সারাদেশে ৬০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে গণপরিবহণের ভাড়া । মঙ্গলবার সকালে সড়ক, পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত আগামী দুই সপ্তাহের জন্য বহাল থাকবে। আবার দেশে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বাস-মিনিবাসে অর্ধেক যাত্রী পরিবহণের সরকারি নির্দেশনার পর বাস মালিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়াল। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সোমবার গণপরিবহণে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলার নির্দেশনা জারি করে সরকার। এরপর বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সঙ্গে বৈঠকে সোমবার বাস মালিকরা এই দাবি জানান। দেশে গত বছর করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর অর্ধেক যাত্রী নিয়ে বাস চালানোর সিদ্ধান্ত দিয়েছিল সরকার। দুই মাস সেভাবে চলেছিল গণপরিবহণ। তখনো বাসভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছিল। চলতি বছরের মার্চ থেকে আবার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় সোমবার ১৮ দফা নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। এতে গণপরিবহণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে এবং ধারণক্ষমতার অর্ধেকের বেশি যাত্রী পরিবহণ না করার নির্দেশনা রয়েছে। বিআরটিএর সঙ্গে মালিক-শ্রমিকদের বৈঠকে বাস ও মিনিবাসে চালক, সহকারী ও যাত্রীদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বাসে রাখতে হবে হ্যান্ড স্যানিটাইজার। আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, এই শর্ত কী পরিবহণ মালিকরা মেনে চলবে। এ ছাড়া আসন ফাঁকা না রেখে আগের মতো বসলে করোনাঝুঁকি যে বেড়ে যাবে, এ কথা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। প্রথমদিনেই সরকারি নির্দেশনা মানা হচ্ছে না। বাসের ভেতর দাঁড়ানো যাত্রী, চালক-হেলপারসহ যাত্রীদের অনেকের মুখে নেই মাস্ক, নেই হ্যান্ড স্যানিটাইজার। রাজধানীর অধিকাংশ গণপরিবহণের চিত্র এমনই। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে বেশকিছু স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে গণপরিবহণ চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। বিনিময় যাত্রীদের গুণতে হচ্ছে ৬০ শতাংশ বেশি ভাড়া। রাস্তা-ঘাট, হাটবাজারের মতো গণপরিবহণেও এখন বলতে গেলে স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই নেই, যা ক্ষুব্ধ করছে যাত্রীসাধারণকে। মহামারি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত নজরদারি বাড়িয়ে বর্তমান নিয়মেই গণপরিবহণ চালানোর কথা। এর আগে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ২৫ মার্চ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত গণপরিবহণ চলাচল বন্ধ ছিল। পরে অর্ধেক আসন খালি রাখাসহ কয়েকটি শর্তে ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়িয়ে ১ জুন গণপরিবহণ চালানোর অনুমতি দেয় সরকার। পরে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে এলে আগের নিয়মে বাস চলতে থাকে। যখন প্রশাসনের নজরদারি ছিল, তখন অনেক বাসেই স্বাস্থ্যবিধি মানা হতো। পরে নজরদারি ধীরে ধীরে শিথিল হয়ে যায়। হ্যান্ড স্যানিটাইজার না রাখার পক্ষে তাদের যুক্তি হচ্ছে, যাত্রীরাই ব্যবহার করতে চায় না, তাই বাসেও রাখা হয় না। অন্যদিকে রাজধানীতে বিশৃঙ্খলভাবে চলছে গণপরিবহণ। আমরা মনে করি, গণপরিবহণে চলাচলের সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। কারণ, এখন করোনার উচ্চ সংক্রমণ চলছে। গণপরিবহণে যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা না হয়, তা হলে সামনে বড় ধরনের বিপদ অপেক্ষা করছে। সুতরাং; সময় থাকতেই সাবধান হওয়া জরুরি। সর্বাবস্থায় মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জারি করা নির্দেশনা কঠোরভাবে মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।