শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে কালবৈশাখী ঝড়ের সঙ্গে গরম বাতাসে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উপজেলা কৃষি বিভাগের প্রাথমিক হিসাবে উপজেলায় ৫০ হেক্টর জমির ধান (ফুল অবস্থায়) সবুজ থেকে সাদা হয়ে ধানের শীষ নষ্ট হয়েছে। তবে কৃষকদের ভাষ্য মতে, ধান নষ্ট হওয়া জমির পরিমাণ আরো বেশি।
বুধবার (৭ এপ্রিল) সকালে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট গাজীপুর (ব্রি)-এর কীটতত্ত্ব বিভাগের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. পান্না আলী বলেন, ‘উপজেলা কৃষি বিভাগের আহ্বানে আমরা একটি পর্যবেক্ষণ দল এসেছিলাম। পর্যবেক্ষণ শেষে ও কৃষকদের ভাষ্যমতে কালবৈশাখী ঝড়ের সঙ্গে ৩৭ থেকে ৪০ তাপমাত্রার গরম বাতাস হওয়ার কারণে ধান শীষগুলো শুকিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।’ এর আগে মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জমির ধান পর্যবেক্ষণ করেন ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট গাজীপুর (ব্রি)-এর কীটতত্ত্ব বিভাগের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. পান্না আলী, উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. কাজী শিরিন আক্তার জাহান ও উদ্ভিদ শারীরতত্ত্ব বিভাগের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. হীরেন্দ্র নাথ বর্মণ।
ঝিনাইগাতী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির বলেন, উপজেলায় চলতি বছর ১৩ হাজার ৭৭৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। গত রোববার (৪ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা থেকে নয়টা পর্যন্ত কালবৈশাখী ঝড়ের সঙ্গে গরম বাতাস হওয়ায় উপজেলার নলকুড়া, রাংটিয়া, ডেফলাই, কাংশা, নওকুচি, গান্ধীগাঁও, জামতলী, হালচাটি, বগাডুবি এলাকার ৫০ হেক্টর জমির উঠতি বোরো ধান যে গুলেতে শীষ এসেছে সেগুলো চিটায় পরিণত হয়ে সাদা হয়ে গেছে। ক্ষতির পরিমাণ বেশি হবে কিনা, নিরুপণে মাঠ পর্যায়ে কাজ চলছে।
ঝিনাইগাতী উপজেলার জামতলী এলাকার কৃষক আবদুর রশিদ বলেন, ‘রোববার এমন গরম বাতাস উঠে ছিল যে, বাহিরে থাকা যায়নি, ঘরেও খালি গায়ে থাকতে কষ্ট হয়েছে। এ গরম বাতাসে আমাদের ধান সব শেষ, এখন আমরা সারা বছর খাবো কি।’
ঝিনাইগাতী উপজেলা চেয়ারম্যান এসএমএ ওয়ারেজ নাইম গরম বাতাসে ধানক্ষেত নষ্ট হয়ে যাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘কৃষকদের অনেক বড় ক্ষতি হয়েছে। আমি যথাযথ কতৃপক্ষের মাধ্যমে তাদের সাহায্যের জন্য সরকারের কাছে সাহায্যের আবেদন করছি।’