সরাইল উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে অনুমোদন ও প্রকাশিত হওয়ার পরই সমালোচনার ঝড় ওঠে। আহবায়কের বিরূদ্ধে আ.লীগ ঘরানা, অছাত্র ও বিবাহিতের অভিযোগে ফুঁসে ওঠে ছাত্রদলের একাংশের নেতাকর্মীরা। প্রতিবাদে হয়েছে মিছিল ও পথ সভা। পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে দুই নেতাকে। সবকিছুই প্রকাশ হয়েছে গণমাধ্যমে। ভাইরাল হয়ে যায় যোগাযোগ মাধ্যমে। ৪৮ ঘন্টা পরই ঘটেছে পদত্যাগ পত্র জমার প্রতিযোগিতা। গত ২৫ ফেব্রƒয়ারি বৃহস্পতিবার ২১ সদস্যের কমিটির ১৪ জনই বিভিন্ন অভিযোগ উল্লেখ করে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ফুজায়েল চৌধুরীর কাছে।
দলীয় একাধিক সূত্র জানায়, এক বছর পর গত ২৪ ফেব্রƒয়ারি সরাইল উপজেলা ছাত্রদলের ২১ সদস্যের কমিটির অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় দপ্তর। বিষয়টি প্রচারের পরই ফুঁসে ওঠে উপজেলা ছাত্রদলের একাংশের নেতা কর্মীরা। তাদের অভিযোগের পাহাড় আহ্বায়ক রিফাত বিন জিয়ার বিরূদ্ধে। তাই তারা ওই আহ্বায়ক কমিটিকে অবৈধ দাবী করে ২৪ ফেব্রƒয়ারী রাতে সরাইলের প্রধান সড়কে একটি মিছিল করেছে। কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার চত্বরে করেছে পথ সভা। রিগান ও মোস্তাফিজ নামের দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরের দিন ২৫ ফেব্রƒয়ারি ২১ সদস্যের ওই কমিটির ১৪ জন সদস্যই বিভিন্ন অভিযোগ এনে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও সম্পাদকের মাধ্যমে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকের কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন। পদত্যাগ পত্রে তারা বলেন, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে নির্দেশে সাংগঠনিক টিমের কর্মী সম্মেলনে ছাত্রদলের তৃণমূল ও জেলা ছাত্রদলের মতামতকে উপেক্ষা করে টাকায় প্রভাবিত হয়ে আওয়ামী লীগ নেত্রীর বিবাহিত ছেলে রিফাতকে আহ্বায়ক করেছে। রিফাত আওয়ামী ঘরানার ছেলে। তার মা বেবী ইয়াছমিন উপজেলা আ.লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও মহিলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদিকা। নারী নির্যাতনসহ একাধিক মামলার পলাতক আসামী। প্রত্যন্ত এলাকার রিফাত একাধিক বিয়ে করে এখন ঢাকায় বসবাস করছে। ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে রিফাত কোন দিনও জড়িত ছিল না। আর সদস্য সচিব আমান উল্লাহ ঢাকায় বসবাস করছে। আদম ব্যবসার সাথে জড়িত। ছাত্রদলের মাঠের সৈনিক, হামলা মামলা ও কারানির্যাতিত নেতা কর্মীদের বাদ দিয়ে কমিটি করা হয়েছে। রিফাত ও আমানকে দিয়ে সরাইল উপজেলা ছাত্রদল চলবে না। আর এ জন্যই তারা একসাথে ১৪ জন এ কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন। কমিটির সদস্য আতিকুর রহমান, সাইফুল ইসলাম, গাজী উবায়দুল্লাহ, মো. মাহবুবুর রহমান, মো. মহসিন মিয়া, মো. আক্তার মিয়া, মো. জুবায়েদ মিয়া, মো. সোহাগ মিয়া, নূরূজ্জামান, ও মো. মোস্তাকিমুর রহমান এক যোগে ১৪ জনের পদত্যাগের কথা স্বীকার করে বলেন, রিফাত একসময় ছাত্রলীগ করত। ঢাকায় বসবাস করে। সে জীবনে কোন দিন ছাত্রদল করেনি। বিবাহিত ও একাধিক মামলার পলাতক আসামী। ছাত্রত্বও নেই। আমানও এলাকায় থাকে না। ঢাকায় আদম ব্যবসা করে। তাদেরকে দিয়ে সরাইল উপজেলা ছাত্রদল চলবে না। তাই আমরা নতুন ভাবে যোগ্য নেতৃত্বের মাধ্যমে কমিটি চাই। আহ্বায়ক রিফাত বিন জিয়া বলেন, আমার বিরূদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ মিথ্যা। আমি অবিবাহিত। আ.লীগ করে তাই মায়ের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। কেউ পদত্যাগ করেনি। এগুলো মিথা ও ভূয়া। আমার বিরূদ্ধে একটি কুচক্রী মহলের গভীর ষড়যন্ত্র। জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ফুজায়েল চৌধুরী সরাইল ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির ১৪ জনের পদত্যাগ পত্র প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে বলেন, চুড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য পত্র গুলি কেন্দ্রে পাঠানো হবে।