নওগাঁর মহাদেবপুরে এবার প্রথম দিন থেকেই সর্বাত্মক লকডাউন পালিত হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশ প্রশাসন থেকেছেন সদাতৎপর। তারা ছিলেন সব সময় কঠোর অবস্থানে। ফলে মানুষ বাড়ি থেকে বের হয়েছেন কম, দোকানপাট এখন আর খোলা থাকছেনা বললেই চলে। ছোটখাট যান চলাচলও বন্ধ হয়ে গেছে। উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে গত তিন দিনে ১৮ টি মামলায় মোট চার হাজার তিনশ’ পঞ্চাশ টাকা জরিমানা আদায় করেন। এ সময় থানা পুলিশ ৪৪ টি মটরসাইকেলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে এবং নাশকতার আশংকায় একজনকে আটক করে।
শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে নওগাঁ জেলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিএসবি) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুরাইয়া খাতুনের নেতৃত্বে থানা পুলিশ মহাদেবপুর বাসস্ট্যান্ডে অবস্থান নিয়ে অপ্রয়োজনে বাড়ির বাইরে বের হওয়া নিয়ন্ত্রণ করেন, পথচারীদের মধ্যে মাস্ক বিতরণ করেন। এ সময় ১৪ টি মটরসাইকেলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
অন্যদের মধ্যে মহাদেবপুর থানার ওসি আজম উদ্দিন মাহমুদ, ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আবুল কালাম, এসআই জাহাঙ্গীর আলম, এসআই শাহজাহান, এসআই এএসএম রাইহান আলম, সাংবাদিক বরুণ মজুমদার, সাংবাদিক কিউ, এম, সাঈদ টিটো প্রমুখ তার সঙ্গে ছিলেন।
এরআগে বৃহস্পতিবার সারাদিন মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মিজানুর রহমান মিলন উপজেলা সদরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে মাস্ক বিতরণ করেন। এ ছাড়া নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দোকান খুলে রাখা, যানবাহন চালানো প্রভৃতি অপরাধে দন্ডবিধি ১৮৬০ এর ১৮৮ ও ২৬৯ ধারা অনুযায়ী ৬টি মামলায় মোট এক হাজার একশ’ টাকা জরিমানা আদায় করেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান আহসান হাবীব ভোদন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অরুন চন্দ্র রায়, মহাদেবপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আবুল কালামসহ পুলিশের একটি চৌকষ দল, সাংবাদিক কাজী সামসুজ্জোহা মিলন, সাংবাদিক বরুণ মজুমদার প্রমুখ তার সঙ্গে ছিলেন। এদিন থানা পুলিশ ১৬ টি মটরসাইকেলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।
লকডাউন শুরুর দিন বুধবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আসমা খাতুন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। তিনি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৫৬ এর ১২ ধারা এবং দন্ডবিধি ১৮৬০ এর ১৮৮ ও ২৬৯ ধারা অনুযায়ী ১২টি মামলায় মোট তিন হাজার ২৫০ টাকা জরিমানা আদায় করেন। এদিন বিকেল ৩ টায় মহাদেবপুর বাসস্ট্যান্ডে মটরসাইকেল আটক করার পর তানভির হুসাইন (২৭) নামে এক যুবক ফেসবুক লাইভ ভিডিওতে পুলিশের কার্যক্রম দেখানোর সময় জানতে পেরে থানা পুলিশ তাকে আটক করে। লাইফে সে মন্তব্য করে যে, পুলিশ হেলমেট না থাকার দায়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেও পুলিশের নিজেরই হেলমেট নেই। কিন্তু মহাদেবপুর থানার ওসি আজম উদ্দিন মাহমুদ জানান, থানা পুলিশের প্রত্যেকের মটরসাইকেলের সাথে হেলমেট রয়েছে। গাড়ি চালানোর সময় সেগুলো সবাই ব্যবহার করেন। আটক যুবক উপজেলা সদরের বাগানবাড়ি মহল্লার মজিবর রহমানের ছেলে। সে নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন হিজবুত তাহরিরের সদস্য হিসেবে এর আগে আটক হয়েছিল বলে পুলিশ জানায়। বৃহস্পতিবার তাকে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৫১ ধারায় নওগাঁ কোর্টে চালান দেয়া হয়।