ধর্ষক বাড়ছে, বাড়ছে ধর্ষণ, বাড়ছে ধর্ষণ সহযোগির সংখ্যাও। আর সেই ধর্ষণ সহযোগি হচ্ছে ছাত্র-যুব-শ্রমিক-মহিলা লীগের সাথে সাথে মূল দল আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা। অতিতে এই কাজটিতে যুক্ত হয়েছিলো তৎকালিন ক্ষমতাসীন ছাত্র-যুব-শ্রমিক-মহিলা দল ও বিএনপির পাশাপাশি শিবির-জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরাও। মধ্যিখানে গণমাধ্যমে এসেছে ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ফ্রন্ট, ছাত্র ফেডারেশন এবং নারীবাদী কয়েকজনের ধর্ষণ ও ধর্ষণে সহযোগিতার সংবাদ। এভাবে বাংলাদেশে ধর্ষণ-নিপীড়ন বাড়লেও প্রতিরোধে কোন উদ্যেগ নেই। নেই সত্যিকারের আইনী চেষ্টাও। আর এই আইনী ফাঁক ফোকর দুর্বলতার কারণে নিরাপত্তা কমছে আমাদের মা- বোনদেও জীবন যাপনের। সেই সুযোগে গড়ে উঠেছে অপরাধের রামরাজত্ব। তনু ধর্ষণ ও হত্যার বিচার আমরা পাইনি, পাইনি নারী ধর্ষণ-নির্যাতনের শত শত হাজার হাজার ঘটনারও। ঘাতকরা বেরিয়ে যায় অন্ধকারের ফাঁক গলে। এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে গাজীপুরে। বিউটি পার্লারের আড়ালে উপজাতি কিশোরীকে দেহব্যবসায় বাধ্য করানো গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিল রোকসানা আহমেদ রোজীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও তাকে অবিলম্বে পদ থেকে অপসারণের দাবি করেছে মানবাধিকার বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন।
নারী জনপ্রতিনিধি হয়েও অপর নারীকে দেহব্যবসায় বাধ্য করানোর বিষয়টিকে অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। বাংলাদেশের রাজনীতিকে কাজে লাগিয়ে অপরাধ-দুর্নীতিতে তারা শীর্ষ অবস্থানে যেভাবে চলে যাচ্ছেন, নারী ধর্ষণ-নির্যাতনেও এগিয়ে আসছেন। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বিশেষ করে জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে এমন বিষয় কখনোই আশা করা যায় না। যিনি অপরাধ করেছেন সে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হলেও এখন একজন অপরাধী। জনপ্রতিনিধিদের জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতি থাকে জনসেবা করার। নির্বাচনের সময় জনপ্রতিনিধিরা বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়। স্বাধীন বাংলাদেশে সংবিধানে বলা আছে, প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ। জনগণতো সরাসরি রাষ্ট্র পরিচালনা বা সেবামূলক প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় অংশ নেয় না। জনগণ ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা তুলে দেয়। সেই দিক বিবেচনায় জনপ্রতিনিধিরা রাষ্ট্রের মালিকদের প্রতিনিধি। তার মানে তারা মালিকদের প্রতিনিধিত্ব করছে। মালিকদের নেতা তারা। যারা নেতৃত্ব দেবে তারা মানুষের সুরক্ষা ও সেবা নিশ্চিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
প্রচলিত নিয়ম হচ্ছে-এ ধরনের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান লিখিতভাবে স্থানীয় সরকার বিভাগকে অবহিত করবে। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন-২০০৯ (সংশোধিত ২০১১) অনুযায়ী এ ধরনের অপরাধের জন্য মেয়র বা কাউন্সিলরকে বরখাস্ত করার বিধান রয়েছে। আইনে বলা আছে, নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে আদালত কর্তৃক দন্ডিত হলে এবং অসদাচরণ বা ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হলে তিনি অপসারিত হবেন। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে স্থানীয় সরকার বিভাগকে কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কোনও সুপারিশ করা হয়েছে কিনা জানতে মোবাইল ফোনে মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ও সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পায় নি গণমাধ্যম। পুলিশ তদন্ত শেষে অভিযোগপত্রে (চার্জশিট) কাউন্সিলরকে দোষী সাব্যস্ত করলেই তাকে বরখাস্ত করতে হবে। গ্রেফতারের পর ইতিমধ্যে তার শাস্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। সংরক্ষিত কাউন্সিলর হিসেবে নারী ঘটিত বিষয়ে তাকে অনেক বেশি দায়িত্বশীল হওয়া উচিত ছিল। ওই কাউন্সিলর যেই ধরনের অপরাধ কর্মে জড়িত তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার। এমনকি সে দোষী সাব্যস্ত হলে তার পদ থেকে বরখাস্ত করা দরকার। শুধু এখানেই শেষ নয় অনেক অপরাধ করছে বর্তমান ক্ষমতাসীনদের নাম ভাঙ্গিয়ে। এই অপরাধ-দুর্নীতিকে প্রতিহত করার পাশাপাশি সাহসের সাথে পদক্ষেপ নিতে হবে সেই সকল রাজনীতিকের বিরুদ্ধে; যারা রাজনীতিকে কাজে লাগিয়ে ধর্ষণ-নির্যাতন-দেহব্যবসার মত জঘণ্য কাজটি করছে, তারা শুধু সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের আদর্শচ্যুত। এদেরকে কঠিন শাস্তির আওতায় আনা নৈতিক-রাষ্ট্রিয় এবং আইনী দায়িত্ব। এই দায়িত্ব পালনে নিজেদের সাহসী পদক্ষেপ না রাখলে দেশ ক্ষতিগ্রস্থ হবে, ক্ষতিগ্রস্থ হবে বাংলাদেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যত। যা আমাদের কাম্য নয়।
যতদূর জেনেছি- গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত (১৬, ১৭ ও ১৮ নম্বর) ওয়ার্ড কাউন্সিলর রোকসানা আহমেদ রোজীর মালিকানাধীন চান্দনা চৌরাস্তার রহমান শপিং মলের আনন্দ বিউটি পার্লারে প্রায় চার মাস আগে চাকরি নেয় সম্প্রতি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করা উপজাতি ওই কিশোরী (১৬)। তার বাড়ি নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা থানাধীন বড়ুয়াকোনা এলাকায়। পার্লারে চাকরির পাশাপাশি প্রথমে তাকে দিয়ে গ্রেট ওয়াল সিটি এলাকায় রোজীর ভাড়া বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করতে বাধ্য করা হয়। এরপর ওই কিশোরীকে বাসায় আটকে রেখে বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক নুরুল হকের সহযোগিতায় প্রায় তিন মাস যাবৎ বিভিন্ন সময়ে দেহব্যবসায় বাধ্য করেন কাউন্সিলর রোজী। এক পর্যায়ে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি কৌশলে ঘটনাটি জানালে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় জিএমপি’র বাসন থানায় কাউন্সিলর রোজী ও কেয়ারটেকার নুরুল হক সহ অজ্ঞাত ২-৩ জনের বিরুদ্ধে ঘটনার দিনই মামলা করে ওই কিশোরী। পরে তাৎক্ষণিক বাসন থানা পুলিশ নুরুল হককে গ্রেফতার করলেও পলাতক ছিলেন কাউন্সিলর। গ্রেফতারের পর থানা পুলিশের কাছে রোজীকে হস্তান্তর করেছে র্যাব। পরে তাকে আদালতে তুলে সাত দিনের রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ। দেশের রাজনীতিকে কাজে লাগিয়ে অপরাধী মুক্তি পায় যখন, তখন নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি হিসেবে বলতে চাই- যেহেতু সামাজিক অবক্ষয়ের কারেণ দিন দিন বাড়ছে যৌন অপরাধ ও পতিতাবৃত্তি। আমাদের সমাজ জীবনে এ এক অভিশাপ। এর কারণেই পরোক্ষভাবে বাড়ছে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, হত্যা-আত্মহত্যা, মাদকাসক্তি ইত্যাদি। যৌন অপরাধ সংগঠিত হওয়ার পেছনে ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ই মূল কারণ, আর পতিতাবৃত্তি বাড়ছে দারিদ্রের কারণে। আমার দেখা যৌন অপরাধের সামাজিক শালিস-বিচার বিশ্লেষণ করে যা বুঝতে পারলাম তাতে এ কথা স্পষ্টভাবে বলতে পারি অধিকাংশ নারী যৌন অপরাধে নিজেকে জড়িয়ে দেয় শুধুমাত্র স্বামী, সংসার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর যখন অন্ন জোগাড় করার কোন ব্যবস্থা তার সামনে থাকে না, তখন সমাজের একশ্রেণীর লম্পট লোক প্রথম দিকে তার হিতাকাংখী সাজে পরবর্তীতে ক্রমান্বয়ে যৌনতার দিকে ধাবিত করে। এসমস্ত নারীরা যখন সমাজপতিদের সালিশের মুখোমুখি হয়, তখন হাজারো কারণ দর্শালেও সমাজের কাছে তারা ধিক্কার ছাড়া আর কিছুই পায় না।
এমন পরিস্থিতিতে রোজী যদি কঠোর শাস্তি না পায় সে আবারো আরো বড় কোন অপরাধে মেতে উঠবে। যেভাবে বাংলাদেশ আওয়ামী যুব লীগের পাপিয়ারা মেতে উঠেছিলো অপরাধ-দেহ ব্যবসায়। রোজীর মত সম্ভ্রান্ত যৌনকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলবো- অন্যরা তোমাদের যতই ঘৃণা করুক, প্রকৃতপক্ষে তোমরা ঘৃণিত নও, তবে তোমাদের ওই পেশাটা বাদ দিতে হবে। টাকার বিনিময়ে শরীর দেওয়া মানেই দাসত্ব। কাজেই ওই যৌনদাসত্ব থেকে বের হয়ে এসে সোজা হয়ে দাঁড়াও, সকল প্রকার দাসত্বের বিরুদ্ধে লড়াই কর, স্টেলা র্মা এর নিকট থেকে শিক্ষা গ্রহণ কর, যদি তা পার তবে আমি তোমাদের সালাম দেব। আর বিবেকবান সকল মানুষের কাছে আমার আহবান, আসুন পতিতাবৃত্তির মতো মারাত্মক ব্যাধির হাত থেকে সমাজকে রক্ষা করি এবং নারী-পুরুষ সবার জন্যে একটি আধুনিক প্রেমময় সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখি। আমাদের সমাজে পতিতাদের ব্যাপারে যে ঘৃণা ছড়িয়ে আছে তাতে করে একথা নির্দ্বিধায় বলা যায়, আমার আজকের এ লেখা নিয়েও আমি কিছু লোকের কাছে বিরক্তির কারণ হতে পারি। আমাদের সমাজ ব্যবস্থা রোগ থেকে নিস্কৃতি পাওয়ার উপায় বের করার চেয়ে রোগী থেকে নিরাপদ দুরত্ব বজায় রাখাকে অনেক বেশী গুরুত্ব দেয়। এ অবস্থার পরিবর্তন হলে হয়তো আমরা পতিতাদের পূণর্বাসন করে স্থায়ীভাবে এ সামাজিক অবক্ষয় থেকে বাঁচার পথে হাঁটতে পারি। এতে আমার আপনার নিকটতম কোন নারী নিজের দেহকে ভোগের সামগ্রী হিসেবে বিলিয়ে দেবে না আর আমার আপনার ভাই-বন্ধুরা সমাজের অন্ধকার গলিতে হাঁটাহাঁটি করবে না। আসুন দেখি আমাদের সমাজে পতিতাবৃত্তির মূল কারণগুলো কী-
১. স্বামী পরিত্যক্তা নারী যখন নিজের পরিবার ও সমাজের কাছ থেকে তড়িৎ কোন পূণঃর্বাসনের ব্যবস্থা পায় না।
২. দরিদ্র পরিবারের কোন মেয়ে যখন যৌতুকের দায়ে বিয়ের বয়স পার হয়ে গেলেও কারো ঘরে গৃহবধু হওয়ার ভাগ্য হয় না।
৩. অপরিহার্য কারণে যখন অর্থের একান্ত প্রয়োজন হয়ে পড়ে।
৪. ধনী বাবার লাগামহারা আত্মবিলাসী কন্যা বন্ধুদের সাথে অবাধে বিচরণ করা।
৫. সমাজের লম্পট শ্রেণী যখন বারবার কোন নারীকে লোভনীয় অর্থের প্রস্তাব দিয়ে এ কাজে ধাবিত করতে মরিয়া হয়ে ওঠে। ৬. কিডন্যাপের কারণে অসহায় কোন মেয়ে বা নারী ধর্ষিত হয়ে পতিতাবৃত্তিতে আসে।
৭. অসাধু হোটেল ব্যবসায়ীদের চক্রান্ত করেও অনেক নারীকে পতিতাবৃত্তিতে নিয়ে আসে।
৮. ক্রমবর্ধ্বমান ভাবে এবং প্রশাসনের এক প্রকার পৃষ্ঠপোষকতায় মাদকের ব্যবহারও অনেক সময় মাদকাসক্ত নারীকে পতিতাবৃত্তিতে নিয়ে আসে।
৯. নারী-পুরুষ একান্তে অবাধে বিচরণ ও খোলামেলা ব্যবহার একপর্যায়ে শারীরিক সম্পর্কে গড়ায়। পরে পুরুষ তাকে ভোগ করে পরিত্যাগ করলে সে পতিতাবৃত্তিতে।
১০. ধর্মীয় মূল্যবোধ সম্পর্কে উদাসীনতাও অনেক সময় পরোক্ষভাবে পতিতাবৃত্তির কারণ।
এসব কারণ বিশ্লেষণ করে দেখা যায় সমাজ থেকে পতিতাবৃত্তি ও যৌন অপরাধ দুরীকরণে সমাজের এক একজন সদস্য থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা পর্যন্ত আমরা সবাই নিম্নোক্ত উদ্যোগগুলো হাতে নিলে আমাদের সমাজে কোন নারী এহেন কাজে আত্মনিয়োগ করবে না-
১. বর্তমান পতিতালয়গুলোকে কর্মসংস্থান ও উৎপাদনের কাজে ব্যবহার করা অর্থাৎ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের ব্যাপক প্রসার।
২. যৌন কর্মীদের অধিকাংশ অজানা আশংকায় কোন ভাল মানুষের কাছে ঘেষতে চায় না; তাদের মনের এই হতাশা দূর করার জন্য এবং তাদেরকে এপথ থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য আত্মসচেতন কোন একটি গ্রুপকে ধীরে ধীরে এসব যৌনকর্মীর কাছে পৌছতে হবে এবং তাদেরকে ক্রমান্বয়ে এই অন্ধকার পথ থেকে কর্মসংস্থানের পথে নিয়ে আসতে হবে।
৩. বিধবা বা স্বামী পরিত্যক্তা নারীদের জন্য পূণর্বাসন ও উপার্জনের ব্যবস্থা করতে হবে। ৪. নারী নির্যাতন ও যৌতুক প্রথাকে জেনা ব্যাভিচারের চেয়েও জঘন্য অপরাধ মনে করে ঘৃণা করা।
৫. হোটেল ব্যবস্থাপনার উপর সক্রিয়ভাবে প্রশাসনিক নজরদারী রাখা।
৬. মাদকের ব্যবহার উৎখাত করার জন্য রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ গ্রহণ।
৭. কিডন্যাপ ও ব্ল্যাকমেইলকারী চক্রকে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া।
৮. ইন্টারনেট ও মাল্টিমিডিয়ার উপর কড়া নজরদারী রাখা যাতে যৌনতাকে উৎসাহিত করার মতো কোন প্রচার প্রচারণা না হতে পারে।
৯. ধর্মীয় মূল্যবোধ জাগ্রত করার জন্য এ অপরাধের ইহ ও পরলৌকিক পরিণামের ব্যাপারে মানুষকে সচেতন করার জন্য ধর্মজ্ঞানীদের আরো বেশী সক্রিয় হওয়া (ওয়াজ-মাহফিলে শুধু সরকার ও রাজনীতিকে গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করার কোন লাভ নেই। প্রয়োজন নারীদের প্রতি শ্রদ্ধা সম্মান করার জন্য কোরআন আর হাদীসের আলোকে ওয়াজ করা এবং প্রয়োজন নিজেদের চোখ-লজ্জাস্থানকে সকল অন্যায় থেকে বিরত থাকার ব্যাপারে ধর্মীয় রীতি জানানো-সচেতন করা।)
১০. মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এর মাধ্যমে অবহেলিত নারীদের পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানের জন্য আর্থিক সহযোগিতার ব্যবস্থা রাখা।
১১. বেসরকারীভাবে শুধুমাত্র যৌন অপরাধ নিয়ন্ত্রণের লক্ষে কোন সংস্থা গঠন করে সার্বক্ষনিকভাবে এবং বাস্তব উপেেদপর মাধ্যমে তৎপর থাকা।
১২. সমাজপতিরা শুধু সালিশের মাধ্যমে জরিমানা ও শাস্তির বিধান রাখলে চলবে না এসব অপরাধীদের ভৎর্সনার পাশাপাশি সমাজের একজন অভিভাবক হিসেবে পরবর্তীতে যাতে একই ব্যক্তির দ্বারা এহেন অপরাধ সংঘটিত না হয় সেজন্য অসহায় নারীদের পূণর্বাসনের উদ্যোগ নিতে হবে।
পতিতাবৃত্তি ও দেহ ব্যবসা কি সুস্থ স্বাভাবিক নারীর পেশা হতে পারে? আর দশটা পেশার মত এটাও কি নারীর কর্মক্ষেত্র হওয়া উচিত? এক্ষেত্রে আইন ও বাস্তবতার এক বিরাট সমন্বয় হীনতা কাজ করতেছে দেশে। একদিকে যেমন রয়েছে আইনের বিধি-বিধান, অন্যদিকে দেহব্যবসাকে কেন্দ্র করে বি¯তৃত হচ্ছে নানা রকমের অপরাধ মূলক কর্মকান্ড, আর যৌন কর্মীরাও রয়েছে অনেকটা সংজ্ঞাহীন নাগরিক হিসেবে। এক হিসাব মতে দেশে মোট ৭৪৩০০ পতিতা রয়েছে। যার মধ্যে ৩০৭০০ জন ভাসমান যৌনকর্মী। আমাদের দেশে সাধারণত চার ধরণের যৌন কর্মী রয়েছেৃ.
১) যৌনপল্লী বেইজ সেক্স ওয়ার্কার
২) রেডিডেন্স বেইজ সেক্স ওয়ার্কার
৩) হোটেল বেইজ সেক্স ওয়ার্কার
৪) স্ট্রিট বেইজ। যার মধ্যে স্ট্রিট বেইজ কর্মীরা যেমনি অসুরক্ষিত তেমনি মূলত জড়িত নানা ধরণের অপরাধ কর্মকান্ডের সাথে।
উন্নত-অনুন্নত দেশে নির্বিশেষে, প্রধানত দারিদ্র এবং অর্থনৈতিক-সামাজিক বঞ্চনা, নারী ও শিশু কন্যাদের এই বৃত্তিতে যুক্ত হতে বাধ্য করে। আর সমাজ ব্যবস্থার যাতাকলে এই মানুষগুলোর নাই কোন নির্দিষ্ট পরিচয়, স্বাধীনতা, অধিকার, কিংবা নিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন। যে মানুষগুলো নিজেদের দেহ বিলিয়ে দিয়ে জীবন যাপন করছে অথচ পকেট ভারী হচ্ছে সমাজের মোগলদের। এই ধর্ষক মোঘল আর বেগমদের বিরুদ্ধে যুুদ্ধে থাকতে হবে বাংলাদেশের প্রতিটি সচেতন নাগরিককে। কোথাও আর কোন নারী-শিশুর ধর্ষণ-নির্যাতন-নিপীড়নের ঘটনা পত্রিকায় পড়তে চাই না...
মোমিন মেহেদী : চেয়ারম্যান, নতুনধারা বাংলাদেশ এনডিবি