চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ রেজাউল করিম চৌধুরীর সাথে বুধবার সকালে টাইগারপাসে কর্পোরেশনের অফিসের তাঁর দপ্তরে সৌজন্য সাক্ষাত করেছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন এমপি। ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন দেখা করতে এলে নব নির্বাচিত মেয়র ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে তাঁকে বরণ করে নেন। পারস্পরিক কুশল বিনিময়ের পর সাবেক এই মন্ত্রী বর্তমানে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে নাগরিক দুর্ভোগ কমাতে কি সমস্যা আছে তা নতুন মেয়রের কাছে জানতে চান।
তাদের আলাপে নতুন নগর ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করা, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা ও রাস্তাঘাটের মেরামত কাজকে আরো কিভাবে গতিশীল,বর্ধিঞ্চু জনসংখ্যার চাপের সাথে ভাসমান হকারদের কিভাবে পুনর্বাসন করে নগরীকে জঞ্জালমুক্ত করে জন চলাচলের উপযোগী করা যায় তা নিয়ে আলাপ হয়। ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ তাঁর মন্ত্রীত্বকালীন সময়ের অভিজ্ঞতা ও দেশ-বিদেশে ভ্রমণের আলোকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে আত্মনির্ভরশীল করতে আয়বর্ধক প্রকল্প গ্রহণ করতে মেয়রকে পরামর্শ দেন। তিনি নিম্ন আয়ের ও শহরের বস্তিবাসীদের পুনর্বাসনে কমমূল্যে কোন আবাসনের প্রকল্প গ্রহণ করা যায় কিনা তা ভাবতে বলেন। মোশাররফ মন্ত্রী থাকাকালে ঢাকায় আবাসনের বেশ কিছু প্রকল্প নিয়ে সফলতা পেয়েছেন বলে মেয়রকে জানান।
আলাপকালে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, আমি বুঝে শুনে ধীরে সুস্থে পরিকল্পিত উপায়ে এগুতে চাই। কর্পোরেশনের আর্থিক অবস্থা বর্তমানে খুব একটা ভালো না। এই সীমাবদ্ধতার মধ্যেই আমাদের কাজ করতে হবে। তাই পরিচ্ছন্ন নগর গড়তে প্রয়োজনে পাইলট প্রকল্প নিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে দুইটি ওয়ার্ডের পরিচ্ছন্ন কাজ আউট সোর্সিংয়ে দেয়া যায় কিনা দেখবো। যদি সুফল মিলে তবে ধারাবাহিকভাবে সবগুলো ওয়ার্ডকে দিয়ে দেয়া হবে। আলাপকালে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন নতুন নগর ভবনের কাজ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে নিজস্ব উদ্যোগে করার পরামর্শ দেন। তাঁর আগ্রহের জবাবে কর্পোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা যায় নতুন নগর ভবন নির্মাণের প্রকল্পটি বর্তমানে প্রি-একনেকে পর্যবেক্ষনের পর্যায়ে আছে। মোট ২২ তলা ফাউন্ডেশনের প্রস্তাবিত এই নগর ভবন প্রকল্পে আছে ২টি বেজমেন্ট। চসিক অফিসের পাশাপাশি থাকবে কমার্শিয়াল স্পেস, ব্যাংক বীমার অফিস।
দীর্ঘ আলাপকালে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমাদের দেশে কেউ আইন মানতে চায় না। সমস্যা তাই থেকে যায়। হকার মার্কেট আছে, কিন্তু ওখানে ব্যবসা যারা করছে তারা হকার না। সুউচ্চ ভবন নির্মিত হয়েছে কিন্তু মানা হয়নি বিল্ডিং কোড। বিল্ডিং কোডের বিষয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষও আন্তরিক না মনে হয়। যে কোন ভবন ফুটপাত থেকে ৫ ফুট দূরত্বে নির্মাণের আইন আছে। কিন্তু কেউ মানছে না। যে কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত তাই আইন মানার পাশাপাশি নগরবাসীকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে সহযোগিতা করতে হবে। নাগরিক সুবিধা পেতে নিয়মিত পৌরকর দেয়া চাই। কর না দিলে করপোরেশন সেবা দিবে কিভাবে? এ শহর সবার। তাই মিলেমিশে এ নগরকে সুন্দর করতে হবে। তিনি তাঁর পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নব নির্বাচিত মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলে কথা দেন।
এসময় রাজনীতিক অ্যাডভোকেট সুনীল কুমার সরকার,শফিক আদনান, হাসান মাহমুদ শমসের, জসিম উদ্দিন শাহ, নুরুল আনোয়ার বাহার, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মফিদুল আলম, মেয়রের একান্ত সচিব মো. আবুল হাসেম, অতিরিক্ত প্রধান হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ঝুলন কুমার দাশ, সুদীপ বসাক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।