বিশ্বব্যাপী অপরিকল্পিত উন্নয়ন ও বাস্ততন্ত্রের ওপর বিভিন্ন প্রকার ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে পরিবেশের যে ক্ষতি সাধন করা হয়েছে, তা পুনরুদ্ধার ছাড়া মানবজাতি সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে পারবে না। সেই প্রেক্ষাপটে গত ৫ জুন পালিত হলো বিশ্ব পরিবেশ দিবস। এ দিবসের এ বারের প্রতিপাদ্য ‘বাস্তুতন্ত্র পুনরুদ্ধার। অন্যদিকে অসহনীয় পর্যায়ে পৌচেছে শব্দ ও বায়ু দুষন। প্রকৃতি তার সব কিছু আমাদের উজাড় করে দিলেও আমরা প্রকৃতিকে ধ্বংশ করছি। বিশ্বের অন্য নগরগুলোর কথা বাদ দিয়ে যদি শুধু আমাদের বাংলাদেশের কথা বলি, তবে বলতে হবে বড় শহরগুলোতে বায়ু দুষনের মাত্রা জাতীয় আদর্শ বায়ু মান মাত্রা ছাড়িয়ে তিন থেকে পাঁচ গুন বৃদ্ধি পেয়েছে। সংগত: কারনে বাড়ছে রোগ-ব্যাধি। তাছাড়া বৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, অতি বৃষ্টি, ভূমিকম্প সহ ভূমি ও পাহাড় ধসে জন-জীবন হুমকির সম্মুখীন।
এদিকে গাছ কেটে উন্নয়নের বিকৃতি ভাবনা বাসা বেধেছে অনেকের মাঝে। প্রতিবছর ৮০ হাজার হেক্টর জমি অকৃষি খাতে চলে যাচ্ছে। অথচ নদী ভাঙ্গন, বন্যা উপদ্রুত ও হাওড় এলাকার মতো জায়গাগুলোর চাহিদার ওপর ভিত্তি করে পরিবেশ ও পরিসর এবং জীববৈচিত্র বান্ধব কাঠামো গড়ে তোলা সম্ভব। দেশের স্থপতিরা ইতিমধ্যে এ ধরনের স্থাপনা তৈরি করে বিশ্বজুড়ে সমাদৃত হয়েছেন। তাহলে ধান, নদী, খাল, হাওড় বাওড়ের বাংলাদেশে পরিবেশে বান্ধাব এমন প্রকল্প নেয়া হচ্ছে না কেন?
পরিবেশ বিপর্যয় রোধে বিশ্ব পরিবেশ দিবসের পাশাপাশি জাতীয় বৃক্ষরোপন কর্মসূচি-২০২১ পালন করা হলো বাংলাদেশে। মুজিব বর্ষে দেশকে সবুজে শোভিত করে তুলতে জাতীয় বৃক্ষ রোপন অভিযানের মূল প্রতিবাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, ‘মুজিব বর্ষের অঙ্গিকার করি, সোনার বাংলা সজুব করি।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে বৃক্ষ রোপন করে এ দিবসের উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরিবেশ রক্ষা, নিজের আর্থিক স্বচ্ছলতার ক্ষেত্রে সব দিক থেকে যেটা সবচেয়ে বেশি উপযোগী, সেটা হলো ব্যাপক ভাবে বৃক্ষ রোপন করা। আপনারা সবাই গাছ লাগান ও গাছের যত্ন নিন।
বাস্তবিক অর্থে সারা বিশ্বেই পরিবেশের বিপর্যয় ঘটছে। জলবায়ু, পরিবর্তনের হাত থেকে নিজেদের বাঁচাতে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরী, এজন্য ব্যাপক হারে বৃক্ষরোপন সহ শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। পরিবেশ ধ্বংশ করে উন্নয়ন প্রকল্প করা যাবে না। নইলে প্রকৃতি আমাদের প্রতি নির্মম প্রতিশোধ নেবে, এ কথা না বললেও খুব সহজে মানুষের। গাছ লাগিয়ে সবুজ বাংলাকে আরো সবুজ করে তুলি! নিরাপদ করি মানুষের বসতি।