সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলায় এবছর লক্ষ্যমাত্রার চাইতে বেশী পরিমান জমিতে ইরি বোরো চাষাবাদ হয়েছে। উপজেলার বিলগুলোতে যে দিকে চোখ যায় শুধু ধান আর ধান। সব এলাকায় সবুজ ধানে বাতাস দোল খাচ্ছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে জমির ফসল নষ্ট না হলে বাম্পার ফলন হবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। বিগত বছরের চেয়ে এ বছর অধিক জমিতে ইরি বোরো চাষাবাদ হয়েছে। গত কয়েকদিন পূর্বে কাল বৈশাখীর ছোবলে এলাকার অনেক জমির ধান হেলে পড়েছে। ফসল ঘরে তোলা নিয়ে কৃষকের চিন্তার অন্ত নেই। এ বছর চাষাবাদের শুরুতে বৃষ্টিপাত কম থাকার কারণে উপজেলার সকল এলাকায় ব্যাপকহারে ইরিবোরো চাষাবাদ হয়েছে। অনেক নিচু এলাকার জমিতে কৃষক সেচের মাধ্যমে চাষাবাদ করেছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকার কারণে রোগ বালাই অনেকাংশে কম হয়েছে। তবে কৃষকের ক্ষেতে মাজরা পোকার উপদ্রব দেখা দিয়েছে। অনেক জমিতে আবার ব্লাস্টের আক্রমণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন বিলে ইরিবোরো চাষে সবুজ ফসলের সমারোহ। উপজেলার শতকরা ৮০জন কৃষকই সরাসরি কৃষি কাজের সাথে জড়িত। কৃষি কাজ করেই তারা জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার প্রায় ১৯হাজার ৫০হেক্টর জমিতে ইরি বোরো চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হলেও ধানের মুল্য বেশি হওয়াতে লক্ষ্য মাত্রার চাইতে প্রায় ৫০০ হেক্টর অধিক জমিতে ইরিবোরো চাষাবাদ হয়েছে। এ বছর উপজেলায় জলাবদ্ধতা না থাকায় উপজেলার ধানদিয়া, নগরঘাটা, সরুলিয়া, কুমিরা, খলিষখালী, তেঁতুলিয়া তালা ,জালালপুর,মাগুরা,খেশরা,সহ উপজেলায় সর্বত্রই লক্ষ্য মাত্রার চাইতে বেশী জমিতে ইরি বোরো চাষাবাদ হয়েছে। তালা উপজেলার যুগিপুরিয়া গ্রামের ধানচাষী শহিদুল ইসলাম জানান আবহাওয়া ও প্রকৃতির কারণে এবছর আমাদের ব্লকে গতবারের চাইতে বর্তমানে ধান ভাল বোঝা যাচ্ছে। এ বছর আমার ব্লকে ব্রি-ধান ২৮ বেশ ফলেছে। বর্তমানে আবহাওয়া ভাল, ধান ঘরে না উঠা পর্যন্ত চিন্তার শেষ নেই। অপর দিকে ইসলামকাটি ইউনিয়নের কাজিডাঙ্গা গ্রামের কৃষক জামাল উদ্দীন জানান গত বছরের তুলনায় ধান ভাল ও রোগ বালাই কম আছে। আমতলাডাঙ্গা গ্রামের কৃষক ইনছার আলী জানান এ বছর আমাদের এলাকায় ধানের ফলন খুব ভাল দেখা যাচ্ছে, যদি এভাবে শেষ নামে আবহাওয়া ভাল থাকে তাহলে বাম্পার ফলন হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। আবহাওয়া ভাল থাকলে আমরা ধান ঠিকমত ঘরে তলতে পারব। তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা বেগম জানান এবছর আবহাওয়া ভাল থাকার কারণে অনেক এলাকায় চাষাবাদ হয়েছে। উপজেলার সকল এলাকায় কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করায় রোগ বালাই কিছুটা কম আছে। আগাম পরামর্শ দেওয়ায় ব্লাস্ট রোগ দমনে পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। এবছর উপজেলায় ব্রি-ধান ২৮ বেশী পরিমান জমিতে চাষাবাদ হয়েছে তাছাড়া ৬৭, বিনা-১০হাইব্রিড ধানের চাষ ও কিছু এলাকায় লবণ সহিষœু ধান চাষাবাদ হয়েছে।