রাজশাহীর বাগমারায় শ্লোগান দিয়ে কৃষকদের পাঁচটি সেচযন্ত্র পুড়িয়ে ও ফসল ক্ষতি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পূর্ব শক্রুতার জের ধরে এই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এর ফলে কৃষকের ধানখেতে সেচ দেওয়া নিয়ে অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাত সাড়ে আটটার দিকে ১০/১২ জনের একদল দুর্বৃত্ত উপজেলা বড় বিহানালী গ্রামের বিলসতি বিলে যান। তারা স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য আজাহার আলীর নিয়ন্ত্রণে থাকা ওই বিলের ধানখেতে সেচ দেওয়া পাঁচটি শ্যালোমেশিনের ঘরে হামলা চালিয়ে সেগুলো ভেঙে ফেলেন। এ সময় সেখানে থাকা পাহারাদারেরা পালিয়ে আত্মরক্ষা করেন। পরে দুবৃর্ত্তরা পাঁচটি মেশিনে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে ফেলেন। আশপাশের ধানখেতও নষ্ট করে দেন। পালিয়ে যাওয়া পাহারাদারেরা খবরটি এলাকায় পৌঁছালে লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে তাঁদের প্রতিরোধে আসলে দুবৃর্ত্তরা পালিয়ে যায়। রাতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পক্ষে বড় বিহানালী ইউনিয়নের সাবেক সদস্য আজাহার আলী বাদী হয়ে বিলসতি বিল মৎস্যচাষ প্রকল্পের সভাপতি অমূল্য হাওলাদার, সদস্য আলাউদ্দিনসহ অন্যান্যের নাম উল্লেখ করে রাতেই থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত শনিবার (১০ এপ্রিল) রাতে ওই বিলের আজাহার আলীর দখলে থাকা একটি কুয়া (ছোট আকৃতির গভীর পুকুর) থেকে পানি সেচের সময় তাঁর লোকজন মৎস্যচাষ প্রকল্পের লোকজনের ওপর হামলা চালিয়ে চারজনকে আহত করেন। তাঁদের আহত অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এর জের ধরে প্রতিশোধমূলক প্রতিপক্ষরা গতকাল রাতে শ্লোগান দিয়ে পাল্টা ভাংচুর ও মেশিন পুড়িয়ে ফেলেন।
আজাহার আলী অভিযোগ করেন, তিনিসহ অন্যরা বিলসতি বিলের খাসজমি ইজারা নিয়ে ধানখেতে পানিসেচ ও মাছচাষ করে আসছিলেন। তবে মৎস্যচাষ প্রকল্পের লোকজন সেখানে জোর করে মাছ ধরেন। স্থানীয় একজন আওয়ামী লীগের নেতার ইন্ধনে সেচযন্ত্র পুড়িয়ে ফেলার কারণে প্রায় ১০০ বিঘা জমিতে পানিসেচ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। কৃষকেরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। মৎস্যচাষ প্রকল্পের লোকজন এই মেশিন পোড়ানোর সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন।
এই বিষয়ে কথা বলার জন্য অমূল্য হাওলাদারের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য না করে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
তবে আলাউদ্দিন ঘটনার সঙ্গে নিজের জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তিনি ঘটনাটি শুনেছেন। তবে এর সঙ্গে পাশের বেড়াবাড়ি গ্রামের লোকজন জড়িত বলে দাবি করেছেন। তবে যতটুকু জেনেছেন তাঁরাই ঘটনাটি অন্যখাতে প্রবাহের জন্য চেষ্টা করছেন।
বাগমারা থানার ওসি মোস্তাক আহম্মেদ জানান, অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।