শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী খলচান্দা কোচ পাড়া গ্রামে সোমবার (২৬ এপ্রিল) গভীর রাতে বন্যহাতির দল তান্ডব চালিয়ে বোরো ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করেছে।
জানা গেছে, খলচান্দা গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক বকুল কোচ (৩০) বলেন, প্রতিদিনের মতো তিনি বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলেন গভীর রাতে বন্যহাতি তান্ডব চালিয়ে তার ৬০ শতাংশ জমির বোরো ধান ক্ষেত খেয়ে ও পা দিয়ে মাড়িয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। তিনি জানান বর্তমান বোরো ধানের মৌসুমে প্রায় প্রতি রাতেই ২০/৩০ টি বন্যহাতির দল খাবারের সন্ধানে ধান ক্ষেতে তান্ডব চালায়।
এরকই গ্রামের কৃষাণী অমলা কোচনী (৩৫) বলেন, এবার নিয়ে চারবার আমার ধান ক্ষেত খেলো কিভাবে যে ধান গোলায় তুলবো। আর কিভাবে আমরা যে চলবো বলতে পারিনা। আপর কৃষক পরিমল কোচ (৪০) বলেন, প্রতি মওসুমে বন্য হাতির দল ধান ও গাছের কাঁঠাল খেয়ে সাবার করে দেয়। আমরা এ যাবত কোন সরকারী সাহায্য-সহযোগীতা পাইনি। তিনি বলেন হাতি তাড়ানোর জন্য কয়েকদিন সরকারীভাবে অল্প পরিমানে কেরোসিন তেল বিতরন করা হয়েছে। এই তেল পর্যাপ্ত নয়। তিনি আরো বলেন আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আমাদের ধান কাটতে হবে এমন সময়ে বন্যহাতি ফসলের ক্ষেতে তান্ডব চালিয়ে আমাদের দিশেহারা করে দিয়েছে।
এদিকে, গ্রামবাসীরা জানান, বন্য হাতির তান্ডবে সোমবার রাতে তান্ডব চালিয়ে বকুল কোচের ৩০ শাতাংশ, শুকুমার কোচের ৩৫ শতাংশ, বাধন কোচের ৬০ শতাংশ, খোকন কোচের ৫০ শতাংশ ও শ্রীকান্ত কোচের ৬০ শতাংশ জমির ধান খেয়ে পা দিয়ে মাড়িয়ে বিনষ্ট করেছে বন্য হাতির দল। তারা জানান, এই বন্য হাতির দলটি পাশেই চান্দুভুই বিএসএফ ক্যাম্প এলাকার গভীর জঙ্গলে অবস্থান করছে এরা যে কোন সময় ফসল ও ঘর বাড়িতে হামলা করতে পারে। এজন্য তারা আতঙ্কে আছেন।
এ ব্যাপারে বন বিভাগের মধুটিলা ফরেষ্ট রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা আবদুল করিম বলেন, নালিতাবাড়ী সীমান্তে প্রায় দুই যুগ ধরে বন্য হাতি তান্ডব চালিয়ে জান মালের ক্ষতি করে আসছে। আমরা সব সময় সতর্ক আছি। যাতে এলাকার মানুষের জানমালের তেমন ক্ষতি করতে না পারে। আর যাদের ক্ষতি করেছে তারা যদি সরকারী নিয়ম অনুসরন করে আবেদন করেন তাহলে তাদেরকে ক্ষতিপুরণ দেয়া হবে। ইতোপুর্বে পাহাড়ী এলাকায় বন্য হাতির দ্বদ্ব নিরসনে সচেতনতামুলক কর্মসূচি করা হয়েছে। এ ছাড়া বন্য হাতি তাড়ানোর জন্য সীমান্ত এলাকায় এলিফেন্ট রেসপন্স টিমের (ইআরটি) কার্যক্রম চলমান আছে।