরের ক্যান্টিন তিনি পরিচালনা করেন। তার রয়েছে তেল চুরির সিন্ডিকেট। স্বাস্থ্য অধিদফতরের যত গাড়ির চালক তেল চুরি করে, তার একটি অংশ তাকে দিতে হয়। এ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তিনি পুরো অধিদফতর নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন।