গাজীপুরের কালীগঞ্জে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে শীতলক্ষা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে রাব্বি হাসান (২১) নামে এক যুবক নিখোঁজ হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরী দল বুধবার ১২টা হতে উদ্ধার অভিযান শুরু করে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কোন সন্ধ্যান দিতে পারেনি। ঘটনা মঙ্গলবার আনুমানিক রাত ৯টার দিকে উপজেলার তুমুলিয়া ইউনিয়নের সোম বঙ্গবন্ধু বাজার এলাকার শীতলক্ষা নদীতে ঘটে। নিখোঁজ রাব্বি হাসান তুমুলিয়া ইউনিয়নের টিউরী প্রামের খোকন মিয়ার ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও নিখোঁজের ফুফাতো বোন ফারহানা খালেক মিলি বলেন, মঙ্গলবার রাতে সোম বঙ্গবন্ধু বাজার এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে নোঙর করা নৌযানে (জাহাজ) বসে স্থানীয় কিছু কিশোর ও যুবক আড্ডা দিচ্ছিল। সে সময় কালীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শহীদুল ইসলামসহ পুলিশের একটি দল নৌযানে অভিযানে যায়। তখন পুলিশের ধাওয়া খেয়ে তারা ছুটোছুটি করে পালিয়ে যায়। তবে রাব্বি পানিতে ঝাঁপ দেয়। সে সময় পুলিশের সাথে থাকা শান্ত নামে এক সোর্স পানিতে নেমে রাব্বিকে পানিতে চুবাতে থাকে। পরে শান্ত পানি থেকে পাড়ে উঠে আসে কিন্তু রাব্বি নিখোঁজ হয়। রাব্বির সাথে থাকা অন্যদের মধ্যে ছিল টিউরী এলাকার মো. নজরুল ইসলামের ছেলে জিহাদ(১৭), আফজাল হোসেনের ছেলে তায়েব(১৮), আব্দুল হাই (আব্দুল) এর ছেলে রিয়াদ(১৬) এবং ভাদার্ত্তী এলাকার ফারুকের ছেলে রনি(১৮) ও একই এলাকার রাফি(১৮) সহ আরও ১৫-২০ জন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থাণীয়রা জানায়, সোম বঙ্গবন্ধু বাজার এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে সব সময় বেশ কিছু জাহাজ নোঙর করে রাখা থাকে। এসব জাহাজে বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম হয়। তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার রাতে পুলিশের সোর্স হিসেবে ভাদার্ত্তী এলাকার কাশেমের ছেলে ইকবাল(২৮) ও নজরুলের ছেলে সাইদুল ইসলাম শান্ত (২২), বালীগাঁও এলাকার নাদিম (৩০) এবং জামালপুর এলাকার রানা (৩২) অভিযানে অংশ নিয়েছিল ছিল।
পুলিশের সোর্স ভাদার্ত্তী এলাকার কাশেমের ছেলে ইকবাল বলেন, মঙ্গলবার রাত আনুমানিক ৯টার দিকে সোম বঙ্গবন্ধু বাজার এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে থাকা একটি জাহাজে বেশ কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ীসহ প্রায় ১৫-২০ জন যুবক অবস্থান করছিল। সে সময় কালীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শহীদুল ইসলাম এবং উপ-পরিদর্শক (এসআই) আ. ছামাদ এবং পুলিশের সহযোগী হিসেবে আমিসহ শান্ত, নাদিম ও রানা শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে যাই। পরে রানাকে মাদক কেনার জন্য জাহাজে পাঠানো হয়। এর কিছু সময় পর জাহাজে দুই পক্ষের মধ্য মারামারি লাগে। সে সময় আমারা জাহাজে ধাওয়া দিলে কয়েকজন পালিয়ে যায় এবং রাব্বিসহ কয়েকজন নদীতে লাফ দেয়। তখন রাব্বিকে ধরতে শান্ত এবং রানাও নদীতে লাফ ওদয়। পরে শান্ত ও রানাকে উদ্ধার করতে আমিও নদীতে নামি। আমরা নদী থেকে পাড়ে উঠে আসলেও রাব্বিকে আর ধরতে পারিনি। এরপর নদীর পাড়ে কয়েক ঘন্টা অপেক্ষা করে আমরা চলে আসি।
কালীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শহীদুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার রাত আনুমানিক ৯টার দিকে সোম বঙ্গবন্ধু বাজার এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে নোঙর করা একটি জাহাজে মাদক উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করা হয়। সে সময় রাব্বি নামে এক যুবক নদীতে ঝাঁপ দিয়ে পালিয়ে যায়। অভিযানে পুলিশের সোর্স হিসেবে নয় পুলিশের সহযোগী হিসেবে ইকবাল, শান্ত, নাদিম ও রানাও আমাদের সঙ্গে ছিল।
টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসের লিডার আব্দুল জলিল বলেন, টঙ্গী ও কালীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের দুটি ডুবুরী দলের ৬জন সদস্য বেলা ১২টার দিকে নদীতে নিখোঁজ যুবককে উদ্ধারে অভিযান শুরু করেছি। সংবাদ লেখা পর্যন্ত নিখোজ যুবকের কোন সন্ধ্যান পাওয়া যায়নি।