চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার মাঠগুলোতে বোরো ধানের সবুজ শীষের সমারহ। থোকায় থোকায় ঝুলছে ধানের শীষ। পাঁকতে শুরু করেছে অনেক জমির ধান। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে শুরু হবে ধান কাটা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর বোরো ধান বাম্পার ফলন হবার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে নতুন ধান উঠার আনন্দের প্রহর গুনছে কৃষক-কৃষণীরাা। চলতি মৌসুমে উপজেলায় ধানের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লক্ষ ৫ হাজার ১’শ মেট্রিকট্রন ও চালের ৭০ হাজার ৭৫ মেট্রিকটন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর গোমস্তাপুর উপজেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৫ হাজার ৭০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে উফসি জাতের ধানের মধ্যে ব্রি-ধান ৪৮- ৩’শ ৩০ হেক্টর, ব্রি-ধান ২৮- ৫’শ ১০ হেক্টর, ব্রি-ধান ২৯- ৬’শ ৯০ হেক্টর, ব্রি-ধান ৩৬- ২ হাজার ৪’শ ৯৫ হেক্টর, ব্রি-ধান ৫৮- ১ হাজার ৭’শ ১০ হেক্টর, ব্রি-ধান ২৯- ১’শ ৪০ হেক্টর, ব্রি-ধান ৮১- ৩ হাজার ১’শ ৫০ হেক্টর, ব্রি-ধান ৮৬- ১’শ ৫ হেক্টর, ব্রি-ধান ৮৪- ৭৫ হেক্টর, ব্রি-ধান ৫০- ৩’শ ৪০ হেক্টর, ব্রি-ধান ৮৮- ৩০ হেক্টর, ব্রি-ধান ৮৯- ১৫ হেক্টরসহ জিরা- ৪ হাজার ৭’শ ৫০ হেক্টর এবং হাইব্রিড জাতের এসএল ৮এইচ ৩ হেক্টর, এসিআই সেরা ১’শ ৯০ হেক্টর,ইস্পাহানী ২’শ ২৫ হেক্টর,টিয়া ১৫ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হচ্ছে।
রাধানগর ইউনিয়নের কৃষক নুরুল ইসলাম জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বেশি জমিতে আবাদ করা হয়েছে, যথাসময়ে সেচপানি দেয়া,আগাছা পরিস্কারসহ সার ও বীষ নিদিষ্ট সময় প্রয়োগ করা হয়েছে। ফলে এ বছর বোরে ধানে বাম্পার ফলন হবে বলে তিনি মনে করছেন।
আরেক কৃষক মোবারক হোসেন জানান, চলতি বছর ৭ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষাবাদ করা হয়েছে। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে তার জমির ধান কাটা শুরু হবে। ধানের শীষ দেখে তিনি ভাল ফলন পাবে বলে ধারণা করছে। তবে ঝড় শিলাবৃষ্টি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে ধানের ফলন নিয়ে শঙ্কায় থাকবেন। তবে এ বছর ধানের দাম যথেষ্ট রয়েছে তিনিসহ কৃষকরা লাভবান হবেন।।
বিভিন্ন ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা বলেন, ইরি-বোরো মৌসুমে কৃষকরা যাতে লাভবান হয় সে জন্য আমরা সার্বক্ষনিক নজর রাখছি। কোন কৃষকের সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত সমাধানের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। উপজেলায় এবার উফসি ও হাইব্রিড উভয় জাতের ধান চাষাবাদ করেছে কৃষকরা। ভাল ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। করোনা ভাইরাসের কারণে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। লকডাউনের সময় সরকার আরো বৃদ্ধি করলে নির্মাণ শ্রমিক, ইটভাটার শ্রমিক, ছোট-খাটো দোকানদার, রিকশা-ভ্যান চালকসহ অনেকেই বাড়িতে বসে থাকবেন। এ সময় তার ধান কাটায় নিয়োজিত হলে শ্রমিক সংকট হবে না বলে তারা ধারণা করছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মাসুদ হোসেন বলেন, ধানের উৎপাদন বেশি পাবার জন্য কৃষককে নিদিষ্ট সার ব্যবহার, পানি সাশ্রয় এবং সার্বিক পরিচর্চায় কৃষককে সবসময় উপজেলা কৃষিবিভাগের মাধ্যমে সহযোগিতা ও পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ধান কাটা ও মাড়ার সময় মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ কৃষক ও শ্রমিকদের করোনাভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। চলতি মৌসুমে উপজেলায় উফসি জাতের ধান ১৪ হাজার ৩’শ ৪০ হেক্টর ও হাইব্রিড ৭’শ ৩০ হেক্টর জমিতে চাষবাদ করা হয়েছে।