করোনার সংক্রমণ রোধে দেশব্যাপী টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। করোনার প্রথম ঢেউ দেশে শুরু হলে বয়স্ক ব্যক্তিরা ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা করোনার ছোবলে পৃথিবীকে গুডবাই জানাতে বাধ্য হন। তাই সে সময় করোনা টিকা দানের বয়স নির্ধারণ করা হয় সর্বনিম্ন ৫৫ বছর। এতে টিকা গ্রহণের জন্য নিবন্ধন কম হওয়ায় অধিক মানুষকে টিকার আওতায় আনতে বয়স কমাবার আবার সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সে সময় ৫৫ থেকে বয়স কমিয়ে ৪৪ করা হয়। এরপর দ্বিতীয় দফায় কমিয়ে ৪০ বছর করা হয়। গত ১৯ জুলাই করোনা ভাইরাসের টিকা নেওয়ার বয়স ৩০ বছর নির্ধারণ করেছে সরকার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর আগে গত ২৫ জুলাই করোনার টিকা বয়স ৩৫ করা হয়। এবার সরকার এ বয়স সীমা কমিয়ে ১৮ বছর করার চিন্তাভাবনা করছে বলে জানা গেছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে।
সারাবিশ্বে করোনা সংক্রমনের ফলে সবাই আতঙ্কিত। প্রতিদিন আক্রান্তদের মৃত্যু আর সংক্রমিত রোগীদের পরিচর্চায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নাকাল। পুরো হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা ভেঙে পড়েছে। সাথে রয়েছে অক্সিজেন সংকট, আছে আইসিও সংকট। ফলে করোনা রোগীদের স্বজনরা চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতের জন্য উৎকণ্ঠায় রয়েছেন। প্রতিটি দেশের সরকারই তাদের জনগণকে রক্ষার জন্য লকডাউন শাটডাউন বা কারফিউ জারি করেছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে মানুষকে ঘরে বন্দি করে রাখা যাচ্ছে না। তারা নানা ছুতোয় ঘর থেকে বেরিয়ে আসছে। উন্নত বিশ্বের মানুষ ঘরবন্দি থেকে টিকা গ্রহণ করে করোনা মোকাবেলা করছে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের মাঝে টিকা নিয়ে অহেতুক ভয় এবং অবহেলা করে টিকা নেয়া থেকে দূরে ছিল। এমনকি সংক্রমিত হয়ে চিকিৎসাসেবার প্রয়োজনও অনেকে বোধ করেন না।অবস্থা বেগতিক হবার পর হাসপাতালে গিয়ে মৃত্যুবরণ করছেন।
বাংলাদেশের শহর বন্দরনগরে ব্যাপকহারে করোনা সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। তাই এর প্রতিষেধক টিকা নেয়া এখন সবার খুবই জরুরি বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তাই সরকার দেশের পুরো জনগোষ্ঠীকে টিকার আওতায় নিয়ে আনতে চায়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ইতোমধ্যে টিকা দেশে আনা হয়েছে। গ্রামের মানুষের টিকা গ্রহণের সুবিধার জন্য স্পট নিবন্ধন এর ব্যবস্থা করেছে। জনগণের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে টিকা গ্রহণের ব্যাপারে উৎসাহ দিচ্ছে সরকার। করোনায় আক্রান্ত এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তিদের ৯৫% টিকা নেইনি। টিকা গ্রহণ করার পর করোনায় আক্রান্ত হলে মৃত্যু ঝুঁকি কম। এ পর্যন্ত কেউ মরেনি। তাই করোনা টিকা দানের বয়স সীমা ১৮ বছর করা সঠিক সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। আমরা এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। শিশু-কিশোরদের সংক্রমণ শুরু হবার আগে তাদেরও টিকা দানের আওতায় আনা যায় কিনা তা নিয়েও এখন ভাবতে হবে। আর টিকা গ্রহণের ব্যাপারে জনগণকে উদ্যোগী হতে হবে। সরকার টিকা দেয়া শুরু করেছে জনগণকে তা গ্রহণ করে শেষ করতে হবে। সুরক্ষিত থাকতে হবে করোনা সংক্রমণ থেকে। জীবন বাঁচাতে টিকা, জীবন সাজাতে টিকাই হোক সবার প্রত্যয়।