করনা ভাইরাসের কারণে দেশে এখন লকডাউন চলছে। ভয় নিয়ে সড়কে আসি, দিন শেষে যা আয় হচ্ছে কোনো রকমে পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে আছি। এই রোজগারে এ বছর তরমুজ খাওয়া সম্ভব হবে না। এভাবেই কথা গুলো বললেন রিক্সা চালক হবিবর রহমান।
তিনি আরও বলেন, নি¤œ আয়ের মানুষের এ বছর তরমুজের স্বাদ নিতে খুবই হিমশিম খেতে হচ্ছে। রমজান মাস এলেই প্রতিটা রোজাদারের পরিবারে ইফতারে থাকে তরমুজসহ হরেক রকমের মৌসুমী ফলের সমাহার দেখা যেত। কিন্তু সেই তরমুজের দাম এবার আকাশ ছোয়া। তবে দাম বৃদ্ধির কারণে অনেক রোজাদারসহ নি¤œ আয়ের মানুষের কাছে তরমুজের স্বাদ থেকে যাচ্ছে অধরা।
জানা যায়, প্রচন্ড তাপদাহ চলতি কাঠ ফাটা গরমে লালমনিরহাট জেলা শহরসহ বিভিন্ন হাট বাজার গুলোতে মৌসুমী রসালো ফল তরমুজের ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে। কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে তরমুজ আর দামও আকাশ চুম্বী। রমজানকে পুঁজি করে সুবিধাবাদি কিছু ব্যবসায়ী তাদের ইচ্ছে মতো দাম হাকিয়ে তরমুজ বিক্রি করছেন।
গত বছর লালমনিরহাটের সর্বত্রই তরমুজের ছড়াছড়ি এবং পিচ হিসেবে বিক্রি হয়েছে। কিন্তু এবার চিত্রটা ভিন্ন! চলতি মৌসুমে বাজারে পর্যাপ্ত তরমুজের দেখা গেলেও এ বছর তরমুজ কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি তরমুজের দাম হাঁকানো হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা।
লালমনিরহাটের বিডিআর গেইট ও মিশনমোর বাজারসহ বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কেজি দরে তরমুজ বিক্রি করতে। অনেক ক্রেতা এসে বিক্রেতার সাথে দাম নিয়ে রীতিমতো বিবাদে জড়িয়ে পড়ছেন। আবার অনেক ক্রেতা যেহেতু কেজিতে বিক্রি হচ্ছে তাই কেটে ১ কেজি তরমুজ চাচ্ছেন দোকানির কাছে। এ নিয়েও চলছে বাক বিতন্ডতা।
বাজারে আসা রোজাদারসহ নানা শ্রেনী পেশার মানুষের প্রশ্ন তরমুজ কেজিতে বিক্রি হওয়ার কারণ কি? যে তরমুজ গত বছরও মানুষ পিচ হিসেবে কিনেছে, সেই তরমুজ এ বছর কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। তবে কেজিতে যদি ১৫/২০ টাকা হতো তাহলেও সাধ্যের মধ্যে থাকতো; অথচ ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে তরমুজ বিক্রি হতে দেখা গেছে।
ভোক্তাদের প্রশ্ন এই টাকা কি প্রকৃতপক্ষে ওই চাষী যে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে তরমুজ উৎপাদন করেছে তার পকেটে যাচ্ছে নাকি অন্য কারও পকেটে? কৃষকের তরমুজের ক্ষেত থেকে শুরু করে বাজারে বিক্রেতা পর্যন্ত যারা ভোক্তার পকেট খালি করে চলেছে তাদের খুজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তারা।
ফল বাজারের ইসলাম, শাহিন, রবিউলসহ কয়েকজন খুচরা ব্যবসায়ী জানান, বড় ব্যবসায়ীরা তরমুজ পাইকারী বাজার হতে শ' হিসেবে কিনে তা কেজিতে বিক্রি করছেন। আমরাও কেজিতে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি। বাজার মনিটরিং করলে কেজি কাহিনি উন্মোচন হবে বলে মনে করছেন তারা।
এদিকে জেলার দূর্গাপুরের চরাঞ্চল ও মোগলহাটের একাংশে তরমুজের ফলন হয়েছে ভালো। যা কিনা জেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্যান্য জেলাগুলোতেও যাচ্ছে। তাই জেলার খেটেখাওয়া ও নি¤œআয়ের মানুষের দাবী বাজার মনিটরিং করে তরমুজের দাম নির্ধারণ করে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মাঝে ফিরিয়ে আনুক।
বিষয়টি নিয়ে জেলা মার্কেটিং কর্মকর্তা আবদুর রহিমের সাথে কথা বললে তিনি জানান, সাধারণ ভোক্তার অধিকার কোনোভাবেই খর্ব হতে দেয়া যাবে।বাজার মনিটরিং করে প্রয়েজনীয় ব্যাবস্থা নেয়া হবে।