পবিত্র মাহে রমজান ও বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপের দিকে ধাবিত হওয়ায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক সারাদেশে একযোগে লকডাউন ঘোষিত হয়েছে। এর সুত্র ধরে পহেলা রমজান থেকে ঘোষিত লকডাউনের প্রথম দিন হতে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে কাঁচা তরিতরকারি ও শাক-সবজির দাম। লালমনিরহাট জেলাসহ সদর উপজেলার প্রায় বেশ কথটি বাজারে ক্রেতাদের উপস্থিতি কম থাকলেও এক সপ্তাহেই ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে কাঁচা তরিতরকারি ও শাক-সবজির দাম।
লালমনিরহাট জেলার নয়ারহাট, মহেন্দ্রনগর, বড়বাড়ি বাজার, মুস্তফিরহাট, তিস্তা, কুলাঘাট, সাপটিবাড়িসহ বেশ কিছু বাজার ঘুরে দেখা গেছে শাকসবজি ও তরিতরকারির দাম অনেক বেশি। গত সপ্তাহে যেখানে প্রতি কেজি শসা ১০ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি হতো এখন সেই শসার দাম প্রতি কেজি
প্রায় ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত। করলা ছিল প্রতি কেজি ১০ থেকে ১৫ টাকা এখন দাম বেড়ে গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। টমেটো ছিল প্রতি কেজি ৮ থেকে ১২ টাকা কিন্তু এখন দাম বেড়ে গিয়ে ১৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত হয়েছে। পটল ছিল প্রতি কেজি২৫ থেকে ৩০ টাকা এখন প্রতি কেজি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। গত সপ্তাহে ঢেঁরস ছিল প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা এখন দাম বেড়ে গিয়ে প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৪৫টাকা। লেবুর হালি ছিল ১০ থেকে ১৫ টাকা এখন ৩০ থেকে ৪০ টাকা।প্রতি লিটার গরুর দুধের দাম প্রায় ৭০ টাকা হতে ৯০ টাকা। বিশেষ করে মালভোগ কলার দাম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৫ টাকা হালির কলা ২৫ থেকে ৪৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে বড়বাড়িহাট বাজারে।
রমজানের আগে তুলনামূলকভাবে এত দাম ছিল না এসব কাঁচা তরকারী। এখন প্রায় ২০ থেকে ৫০ টাকা বেড়ে গেছে। তরিতরকারি এবং মাছ মাংসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। গত সপ্তাহে যেখানে রুই মাছ প্রতি কেজিতে ছিল ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা এখন সেই রুই মাছ প্রতি কেজিতে দাম বেড়ে গেছে প্রায় ২০০ থেকে ২৪০ টাকা পর্যন্ত। যেখানে লালমনিরহাট জেলায় গরুর হাটগুলোতে ঘুরলেই দেখা যায় গরুর দাম অনেক কম বলে জানায় গরুর ব্যবসায়ীগণ ঠিক সেখানেই গরুর মাংসের দাম ৫০ টাকা বেড়ে বর্তমানে ৫৩০ থেকে ৫৫০ টাকা পর্যন্ত হয়েছে।
জেলার বেশ কয়েকটি বাজারে কয়েকজন তরিতরকারি ও শাকসবজি ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলে জানা যায়, লকডাউন ও রমজান মাস একসঙ্গে শুরু হওয়ায় এবং চাহিদা অনুযায়ী যোগান না থাকায় দাম একটু বেশি। তবে তারা অভিযোগ করে বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী রমজান মাস এবং লকডাউনকে পুঁজি করেই হাতিয়ে নিচ্ছে এই সুবিধা।
মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম(৪০) নামে এক ক্রেতা বলেন, লালমনিহাট জেলায় যেখানে শাকসবজি এবং তরিতরকারির উৎপাদন হয় অনেক বেশি, ঠিক সেখানেই শাকসবজির এত বাড়তি দামে অতিষ্ঠ আমাদের মত মধ্যবিত্ত শ্রেণীর পরিবারের লোকজন।
বাজারে বড়মাছ কিনতে এসে এক মাছ ক্রেতা বলেন কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে দাম।
বড়বাড়ি হাট বাজারে সবরি কলা কিনতে এসে কলার দাম সম্পর্কে ক্রেতা বলেন, এত পরিমান কলার দাম বৃদ্ধির কারণে কলা কিনা হচ্ছে না আর কলা ২৫ থেকে ৪৫ টাকা হালি।
সবজি বিক্রেতা জাহাঙ্গীর আলম (২৭)এবং মোহাম্মদ নুর ইসলাম (৩৯) বলেন “শাক-সবজির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহে বেশ চড়া। গত দুই তিনদিনেই শাক সবজির দাম হঠাৎ বেড়ে গেছে। দাম বেড়ে যাওয়ার মুল কারণ করোনা পরিস্থিতির জন্য ঘোষিত লকডাউন এবং কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের কারশাজিকে দায়ী করছেন তারা।
জেলা বাজারজাত করন কর্মকর্তা আবদুর রহিম জানালেন, করোনা পরিস্থিতি কারনেই কাচাঁ তরকারীর বাজার এমন যাচ্ছে। তবে তিনিও কিছু অসধু ব্যবসায়ীকে দায়ী করেন বর্তমান উদ্ভুত কাচাঁবাজারের পরিস্থিতির জন্য।