মেহেরপুরের গাংনীর বাঁশবাড়িয়া গ্রামের ফিরোজা খাতুন (ছদ্দনাম) করোনা আক্রান্ত্র রুগী। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় চরম মুহুর্তে স্যালাইন দিতে হবে। তার মেয়েরা বিভিন্ন স্থানে সন্ধান করেও স্যালাইন দিয়ে দেওয়ার জন্য একজনও টেকনিশিয়ান কিংবা দক্ষ কর্মী পাইনি। মা ফিরোজা খাতুনের পাশে বসে কাঁদছে তারা। জীবন মৃত্যু’র সন্ধিক্ষনে স্যালাইন দেওয়ার জন্য কেউ যখন এগিয়ে আসেনি বিষয়টি জানতে পেরে গাংনীর গাড়াডোব সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা তরিফা নাজনীনা মনি তার ব্যবহৃত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এ সংক্রান্ত একটি লেখা পোষ্ট করেন। লেখাটি পড়ে জীবন মৃত্যু’র সন্ধিক্ষনে থাকা করোনা আক্রান্ত্র রুগী ফিরোজা খাতুনের বাড়িতে পৌছে যায় পরিবর্তন মেহেরপুরে নামের একটি সেচ্ছাসেবী সংগঠনের তিনজন কর্মী। পরে তাদের সহযোগিতায় স্যালাইন দেওয়া হয় করোনা আক্রান্ত্র রুগী ফিরোজা খাতুনকে।
করোনা আক্রান্ত্র রুগী ফিরোজা খাতুনের মেয়ে জানায়,স্যালাইন দেওয়ার ঘন্টাখানেক পর তার মা কিছুটা হলেও সুস্থতা অনুভব করে। তিনি প্রধান শিক্ষিকা তরিফা নাজনীনা মনি ও সেচ্ছাসেবী সংগঠন পরিবর্তন মেহেরপুর সহ তাদের কর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
গাংনীর গাড়াডোব সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা তরিফা নাজনীনা মনি বলেন,একটি ফোনকলের মাধ্যমে একজন মায়ের অসুস্থতার বিষয়টি জানতে পেরে সহযোগিতা কামনা করে ফেসবুকে একটি লেখা পোষ্ট করি। এরপর সেচ্ছাসেবী সংগঠন পরিবর্তন মেহেরপুর এর কর্মীরা সংকটময় মুহুর্তে রুগীর পাশে দাঁড়ান। সেচ্ছাসেবী সংগঠন পরিবর্তন মেহেরপুর মানবতার সেবায় কাজ করছে মন্তব্য করে সংগঠনের সাফল্য কামনা করেন তিনি।
গাংনীর গাড়াডোব সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা তরিফা নাজনীনা মনি’র সহকর্মীরা বলেন, তরিফা নাজনীনা মনি শিক্ষকতার পাশাপাশি মানব সেবা করে চলেছেন। তার মানব সেবায় অনেকেই অনুপ্রানিত হয়েছে। অত্র এলাকায় অসহায় ও দরিদ্র মানুষের কল্যানে কাজ করছে তরিফা নাজনীনা মনি।
জানা গেছে, সেচ্ছাসেবী সংগঠন পরিবর্তন মেহেরপুর এই গ্রুপটি পরিচালনা করেন গাংনীর সাহারবাটি ইউনিয়ন পরিষদের প্রয়াত জনপ্রিয় চেয়ারম্যান বজলুর রহমান ও জেলা আওয়ামীলীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক নুরজাহান বেগমের ছোট ছেলে সাইদুর রহমান। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ জেলার অসহায় মানুষের সেবা করার পাশাপাশি নানা অনিয়ন দূর্নীতি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব রয়েছেন।
সেচ্ছাসেবী সংগঠন পরিবর্তন মেহেরপুর’র কর্মী মো: আশিকুল ইসলাম সাগর বলেন,সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক থেকে অসুস্থার বিষয়ে জানতে পেয়ে এক বন্ধু মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ডকে নিয়ে করোনা আক্রান্ত ঐ রুগীর বাড়ি যায়। এরপর রুগীর অক্সিজেনের কি অবস্থা পরিমাপ করা হলে স্বাভাবিক পাওয়া যায়। পরে স্যালাইন দেয়া হয়। তিনি আরো বলেন,করোনা আক্রান্ত ঐ রুগীকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্যও কেউ এগিয়ে আসেনি।
তিনি আরো বলেন,যেখানে করোনা আক্রান্ত রুগীর অক্সিজেন সমস্যা জানতে পেলেই সেখানেই অক্সিজেন পৌছে দেয়া হয়। একটি সংস্থা মাত্র ৬টি অক্সিজেনের বোতল দিয়েছে সেগুলো দিয়ে কোন রকম চলছে। চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল হওয়ার কারনে অসহায় মানুষকে সেবা দিতে হিমশিম খেতে হয় তাদের। সরকার কিংবা কোন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান যদি অক্সিজেন সিলিন্ডার দিতো তাহলে অসহায় মানুষের জীবন রক্ষায় বড় ভুমিকা রাখতো।