বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন উদ্যোক্তাদের কম সুদে ঋণ দিতে ৫০০ কোটি টাকার ‘স্টার্ট আপ ফান্ড’ নামে একটি পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করেছে। তবে কোনো বেসরকারি ব্যাংকের বিতরণ করা ঋণের মধ্যে ১০ শতাংশের বেশি খেলাপি হলে তারা ওই তহবিল থেকে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা পাবে না। তবে সরকারি খাতের বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশের বেশি হলেও ওই তহবিল থেকে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা পাবে। ওই বিষয়ে ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একটি সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বাংলাদেশ ব্যাংকের পুনঃঅর্থায়ন তহবিল থেকে সরকারি খাতের বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা পাবে। বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর মধ্যে কোনো ব্যাংকের তাদের বিতরণ করা মোট ঋণের মধ্যে ১০ শতাংশের বেশি খেলাপি ঋণ থাকলে তারা ওই তহবিল থেকে কোনো পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা পাবে না। একই সঙ্গে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোকে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত হারে মূলধন, নগদ জমা ও বিধিবদ্ধ আমানত সংরক্ষণ করতে হবে। তবে কোনো একক গ্রুপ বা প্রতিষ্ঠানকে দেয়া বড় অংকের ঋণ সীমার বিষয়টি পরিপালন করতে হবে। ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও মানি লন্ডারিং আইনের বিধি বিধানগুলো পরিচালন ও ব্যাংকিং ব্যবসার অভিজ্ঞতা কমপক্ষে এক বছর হতে হবে। ওসব শর্ত পরিপালন করলেই কেবল বেসরকারি ব্যাংকগুলো ওই তহবিল থেকে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা পাবে। তবে সরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে ওসব শর্ত পরিপালন করতে হবে না। সরকারি ব্যাংকগুলোর বিপরীতে সরকারের গ্যারান্টি রয়েছে। ফলে তাদের ঋণ দিলে কোনো ঝুঁকি নেই। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে ঝুঁকি আছে। ওই কারণে সরকারি ব্যাংকের ক্ষেত্রে কোনো শর্ত রাখা হয়নি।
সূত্র জানায়, গত ২৯ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন উদ্যোক্তাদের সহজ শর্তে ও কম সুদে ঋণ দিতে ৫০০ কোটি টাকার একটি স্টার্ট আপ ফান্ড গঠন করে। ওই তহবিল থেকে উদ্যোক্তাদের সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ সুদে ঋণ দেয়া হবে। ৫ বছর মেয়াদি ওই ঋণের গ্রেস পিরিয়ড হবে সর্বোচ্চ এক বছর। নতুন নতুন উদ্যোগ, তথ্যপ্রযুক্তি, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের পণ্য উৎপাদন খাতে ঋণ অগ্রাধিকার পাবে। ২১ থেকে ৪৫ বছরের উদ্যোক্তারা ঋণ পাবে। তবে কোনো ঋণ খেলাপি ঋণ পাবে না। সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা ঋণ দেয়া যাবে। তবে ঋণের অর্থ একসঙ্গে দেয়া হবে না। তিনটি কিস্তিতে দেয়া হবে। সেক্ষেত্রে কোনো সম্পত্তি জামানত দিতে হবে না। গ্রাহকের ব্যক্তিগত গ্যারান্টি, শিক্ষাগত, কারিগরি শিক্ষা সনদ জামানত হিসাবে গ্রহণ করা হবে। আর মোট তহবিলের ১০ শতাংশ নারীদের দিতে হবে।
সূত্র আরো জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংক ওই তহবিল থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ সুদে ঋণ দেবে। ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের কাছ থেকে আরো সাড়ে ৩ শতাংশসহ সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ আদায় করতে পারবে। তবে কোনো ব্যাংক ইচ্ছে করলে এর চেয়ে কম সুদে ঋণ দিতে পারবে। তার বাইরে অন্য কোনো সুদ বা চার্জ আরোপ করা যাবে না। কোনো ব্যাংক ওই তহবিল ব্যবহারে অনিয়ম করলে তাদের আরো ২ শতাংশ হারে জরিমানা করা হবে। তহবিলটি হবে ঘূর্ণায়মান। সুদসহ মূল ঋণ আদায় হলে এর পরিমাণ বাড়তে থাকবে।