ভারতে কোভিড রোগীদের অক্সিজেন সংকট সমাধান হয়ে গেলে যে সমস্যাটি দেখা যাবে তা হলো- আইসিইউতে থাকা রোগীদের মৃত্যু। কারণ, তাদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার মতো যথেষ্ট নার্স-চিকিৎসক পাওয়া যাবে না। তখন চিকিৎসক ও নার্সের ঘাটতি মেটানো বড় চ্যালেঞ্জ হবে বলে মনে করেন বিশ্বখ্যাত কার্ডিয়াক সার্জন ডা. দেবী শেঠি।
সম্প্রতি ভারতের সিম্বিয়োসিস ইন্টারন্যাশনাল (ডিমড বিশ্ববিদ্যালয়) আয়োজিত স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে এক ভার্চুয়াল সম্মেলনের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। সেখানে এমন আশঙ্কার কথা জানান তিনি।
ওই ভার্চুয়াল সম্মেলনে ডা. শেঠি বলেন সতর্ক করে বলেন, ‘মহামারির শুরু থেকে যেসব চিকিৎসক-নার্সরা কাজ করছেন, তাদের অনেকের বার্নআউট হচ্ছে। আবার অনেকে সংক্রমিতও হয়ে পড়ছেন। মে মাসে প্রচণ্ড গরম হতে পারে। তখন শারীরিকভাবে সক্ষম চিকিৎসক-নার্সের পক্ষে কোভিড আইসিইউতে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টার বেশি কাজ করা কঠিন হয়ে পড়বে। তখন একটা বড় সংকটে পড়বে দেশ।’
ডা. শেঠি এক পরিসংখ্যান দেখিয়ে বলেন, ভারতে প্রতিদিন পাঁচ থেকে ১০ লাখ মানুষ সংক্রমিত হচ্ছেন। পরিসংখ্যানগতভাবে বয়স নির্বিশেষে মোট কোভিড রোগীদের পাঁচ শতাংশের জন্য আইসিইউ বেডের প্রয়োজন। এর মানে হলো ভারতে প্রতি দিন প্রায় ৮০ হাজার আইসিইউ বেডের চাহিদা আছে। কিন্তু, ভারতে আইসিইউ বেড আছে ৭০ থেকে ৯০ হাজারের মতো। এর সবই এখন রোগী দিয়ে পূর্ণ। অথচ মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ এখনো শীর্ষে পৌঁছায়নি। এদিকে, এক জন কোভিড রোগীর কমপক্ষে ১০ দিন আইসিইউতে থাকতে হয়। ফলে, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে অন্তত পাঁচ লাখ অতিরিক্ত আইসিইউ বেড তৈরি করা প্রয়োজন।’
এই সংকট মোকাবেলায় দ্রুতই দুই লাখ নার্স নিয়োগ দেওয়া উচিত বলে মনে করেন এই কার্ডিয়াক সার্জন। বলেন, আইসিইউতে থাকা কোভিড রোগীরা মূলত নার্সদের ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল। তাই ভারতের নার্সিং স্কুল ও কলেজগুলোতে যে দুই লাখের বেশি নার্স তিন বছরের জিএনএম বা চার বছরের বিএসসি কোর্সের প্রশিক্ষণ শেষ করেছে, তাদের চূড়ান্ত পরীক্ষার জন্য অপেক্ষা না করে এক বছরের জন্য কোভিড আইসিইউতে কাজ করার সুযোগ দেওয়া উচিত। এরপর তারা তাদের ডিগ্রির সনদ পেতে পারেন।’
এমনকি, সংকট মোকাবেলায় কোভিড আইসিইউতে কাজ করা চিকিৎসকদের এনইইটি পরীক্ষায় অতিরিক্ত নম্বর দেওয়া উচিত বলেও মনে করেন ডা. শেঠি।