মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান বিরোধী বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে একদিনেই ৩৮ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। নিউ ইয়র্কে এক ভার্চুয়াল সম্মেলনে একথা জানিয়েছেন মিয়ানমারে জাতিসংঘের দূত ক্রিস্টিন শ্র্যানার বার্জেনার। বুধবার দেশটির কয়েকটি শহরে এঘটনা ঘটে। অভ্যুত্থানের পর থেকে গতকালই ছিল সবচেয়ে প্রাণঘাতী দিন। বিক্ষোভকারীদের দমাতে রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাসের পাশাপাশি গুলি ছোঁড়ে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কোনরকম সতর্কতা ছাড়াই এলোপাতাড়ি গুলি ছুঁড়তে শুরু করে। নিহতদের মধ্যে চার জন অপ্রাপ্তবয়স্ক। এছাড়া ১৯ বছর বয়সী আরেক নারীও গুলিতে নিহত হন। ইয়াঙ্গুনে অন্তত আট জন ও মোনিওয়া শহরে অন্তত ৬ জন মারা গেছেন। এছাড়া মিঙ্গিয়ান ও মান্দালয়েও হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
ক্রিস্টিন আরও জানান, এখন পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ২শ' বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে সামরিক জান্তা। এ ঘটনার পর শুক্রবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি অধিবেশন ডেকেছে যুক্তরাজ্য। আর মিয়ানমারের ওপর আরও কঠোর হওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
গত ১লা ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আটক হন দেশটির স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি ও রাষ্ট্রপতিসহ উইন মিন্ট। এছাড়া অধিকাংশ মন্ত্রীদেরও আটক করে জান্তা সরকার। সু চি'র গণতন্ত্রকামী দল ন্যাশনাল লিগ অব ডেমোক্রেসি-এনএলডির জ্যেষ্ঠ নেতাদের আটকের পর জরুরি অবস্থা জারি করে সামরিক সরকার।
অভ্যুত্থানের পর থেকেই রাজপথে নেমে বিক্ষোভ শুরু করে মিয়ানমারের জনগণ। শুরুর দিকে বিক্ষোভকারীদের প্রতি জান্তা সরকার দমন-পীড়ন না চালালেও যত সময় গড়াচ্ছে ততই বর্বরোচিতভাবে বিক্ষোভকারীদের দমনের চেষ্টা চালাচ্ছে সেনা সরকার। অভ্যুত্থান বিরোধী বিক্ষোভ শুরুর পর থেকে বুধবারই ছিলো সবচেয়ে ভয়াবহ দিন। দেশটিতে এ পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ৫০ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে। এরমধ্যে ৩৮ জন বিক্ষোভকারী একদিনে নিহত হয়েছে। আটক করা হয়েছে আরও অন্তত ১ হাজারের বেশি বিক্ষোভকারীকে।