আবার সক্রিয় ইয়াবার কারবারিরা । এলাকায় ফিরে নতুন করে কারবারে হাত দিয়েছেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হতে যাচ্ছে সরকারের অনেক চেষ্টা। শীর্ষ ইয়াবা কারবারিদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের মামলার মাধ্যমে সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার সিদ্ধান্ত ছিল সরকারের। কক্সবাজারের ১২৩ কারবারি আত্মসমর্পণের পর তদন্তের মাধ্যমে তাঁঁদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে আর্থিকভাবে অচল করে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হচ্ছে, ২৭ আত্মসমর্পণকারীসহ অন্তত ৪০ কারবারি জামিনে ছাড়া পেয়েছেন। দীর্ঘ সময় পরে মাত্র ১২ জনের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের মামলা হয়েছে, যাঁদের ব্যাংকে নেই কোনো টাকা! কারবারিরা সুযোগ পেয়ে তাঁদের অবৈধ টাকা বিভিন্ন কৌশলে সরিয়ে ফেলেছেন। আর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ৭৩ শীর্ষ কারবারির মধ্যে ৪০ জন আত্মসমর্পণই করেননি। সবার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ এবং সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়াও চলছে ঢিলেঢালাভাবে। আর্থিক তদন্তের বাইরে রয়েছেন অর্ধশতাধিক ইয়াবা গডফাদার। শীর্ষ ইয়াবা কারবারিরা দাপটের সঙ্গে এলাকায় ফিরেছেন। অনেকে জনপ্রতিনিধি হওয়ার জন্য বিপুল পরিমাণ টাকাও খরচ করছেন। মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান চালানো হয়েছিল ২০১৮ সালের শেষের দিকে। কার্যত সেটি ছিল ইয়াবাবিরোধী অভিযান। সে অভিযানে শ পাঁঁচেক লোক নিহত হন। তাঁঁদের বেশির ভাগই ইয়াবার কারবার সংশ্লিষ্ট; নিরীহ লোকজনও ছিল। অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে দুই দফায় আত্মসমর্পণ করেন ১২৩ জন ইয়াবা কারবারি। অভিযানের মূল উদ্দেশ্য ছিল ইয়াবা ব্যবসায়ীদের নির্মূল করা এবং দেশে ইয়াবার চালান বন্ধ করা। বাস্তবতা হচ্ছে, দেশে ইয়াবা ট্যাবলেটের চালান আসা এবং বেচাকেনা বন্ধ হয়নি। এখনো মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে ইয়াবা দেশে ঢুকছে এবং ছড়িয়ে পড়ছে সারা দেশে। চালান আমদানিকারকরা অর্থাৎ বিনিয়োগকারীরা আড়ালেই থাকছে। ইয়াবার এই বিস্তার নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থায় চলে যাওয়ার আগেই সর্বাত্মকভাবে তা প্রতিরোধের উদ্যোগ নিতে হবে। দেশে যে রুটে ইয়াবা ঢোকে সেই পথগুলো বন্ধ করতে পারলে দেশের অভ্যন্তরে ইয়াবার কারবার বন্ধ হবে। আমরা আশা করি, রুট বন্ধের বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। প্রয়োজনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীগুলোর সমন্বয়ে দেশব্যাপী বিশেষ অভিযান পরিচালনা করবে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ও কোস্ট গার্ডকে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রাখতে হবে। সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর সহযোগিতাও নেওয়া যেতে পারে।