ময়মনসিংহের ভালুকায় এক রিকসা চালকের কাছ থেকে টাকা ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় প্রমানিত হওয়ায় হাইওয়ের তিন পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়েছে। শনিবার বিকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ভালুকা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মশিউর রহমান। যদিও বিধিনিষেধ থাকায় পুলিশ সদস্যদের পরিচয় প্রকাশ করতে অপারগতা প্রকাশ করেনে তিনি। তাৎক্ষনিক ভাবে আবু তাহের নামে এক পুলিশের নাম জানা গেছে।
জানাযায়, গত মঙ্গলবার রাতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভালুকা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় নিয়মিত টহল কার্যক্রমের অংশ হিসেবে টহল দিচ্ছিল ভালুকা হাইওয়ে পুলিশের একটি দল। রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে রিকসা চালক শামীম দুজন যাত্রীকে নামিয়ে দেয়ার পর মোড় ঘুরতেই পুলিশ সদস্যরা তাকে থামতে বলে। এ সময় আইন অমান্য করে মহাসড়কে রিকসা চালানোর অভিযোগে পুলিশ তার রিকসাটিকে থানায় নিয়ে যাবার ভয় দেখায়। রিকসা চালক তাকে ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ করলে তার কাছে এক হাজার টাকা দাবী করে পুলিশ। কোন উপায়ন্ত না দেখে চালক তার কাছে ৭শ টাকা আছে বলে জানায়। এ সময় শামীমের কাছে থাকা ৭শ টাকা নিয়ে রিকসাটিকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
সেই সময় বাসট্যান্ড দাঁড়িয়ে নিজের গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন ভালুকা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ। চেয়ারম্যানকে না চিনে কোথায় যাবেন জিজ্ঞেস করলো রিকসা চালক। চেয়ারম্যান জানিায় আমার গাড়ী আসবে, সেজন্য অপেক্ষা করছি। এ সময় রিকসা চালককে চেয়ারম্যান জিজ্ঞেস করলো আয় রোজগার কেমন। তখনই রিকসা চালক শামীম পুলিশ কর্তৃক চাঁদাবাজির ঘটনা উপজেলা চেয়ারম্যানকে জানায়। এর পরই আবুল কালাম আজাদ ঘটনাটি “রাতের রোজগার নিয়ে গেল পুলিশ, না খেয়ে রোজা রাখলেন রিকসা চালক” তার নিজের ফেসবুকে আইডিতে পোষ্ট দিলে তা মূহুর্তে ভাইরাল হয়। বিষয়টি নিয়ে একাধিক নিউজ অনলইন পোর্টাল ও সংবাদপত্রে সংবাদ প্রকাশিত হয়। বিষয়টি নজরে আসে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের।
ভালুকা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক (ওসি) মশিউর রহমান জানান, অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিক তদন্ত করে প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে। অভিযুক্ত তিন সদস্যকে এক অফিস আদেশে সাময়িক বরখাস্ত করে তাদেরকে হাইওয়ে পুলিশের মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দিয়ে হাইওয়ে পুলিশ লাইনন্সে সংযুক্ত করা হয়। এদের মধ্যে একজন পার্টি ইনচার্জ ও দুই কনস্টেবল রয়েছে।
রিকশা চালক শামীমের বাড়ী ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার গাড়াজান পন্ডিতপাড়া গ্রামে। জীবিকার টানে ময়মনসিংহের ভালুকা এমসির বাজার এলাকায় খুপরি ঘরে ভাড়া নিয়ে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। সংসারে স্ত্রী ও ৩ মেয়ে। সংসারে হাল ধরার মত একমাত্র শামীমই। রিকসা চালিয়ে সংসার চালায়। সারাদিন রিকসা চালিয়ে যা আয় হয় তা দিয়েই চাল, ডাল কিনে কোনমতে সংসার চলে।